ধ্রুবতারা পর্ব_২৩ পুষ্পিতা_প্রিমা

ধ্রুবতারা
পর্ব_২৩
পুষ্পিতা_প্রিমা

আঘাতে জর্জরিত, মর্মাহত দুই বাড়ির প্রত্যেকটা মানুষ। তেইশ বছর আগের সেই আর্তনাদ, ভয়ংকর দৃশ্যগুলো আবার ভেসে উঠছে চোখের সামনে। খুব প্রিয় দুইজন মানুষকে হারানোর ব্যাথা, ক্ষতগুলো যেন পুনরায় জেগে উঠছে। কি ভীষণ যন্ত্রণা!
সেদিনের পর পার হলো প্রায় সপ্তাহ। প্রিয়জন ছেড়ে চলে গেলে যেন মনে হয় আমরা বাঁচব না। মুহূর্তগুলো থেমে যাচ্ছে। সময় গুলো থমকে গেছে। সুখ, আনন্দ, হাসি সব হারিয়ে গেছে, আসলে আমরা মানিয়ে নিই। মানিয়ে নিতে হয় পরিস্থিতিতে। নির্মম বাস্তবতাকে ঘিরেই আমাদের বসবাস। আমাদের সামনে এগিয়ে চলা। কারো জন্য কারো জীবন থেমে থাকেনা। থাকেনা কারো পথচলা। থাকেনা কারো জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য। তবে যারা জড়িয়ে থাকে আষ্টেপৃষ্টে তাদের সাথে কাটানো প্রত্যেকটা স্মৃতি ক্ষণে ক্ষণে মনে করিয়ে দেয় মানুষটা ঠিক কতটা জড়িয়ে ছিল। কতটা জুড়ে ছিল।
একজন বোনের কাছ থেকে তার ভাই চলে যাওয়া মানেই তার একটা আবদার, আদর নামক পৃথিবীটা হারিয়ে যাওয়া। মা বাবার জায়গায় বসানো সেই মা বাবাগুলোর কাছ থেকে সন্তান চলে যাওয়া মানেই সুখের একটা পৃথিবীতে যেন ধস নামলো। আর যার কাছে প্রিয়জন!

যাকে নিয়ে আকাশ পাতাল কল্পনা জল্পনার পানসী ভাসাতো, যাকে নিয়ে বানানো একটা স্বপ্নের বাসায় এখনো পদার্পণ করা হয়নি? যার হৃদয় অন্তরে আত্মায় লুকিয়ে থাকা শব্দমালা প্রকাশিত হয়নি? তার হারিয়ে যাওয়া, চলে যাওয়া মেনে নেওয়া যে খুবই সোজা তা বুঝা যায় শুকনো চক্ষুকর্ণ দেখে। এতটা সহজে প্রিয় মানুষকে হারানোর ব্যাথা মুছে যায় কি করে? এটা ও কি সম্ভব?
ভেতরে ভেতরে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া ক’জন দেখে?

ঈশানের মা এসে নিয়ে গেল তাননাকে। পুরো বাড়ির কেউ সামলাতে পারেনা তাননাকে। যতক্ষণ ঘুম থাকে ততক্ষণ ঠিক, তারপরেই শুরু হয় পাগলামি। ঈশান একা সামলে উঠতে পারেনা। নোহা অনেক আগেই চলে এসেছিল। পুরো বাড়িটাকে সে একা হাতে আনহার সাথে সামলাচ্ছে। নিদারুণ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সোরা হসপিটালে ছিল বেশ ক’দিন। রাহা তো তাননার সামনেই যেতে পারেনা। তাননা গগন কাঁপিয়ে কেঁদে উঠে বলে ‘ তোর জন্য আমার ভাইয়ের এই দশা। তুই মেরে ফেলেছিস আমার ভাইকে। খুশি হয়েছিস ও মরে গেছে। হয়েছিস?

