অবশেষে ভালোবাসি (সিজন ২)part:7

অবশেষে ভালোবাসি (সিজন ২)part:7
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤



রাত ১২ টা প্রায়,,সিগারেট হাতে ছাদে চলেছে ফাহিম।।সারাটা দিনে একটা সিগারেট খাওয়ারও সুযোগ হয়ে ওঠে নি তার।।সীতাকুণ্ডে যাওয়া আসার পথে গাড়িতে বাচ্চা আর মেয়েরা ছিলো তাই সিগারেট ধরায় নি সে।।সীতাকুণ্ডে গিয়ে একটা সুযোগ পেলেও রিয়ার জন্য খাওয়া হয়ে ওঠে নি আর।।তাই ডিনার শেষে ভেনসনের প্যাকেট পকেটে পুড়ে ছাদের দিকে চলেছে ,,,আজ পুরো রাত সে সিগারেট খেয়েই কাটিয়ে দেবে,,,একটা দুটো নয় পুরো তিন তিনটা প্যাকেট শেষ করবে আজ।।কিন্তুু তার কপালে হয়তো সেই সুখ নেই তাই তো ছাদের দরজা পর্যন্ত গিয়েই থমকে দাঁড়াতে হলো তাকে,,,ছাদের এক কোনে রেলিংএর উপর উল্টো দিক ফিরে বসে আছে একটা মেয়ে।।লম্বা চুলগুলো ঝুলছে ছাদের ফ্লোরের একটু উপরে,,,হালকা গোলাপি শাড়ির আচল বাতাসে উড়ছে ক্রমাগত।।মেয়েটি মাথাটা হালকা উঁচু করে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে,,,যেনো আকাশের তারা গুনতে ব্যস্ত সে।।ফাহিম বুঝতে পারছে না এতো রাতে কে এভাবে বসে আছে??তাও আবার এমন একটা রিস্কি জায়গায়,,,সেখানে বসতে গেলে ফাহিমেরই আত্মা কেঁপে উঠার কথা।। মেয়েটির কি ভয় নেই??মৃত্যুর ভয় না থাকলেও ভূতের ভয় টা তো থাকা উচিত,,মেয়েদের মধ্যে মৃত্যুর থেকে ভূতের ভয়টাই প্রবল।।কিন্তু এই মেয়ের মধ্যে কোনো ভয়ই প্রকাশ পাচ্ছে না।।অদ্ভূত!!! হালকা পায়ে এগিয়ে গেলো ফাহিম একটু কাছে গিয়েই বুঝতে পারলো মেয়েটা রিয়া।।ফাহিম এই পিচ্চি মেয়েটার সাহসে কিঞ্চিৎ বিস্মিত….

এই পিচ্চি??এতো রাতে এখানে কি??(গম্ভীর কন্ঠে)

হঠাৎ কারো গলার আওয়াজে চরম বিরক্তি নিয়ে পেছনে ফিরে তাকালো রিয়া।।সন্ধ্যা থেকেই মনটা প্রচন্ড রকম খারাপ তার।।তার মন খারাপের কেন্দ্রবিন্দু হলো ফাহিম।।রিয়া যে ফাহিমের জন্যই ওই নীল শাড়িটা পড়েছিলো তা ফাহিমের চোখেই পড়ে নি।সবাই এতো প্রশাংসা করলো অথচ ফাহিম ফিরেও তাকালো না,,এটা কি ঠিক???একদম ঠিক নয়,, এতো রীতিমতো অন্যায়।।তাই তো মন খারাপ করে ছাদে এসে বসেছে সে,,এটা তার ছোটবেলার অভ্যাস মন খারাপ হলেই মাঝরাত পর্যন্ত ছাদে বসে তারা গুনে সে,,নয়তো আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে।।কিন্তু এখানে এসেও বাগড়া দিলো ফাহিম।।তবে ফাহিমকে দেখামাত্রই রিয়ার চোখেমুখে খুশির ঝিলিক বয়ে গেলো,,,,উফফ ছেলেটাকে কি মারাত্মক লাগছে।।রিয়ার মনে হচ্ছে সে এখনি সেন্সলেস হয়ে যাবে,,,যেকোনো মুহূর্তে!!! ”

কি হলো??বলো, কি করো এখানে?

……………..

এভাবে “হা” করে তাকিয়ে আছো কেন??মুখ অফ করে ওখান থেকে নামো,,,পড়ে যাবা….

আ,,আমার….

তোমার কি?(ভ্রু কুচঁকে)

আমার মাথা ঘুরছে…..

