অবশেষে ভালোবাসি (সিজন ২)part:34

অবশেষে ভালোবাসি (সিজন ২)part:34
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤

.
.
🍁
.
অদিতির এনগেজমেন্টের কথা শুনেই ফোনটা ছুঁড়ে মেরেছে আয়ান।পাগলের চিৎকার করতে করতে পুরো রুমটাকেই লন্ডভন্ড করেছে সে।আয়ানের বাবা…ছেলের এমন বিহেভিয়ারে হতবাক!!ছেলেকে কখনো এভাবে দেখে নি সে…আয়ানের জীবনে যখন থেকে ঘৃণাটা বেড়েছে তখন থেকেই রাগটা খুবই অদ্ভুতভাবে কমে গিয়েছিলো ।।খুব সহজে রেগে যায় না সে…হঠাৎ রাগ গেলেও তা নিজের মাঝেই দমন করার স্বভাব তার….তাহলে আজ?? মিষ্টার চৌধুরী দরজায় দাড়িয়েই বলে উঠলেন-
.
হোয়াটস হ্যাপেন আয়ান?এমন করছিস কেন??
.
বাবা আই লস্ট ইট…আই লস্ট মাই এব্রিথিং…কেন তুমি আগে এভাবে বুঝাও নি বাবা…হুয়াই??আই এম লেইট বাবা…আই এম লেইট।। প্লিজ যাও এখান থেকে…লিভ মি এলোন…বাবা লিভ মি এলোন!!
.
বাট আয়ান!! কি হয়েছে তা তো..
.
আই সে গো বাবা!!(চিৎকার করে)
.
মিষ্টার চৌধুরী আর দাঁড়ালেন না। রাগী অবস্থায় ছেলের সাথে কথা বলার চেষ্টা করে ওর রাগটা আরো বাড়িয়ে দিতে চান না তিনি।।মিষ্টার চৌধুরী বেরিয়ে যেতেই,,, চুল খামচে ধরে বসে বিছানায় বসে পড়লো আয়ান।। আজ যে নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে তার…লাগেজ থেকে অদিতির জন্য কেনা গিফ্ট,,ড্রেস,,রিয়ার দেওয়া ডায়েরিতে থাকা অদিতির ছবি সব জ্বালিয়ে ছাই করে দিয়েছে সে।।এই অদিতি নামের ব্যক্তিটিকে ভুলে যাবে সে…একদম ভুলে যাবে।কোনো এক দুপুরে কারো হাসির শব্দে মাতাল হয়েছিলো আয়ান…সেই স্মৃতিটুকুকেও জ্বালিয়ে দিবে সে।কোনো এক জ্যোস্না রাতে কারো চোখের মায়ায় আটকে গিয়েছিলো সে…সে কথাটাও ভুলে যাবে।।
কোনো এক গভীর রাতে হঠাৎ সরে যাওয়া শাড়ির আঁচল গেলে বেরিয়ে আসা কুচকুচে কালো তিলটা!!যে তিলটা দেখে পাগল হয়েছিলো আয়ান…সেই তিলটাকেও মুছে ফেলবে সে, তার চোখ থেকে।। ঝগড়ার ছলে দুষ্টু হেসে হাতটা ছুঁয়ে দেওয়া ওই অপরাহ্নগুলোও বন্ধী হবে না পাওয়া আবেগে।।কিন্তু প্রকৃতি কি মানুষের জীবনকে এতোটা সহজ করে দিয়েছে??ভুলে যাওয়া কি এতো সহজ??নাহ কখনোই না…মানুষ নামক জীবগুলো হয়তো কখনো ভুলতে শিখে না….তাই তো ওরা অপমান,কষ্ট,কান্না, সুখ নামক আবেগগুলো ভুলে যায় না…এই আবেগগুলোই তাদের বাঁচিয়ে রাখে,,জ্বালিয়ে মারে,,করে তুলে হিংস্র!!আয়ানকেও জ্বলতে হবে…পুড়তে হবে…জ্বলে পুড়ে নিঃস্ব হয়ে সন্ধ্যায় ঘরে ফেরা চিলদের ক্লান্তিগুলোর মতো হারিয়ে যেতে হবে…গভীর অতলে।।এটাই তো প্রকৃতির নিয়ম!!
.
🍁
.
অদিতি আপু?তোমার বিয়েতে আয়ান ভাইয়াকে দাওয়াত দিবে না?
.
রিয়ার মুখে আয়ানের নামটা শুনেই চমকে ওঠে অদিতি।।মনে মনে বারবারই আওড়াতে থাকে তার নাম আয়ান!!আয়ান!! অদিতিকে চুপ থাকতে দেখে আবারও বলে উঠে রিয়া-
.
তোমার একসময়ের সাথি ছিলো সে।।হয়তো ঝগড়ার নয়তো কাজের…উনাকে দাওয়াত না দেওয়াটা অপমানজনক হয়ে যাবে না??(অদিতির দুই কাঁধে হাত রেখে)
.
উনি আমার মতো মেয়ের বিয়েতে কেন আসবে রিয়া??আমরা কি উনার ক্লাসের বলো?(তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে)
.
সেটা না হয়… উনাকেই ভাবতে দাও।।তোমার কর্তব্য তো তোমার পালন করা উচিত আপু!!
.
রিয়ার কথায় দীর্ঘশ্বাস ফেললো অদিতি।রিয়া ঝটপট ফোন বের করে আয়ানের নাম্বারটা ডায়াল করেই ফোনটা অদিতির হাতে ধরিয়ে দিলো..” নাও আপাতত সাময়িক দাওয়াতটা সেড়ে নাও!!”
.
আরে আরে এখনি কেনো?বিয়ের তো আরো দু’মাস বাকি!!!(ব্যস্ত হয়ে)
.
তাতে কি??উনার তো প্রিপারেশনের একটা ব্যাপার আছে নাকি??কতো বড় সাইকিয়াট্রিস্ট উনি!! মাস ব্যাপী এপয়েন্টমেন্ট থাকে উনার।।এখনই বলে রাখো না.. প্লিজ প্লিজ
.
রিয়ার জেদের কাছে হার মেনে ফোনটা কানে নিলো অদিতি।।বুকটা ধুরধুর করছে তার…উফফ..এই হৃদপিণ্ডটা কি বেরিয়েই আসবে এবার??এতো ধৈর্য…এতো অপেক্ষা কাটিয়ে কাঁপা সেই ধুরুধুরু বুকে নেমে এলো হতাশা…ওপাশে থেকে মেয়ে কন্ঠে বলে উঠলো- “দিস নাম্বার ইজ আনরিচেবল।প্লিজ ট্রাই এগেইন!!” হায়!! নিয়তি… আজ যদি আয়ানের ফোনটা ভেঙে ছিন্নভিন্ন না হতো…আজ যদি আয়ান এতোটা রেগে না যেতো তাহলে হয়তো গল্পটা অন্যরকম হতো…কান্নার ঝুলিগুলো শূণ্য হয়ে হাসির ঝুলি হতো পরিপূর্ণ!! অদিতি মলিন মুখে কিছুটা হাসার চেস্টা করে বলে উঠলো -” ফোনটা বন্ধ!!” কথাটা শুনে রিয়ার মুখটাও কালো হয়ে এলো।অদিতির ফোনে আয়ানের নাম্বারটা সেইভ করে দিয়ে..” পরে কল করে নিও” কথাটা বলেই বেরিয়ে গেলো সে।।ভালো লাগছে না তার….কিচ্ছু ভালো লাগছে না তার।সব সময় সব কিছু নাটকীয় হওয়াটা কি খুব জরুরি??
.
#চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here