রাহা বুঝে উঠতে পারলো না, যাকে ভালো রাখার কারণ হয়ে উঠতে পারেনি তার মরার কারণ হয়ে গেল রাহা। হয়ত এটাই সবচাইতে বড় পাওয়া। যাক অন্তত কোনো একটা জায়গা জুড়ে অন্তত সে ছিল।
তবে আর যাইহোক যে তাকে ভালোবাসেনি, তার মৃত্যু হোক সেটা চাওয়ার মতো মানসিকতা কখনোই ছিল না রাহার। যে একটা অংশ জুড়ে ছিল তার মৃত্যু কি করে চাইতে পারে রাহা? অংশ তো!
চোখের সামনে অন্য কাউকে নিয়ে সংসার করা দেখতে পারতো সে,, কিন্তু এমন পরিণতি কখনোই চাইনি। সে চেয়েছে মানুষটা ভালো না থাকুক তাকে ছাড়া। তার অনুপস্থিতিতে মানুষটা একটুখানি পুড়ুক,জ্বলুক। তাকে বুঝুক। সে আর হলো কই?
কিছু মানুষ কি আসলেই এভাবে সব কেড়ে নিয়ে ছেড়ে দিতে আসে?

সালেহা বেগমের মুখের ভাষা বন্ধ ছিল দুদিন। আওয়াজ না আসায় ভেঙে পড়া নাহিল আর জায়িদ আরও ভেঙে পড়েছিল। তবে তিনদিনের মাথায় আবার কান্নার আওয়াজ ভেসে আসে সালেহার। তার আর্তনাদে ভরপুর হয় পুরো বাড়ি। ছেলে,ছেলের বউ আর নাতির ছবি জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে সে আওড়ায়।
‘ আমার সুখের ঘর,সুখের বাড়ি ভেঙে তোরা কোথায় গেলি?

জাহেদার অবস্থা তার চাইতে ও খারাপ। তার তো কোনো ভাবান্তর নেই। হাঁটাচলা নেই। চোখের পলক পড়ে না। তব্দা মেরে শুয়ে থাকে সারাক্ষণ। আনহা আর জায়িদ দেখে চোখের কোণা বেয়ে খসে পড়ে জল। জায়িদ তা দেখে ডাক দেয়
‘ আম্মা এমন করো না। জুননু চলে গেল, সাহিল চলে গেল, আব্বা চলে গেল, মুননা চলে গেল। তুমি যেওনা আম্মা। আমাকে একা করে যেওনা তোমরা । তুমি চলে গেলে তো আমি একেবারেই শেষ হয়ে যাব আম্মা। এভাবে নিঃস্ব করো না আমায়।
জাহেদা মিনমিন স্বরে আওড়ায়
‘ তোর বোন, তোর বোন। সে অপরাধী। নিজে গেল, ছেলেটাকে ও নিয়ে গেল। আমি কেন গেলাম না? আমার ভাইটা বেঁচে থাকতো অন্তত । আমার ভাইটা ভালো থাকতো। সুখে থাকতো। আমি এবার পায়েস রেঁধে খাওয়াবো কাকে? আমি আমার ছোট্ট ভাইকে কোথায় পাব? আমার মুননুকে কই গেলে পাব? আমি ভাই ডাকবো কাকে? কাকে ডাকবো?
আনহা স্তব্ধ হয়ে চেয়ে রয় আর ভাবে,
‘ কি দোষ তাদের? এই মানুষ গুলো কেন এত কষ্ট দেয় তাদের। ভাই কি করল এটা? নিজে গেল, প্রিয়তমাকে নিয়ে গেল, সাথে এখন ছেলেকে। তাদের কেউ একজনকে নিয়ে গেলে তো হতো। একজন বোনের কাছ থেকে ভাইকে এভাবে নিয়ে গেল কেন? সবার চোখের মণিগুলোর দিকে কেন নজর পড়লো। দিনশেষে তাননা মুননা এই দুজনই তো বাড়ি দুটোর মূল প্রাণ। বাড়ি দুটো যে খাঁ খাঁ করে তাননা মুননা ছাড়া। মুননা ছাড়া তাননা অসম্পূর্ণ। ভাই ছাড়া বোন দিশেহারা। পাগলপারা। বোনটার জন্য ও তো বেঁচে থাকতে পারত মুননা। পারত না?