কথাটা বলেই পরে যেতে নিলো রিয়া কিন্তু তার আগেই ফাহিম তারাহুরো করে সামলে নিলো তাকে।।কোনোরকম টেনে নিচে নামিয়েই দিলো এক ধমক….

সমস্যা কি তোমার??মাথার কয়টা তারছিঁড়ছে শুনি??এই মাঝ রাতে ছাদে এসে বসে আছো,,তাও আবার এই সরু রেলিং এ এখনি তো পড়ে যেতে।।কি হতো তখন??

কি করবো??আপনাকে দেখলেই তো মাথায় সব গুলিয়ে যায়,,,(মাথা নিচু করে বিরবির করে)

কি বললে?(ভ্রু কুচঁকে)

রিয়া সাথে সাথেই মাথা নাড়লো যার অর্থ ,, , সে কিছু বলে নি।।ফাহিম গম্ভীর গলায় আবারো প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো,,

এতো রাতে এখানে কি করছিলে??

তারা গুণছিলাম(দাঁত কেলিয়ে)

লাইক সিরিয়াসলি? এতো রাতে??

দিনে তো তারা দেখা যায় না,,নয়তো দিনেই গুনতাম….

ফাজলামো করছো আমার সাথে??(রাগী গলায়)

হ্যা,,করছি।।আপনার সাথে ফাজলামো করাই উচিত….

মানে?(ভ্রু কুচঁকে)

কিছু না।জানেন?আমি আপনার জন্য একটা নাম ঠিক করেছি।

আমার জন্য??আচ্ছা নামটা কি??

নামটা হলো ভাইরাস

হোয়াট??ভাইরাস??আর ইউ মেড??ভাইরাস কোনো নাম হলো?(রাগী গলায়)

আরে রেগে যাচ্ছেন কেন,,,এর পেছনে কিন্তু লজিক আছে লজিকটা শুনুন।।(ফাহিম ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই)আপনাকে আমি বলেছিলাম ভাইয়া বা স্যার দুটোর মধ্যে একটি ডিসাইড করে দিতে বাট আপনি তো উত্তর না দিয়েই চলে গেলেন।।তাই আমি দুটোকে মিক্সড করে বানিয়েছে ভাইরাস।ভাইয়া থেকে ভাই,,,আর স্যার থেকে সার আর সারকে উল্টাপাল্টা করে রাস,,হয়ে গেলো ভাইরাস।।।দারুন না??

শুধু দারুন কেন??এ তো অতি চমৎকার।।এর জন্য তোমাকে নোবেল দেওয়া উচিত।।(দাঁতে দাঁত চেপে)এনিওয়ে একটা রিকুয়েষ্ট রাখবে??

কি রিকুয়েষ্ট,,,আগে বলুন নয়তো কথা দিতে পারছি না।।পরে যদি বলেন “এই রিয়া আমাকে একটা পাপ্পি দাও” তাহলে তো সেটা আর আমার পক্ষে পসিবল নয়, তাই না??সো আগে শুনি রিকুয়েষ্ট টা কি,,তারপর জানাচ্ছি রাখবো কি না!

লাইক সিরিয়াসলি?? তুমি এসব ফালতু কথা ভাবো কেমনে??তোমাকে কিস করতে বলবো আর আমি??আর ইউ মেড??ঠাডায় দিবো একটা।এনিওয়ে রিকুয়েষ্ট টা হলো দয়া করে বোন, তোমার এই ক্রিয়েটিবিটি অন্যকারো সামনে প্রকাশ করো না (হাত জোড় করে)

কেনো??(মুখ গোমরা করে)

কারন তোমার এসব ক্রিয়েটিবিটিতে মানুষের হার্টে অ্যাটাক আসতে পারে।।

আমার ক্রিয়েটিবিটির সাথে হার্টের কি সম্পর্ক?? (ভ্রু কুচঁকে)

সম্পর্ক আছে রে পিচ্চি আছে,,তারা জেলাস ফিল করবে না?তুমি এতো ক্রিয়েটিব একজন পার্সোন বাট তাদের এই ক্রিয়েটিবিটির কতো অভাব,,তাই সেই দুঃখে আট্যাক করবে,,,বুঝলে??

ওওওওওওওও আচ্ছা,,,,ওকে যান আপনি যখন বলছেন,, সো আই এগ্রী,, এনিওয়ে আপনার হাতে ওটা কি??(হাত দিয়ে ইশারা করে)

সিগারেটের প্যাকেট(অন্যদিকে তাকিয়ে)

আপনি সিগারেট খান??(অবাক হয়ে)

হ্যা তো??