__________

ছোট্ট পার্কটির এককোণায় বাচ্চাদের সাথে খেলা করছে জিশান। তাননা আনমনা হয়ে বসে রয়েছে একটি বেঞ্চে। ঈশান হাতে দুটো চকোলেট বার নিয়ে আসলো। তাননার পাশে বসে মিনমিনে স্বরে ডাকল
‘ জিন্নাত?
তাননার ভাবান্তর নেই। তার চোখের সামনে বসে খেলা করছে জিশান আর একটি ছোট্ট বাচ্চা মেয়ে। ছোটবেলায় সে আর মুননা এভাবে খেলা করত। কিছু বেশকম হলে মুননা তার ঝুঁটি টেনে ধরতো। তাননা মারলে কিংবা তার খেলনার জিনিস কেড়ে নিলে মাটিতে শুয়ে গড়াগড়ি খেত। তাননার হাত থেকে চকলেট কেড়ে নিয়ে খেয়ে নিত। বুকের সাথে লেপ্টে থাকা ছবিটা তুলে টলটলে চোখে তাকালো তাননা। ছোট্ট বাচ্চা দুইটা বাচ্চার ছবির দিকে তাকিয়ে হু হু করে কেঁদে দিয়ে ডাকল
‘ এই ভাই কোথায় তুই? আমার জন্য থেকে যেতে পারলি না? তোকে ছাড়া আমি কি করে শ্বাস নিচ্ছি, কি করে বেঁচে আছি মুননু? আমাকে এভাবে একা করে কেন চলে গেলি? আম্মা আব্বা তোকে পেয়ে খুব খুশি হয়েছে নাহ ? তাহলে আমাকে কেন রেখে গেলি?

ঈশান চকোলেট দুটো জিশান আর বাচ্চা মেয়েটিকে দেয়। জিশান খুশি হয়। বাচ্চা মেয়েটিকে খুশি হয়ে বলে
‘ মিনি মিনি থেংকু আঙ্কেল।
ঈশান মেয়েটির চুল নাড়িয়ে এলোমেলো করে দেয়। জিশান বলল
‘ মিনি মিনি লাভ ইউ পাপা।
ঈশান বলল
‘ লাভ ইউ টু মাই প্রিন্স।

তাননা ছবি বুকে জড়িয়ে ডুকরে ডুকরে কাঁদছে। ঈশান জিশান আর বাচ্চা মেয়েটিকে অন্যদিকে নিয়ে বসিয়ে আসে। বলে, এখানে খেলো। তারপর তাননার কাছে ছুটে আসে। ছবিটা কেড়ে নিয়ে কাছে টেনে নেয়। বুকের সাথে শক্ত করে ধরে রেখে চুলে বিলি কেটে বলে
‘ আমার আর জিশানের জন্য থাকবেন জিন্নাত। রোয়েন কি বলে গেল আপনাকে? বলেছিল, জুননুর মতো না হতে। তাহলে আপনি কেন আমাদের ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ভাবেন। আমরা আপনার বেঁচে থাকার কারণ হতে পারিনা?
তাননা আবার ডুকরে উঠলো। ঈশান কপালে দীর্ঘ চুম্বন বসিয়ে বলল
‘ কাঁদবেন না প্লিজ।
তাননা আর ও জোরে কাঁদলো। ঈশানের গলা জড়িয়ে ধরে গা কাঁপিয়ে কেঁদে উঠে বললো
‘ আমাকে মুননুকে এনে দিন। আমার ভাইকে এনে দিন। ও বোধহয় আমার উপর রেগে আছে। আমি ওকে ওইদিন মেরেছি তাই ও বোধহয় রেগে আছে।
ঈশান কিছু বলতে পারলো না। তবে এটুকু মনে আসলো
‘ এমন পাগলাটে বোনের জন্য থেকে যেতে হয় রোয়েন। ভাইকে এতটা পাষাণ হওয়া মানায় না।

______

রাহার ঘর থেকে কিছুটা দূরে এসে দাঁড়িয়ে থাকলো নোহা। সবাইকে রোজ রোজ জোর করে করে খাওয়াতে হয়। কখন সবটা স্বাভাবিক হবে? রাহা খায়নি কিছু। নোহা ডাকতে এসে দাঁড়িয়ে পড়লো রাহার ঘরের সামনে। সে জানেনা রাহার ভবিষ্যৎ কি? কার কাছে? তবে নোহা এটুকু জানে রাহার ভালো থাকা কেড়ে নিয়ে চলে গেছে একটা মানুষ। ভালো থাকতে পারেনা রাহা৷ রাহাকে দেখে অবশ্য বুঝার জোঁ নেই। রাহার ঘরে পা বাড়াতে সাহস হলোনা নোহার। আজকাল রাহাকে ভয়ংকর লাগে৷ চুপচাপ কেমন! ছিন্নভিন্ন।
নোহা পিছু হটতেই সোয়েভ এসে উপস্থিত। নোহা টলমলে চোখ মুছে নিল তাড়াতাড়ি। বলল
‘ খেয়েছেন?
সোয়েভ রাহার ঘরের দিকে তাকিয়ে জবাব দিল
‘ আপনি খান নি।
নোহা বলল
‘ খেয়ে নিন। আমার খেতে ইচ্ছে করছে না।
সোয়েভ নোহার চোখের উপর দৃষ্টি রাখলো। নোহা এদিকওদিক তাকাতে তাকাতে চোখ মুছলো। বলল
‘ আপনারা ছেলেরা খুব পাষাণ। একটা মেয়েকে শেষ করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। ভালো নাহ। একটু ও ভালো নাহ।
সোয়েভ হাত বাড়িয়ে টেনে নিল নোহাকে। বুকের সাথে পিষ্ট করে বলল
‘ কাঁদবেন না। দেখুন আমি বুঝতে পারছি সবটা। কিন্তু সবাই এভাবে ভেঙে পড়লে তো চলবেনা৷
নোহা কেঁদে ভাসিয়ে দিয়ে বলল
‘ আমাকে একটু শক্ত করে ধরুন প্লিজ। ছেড়ে যাবেন না। আমি রাহাপুর মতো শক্ত নই। আমি পারব না।
সারাদিনের ক্লান্তি টুকু সামান্য কথাটাতে যেন মুছে গেল। শান্তি পেল সোয়েভ। কিন্তু অশান্তি তো যাওয়ার নয়। ছোটবেলার বন্ধুর এই দশা সে মানতে পারছেনা। এটা কখনো হওয়ার ছিল না। এটা ভালো হয়নি।

রুমের দরজা খুলতেই নোহা আর সোয়েভকে দেখে আবার দরজা বন্ধ করে দিল রাহা। মুখ চেপে ধরে বসে পড়লো আবার মেঝেতে। এলোমেলো সুরে ভাসা কান্না থামানোর অব্যর্থ প্রয়াস চলছে । তবু ও যেন থামছেনা। কেন তার কপালে এমন ভালোবাসা জুটেনি? সে অতটা ও অযোগ্য ছিল না। একটু ভালোবাসা পায় রাহা। পেত। তা দেওয়ার ভয়ে পালিয়ে যাওয়া বীরপুরুষ কেন কাপুরুষের মতো কাজ করলো? কাল ও তো এসেছিল সন্ধ্যায়। কুয়াশার চাদরে মিশে এসেছিল ছাদের কর্ণিশে। গায়ের সাদা লেদার জ্যাকেটটি গায়ে ছিল। মুখে লেগে ছিল একরত্তি হাসি। হেসে হেসে রসিকতা করে বলল
‘ আরেহ রাহা যে, কেঁদে কেঁদে কি হাল করেছ নিজের? আরেহ নিজের ভবিষ্যৎ বরের কথা একটু ভাবো। তার জন্য একটু চোখের জল রাখো। সব আমাকে দিয়ে ফেললে কি করে হয় রাহা?
রাহা এলোমেলো কেঁদে শুধু বলেছিল
‘ আপনি এসেছেন?
হাসলো রোয়েন। আচমকা করে বসলো এক অনাকাঙ্ক্ষিত কাজ। হেলেদুলে এগিয়ে আসলো রাহার দিকে। কাছে টেনে একেবারে রাহাকে মিশিয়ে নিয়ে নিল নিজের সাথে। সেসময় ঘাড়ে মুখ গুঁজে নিয়েছিল একটানা প্রলম্বিত শ্বাস। বাকহীন, সেই মাতাল অবস্থায় যেন কাটিয়ে দিল কয়েকটা মুহূর্ত। ইশশ রাহার ও বড্ড ভুল হয়ে গেল। নাম দেওয়া উচিত ছিল মুহূর্তগুলোর। যে মানুষটা হাত ছুঁলেই অনুভূতিদের দফারফা অবস্থা হতো। চোখের দিকে একদৃষ্টে তাকালেই চোখ ঝলসে উঠতো। সে মানুষের সাথে এতটা ঘনিষ্টতা। আসলেই কল্পনা আর অবাস্তবে সবই সম্ভব।

_________

পিঠে থাকা ব্যাগ থেকে ধারালো চাকুর মতো কিছু একটা বের করে নিল মার্কো। এক অদ্ভুত শব্দ ভেসে আসছে জঙ্গলের দিক থেকে। মার্কো সাবধান করলো সবাইকে।

‘ হেই এভরিওয়ন বি এওয়ার।

সবাই সাবধানতার সাথে পা বাড়ালো। সিআই ডিপার্টমেন্টের কর্মী মিঃ ডিওরো এন্ড মিস এলিজা সবাইকে বললেন যাতে সাবধানে পা বাড়ায়।

আধুনিক প্রযুক্তির এই যুগে যেখানে সাগরের তলদেশ থেকে মহাকাশ পর্যন্ত সবখানেই বিজ্ঞানের জয়জয়কার। সবকিছুই মানুষের নখদর্পণে। সেখানে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে থাকা সেন্টিনেল দ্বীপটি এখনো বলতে গেলে অনাবিষ্কৃতই রয়ে গেছে। ভয়াবহ এই দ্বীপটির ব্যাপারে যতটুকু শুনেছে তা হলো এটি একটি নিষিদ্ধ দ্বীপ।
মিস এলিজা বললেন
‘ সেন্টিনেলরা যদি খোঁজ পায় আমাদের তাহলে যে-কোনো সময় আক্রমণ করবে। ওদের এখানে সাধারণ মানুষের আগমন না ঘটার জন্য ওরা মৎস্যজীবিকে ধরে এনে মেরে বাঁশ দিয়ে সমুদ্রের কাছে ঝুলিয়ে রাখে। যাতে পরিণতির কথা ভেবে কেউ তাদের রাজ্যে পা না বাড়ায়। ওরা ওদের রাজ্যে কারো হস্তক্ষেপ পছন্দ করে না।

মিঃ মার্কো এলিজার কথায় সম্মত হলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে দৌড়ে দৌড়ে এল ভিয়েতনামের পাইলট জি এন কুবরা। কুবরা হাঁপিয়ে উঠে বললেন

‘ ডক্টর মার্কো ওরা আবার অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

মার্কো দৌড়ে গেল কুবরার দিকে। বলল

‘ ওদের জ্ঞান ফিরেছে ?

কুবরা বলল

‘ আসুন স্যার। দেখে যান। ওদের বোধহয় বাঁচানো সম্ভব হবে না।

মার্কো বলল

‘ চেষ্টা করা যায় কুবরা।

কুবরা বললেন

‘ ইয়েস স্যার।

মার্কো দৌড়ে গিয়ে বিমানে উঠলো। নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে কপাল মাথায় ব্যান্ডেজে মুড়িয়ে থাকা ছেলেটিকে ঝাঁকিয়ে বলল

‘ হেই ইয়াং বয়। ওপেন ইয়োর আইস। বি স্ট্রং। ডোন্ট ওয়ারি। উই আর অলওয়েজ উইথ ইউ।

ছেলেটি চোখ খুলতে পারলো না। তবে বিড়বিড় করলো

‘ আই’ল রিটার্ন টু বাংলাদেশ প্লিজ।

মার্কো বলল

‘ বাংলাদেশ ফিরে যাওয়া সম্ভব নয় ইয়াং ম্যান। তুমি আগে রিকোভার করো। ডোন্ট ওয়ারি আমরা আছি।

ছেলেটা আবার ঢলে পড়লো। বমি হওয়ায় শরীর দুর্বল। ছেলেটির মতো প্রায় পঞ্চাশ জনের অধিক মানুষের এই অবস্থা। গত সাতদিনে প্রায় সত্তরজন মারা গিয়েছে। তাদের মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে কোনোমতে। সবাই বাংলাদেশি। মার্কো মনেপ্রাণে চায় এই ইয়াং ম্যান যাতে সুস্থ হয়ে উঠে। এই কয়েকদিনে মায়া জন্মে গেছে।
ছেলেটি চোখ বন্ধ অবস্থায় আবার ও বিড়বিড় করলো

‘ আই’ল রিটার্ন টু বাংলাদেশ। মাই হোম। মাই সিস্টার।

চলবে
গল্পটা শেষ হতে চাচ্ছে না। এখানে আমার দোষ নেই 😔।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here