ছি….আপনার বউ আপনাকে একদম কিস করবে না,,মুখে সিগারেটের গন্ধ তারউপর পুড়া ঠোঁট….ইয়াক

কি বললা??(রাগী গলায়)

আ,,আমি ব..ললাম যে আমাকেও একটা দেন সিগারেট, খেয়ে দেখি কেমন লাগে…এক্সপেরিয়েন্স থাকা ভালো।।(হাত বাড়িয়ে)

তুমি যাবা এখান থেকে?? (রাগী গলায়)

নাহ যাবো না,,(ঠোঁট ফুলিয়ে)

কেনো?তো থাকবা এখানে?

অবশ্যই থাকবো তাতে আপনার কি??আপনি কথায় কথায় বকেন কেনো আমায়??জানেন,আমার কতো কান্না পায়??একটু আদর করেও তো কথা বলতে পারেন নাকি??(ঠোঁট ফুলিয়ে)

ফাহিম এবার সরাসরি রিয়ার মুখের দিকে তাকালো….রিয়ার চোখে মুখে চাঁদের আলোর ঝিলিক,,চুলগুলো বাতাসে হালকা উড়ছে,,চোখে ল্যাপ্টানো কাজল,, ঠোঁটজোড়া বাচ্চাদের মতো ফুলিয়ে মুখ ভার করে দাঁড়িয়ে আছে।।জোস্ন্যা রাতে এর থেকে সুন্দর দৃশ্য ফাহিম কল্পনা করতে পারছে না।।ফাহিমের মনে অবাধ্য একটা ইচ্ছে জেগে ওঠছে বারবার।।ইচ্ছে করছে……নাহ,,তার ইচ্ছের প্রকাশটাও করতে চায় না সে তাই তো কোনো কথা না বলে চুপচাপ নেমে এলো ছাদ থেকে।।এই বাচ্চা মেয়ের বাচ্চামোতে মাতলে চলবে না তার।।আর রিয়া নাক মুখ ফুলিয়ে সেখানেই দাঁড়িয়ে রইলো।।তার এই মুহূর্তে কাদঁতে কাঁদতে বন্যা বানিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে।।যে বন্যার পানিতে ফাহিম ভুসভুস করে ভেসে যাবে,,সেটাই বেশ হবে হুহ।।


ফাহিম ছাদ থেকে নেমেই অবাক হলো,ড্রয়িংরুমের একটা সোফায় আয়ান আর অদিতি দুইমুখো হয়ে বসে আছে আর আড়চোখে একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে।।তাদের মধ্যে যে এক পশলা ঝগড়া অলরেডি হয়ে গেছে তা ফাহিমের ইতিমধ্যে বুঝা হয়ে গেছে…

কি রে তোরা উত্তর দক্ষিণে মুখ করে বসে আছিস কেন??

ফাহিম তার প্রশ্নের উত্তর না পেয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আবারো প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো,,,”কি সমস্যা কথা বলছিস না কেন??” কিন্তু এবারও কারো মুখ থেকে কোনো কথা বের হলো না।ফাহিম এবার চরম বিরক্ত,, এভাবে সং সেজে মূর্তির মতো বসে থাকার কোনো মানে খুঁজে পাচ্ছে না সে,,,

এই তোগোর সমস্যা টা বলবি??নাকি থাপ্পর খাবি?.(রাগী গলায়)

উহুম উহুম….

এই তুই কাশতেছিস কেন??যক্ষা হইছে?এসব ফটকা কাশা বাদ দিয়ে ঝেড়ে কাশ কাহিনী কি,,,কি হয়েছে?(ভ্রু কুঁচকে)

দোস্ত মারাত্মক কাহিনী ঘটে গেছে,,আম সো ইমবারেসড্(ফিসফিস করে)

কিন্তু কাহিনীটা কি??(ডাবল ফিসফিসিয়ে)

না মানে আসলে,,

মাথা চুলকে আড়চোখে অদিতির দিকে তাকাতেই,,, অদিতি উঠে দৌড়।।ফাহিম কিছুই বুঝতে পারলো না শুধু হ্যাবলাকান্তের মতো দাঁড়িয়ে রইলো,,,

ওই শালা বলবি কি হয়ছে??তুই কিছু করিস নাই তো??দেখ আমাদের দেশের মাইয়ারা কিন্তু খুব সোফ্ট তোর ওই বিদেশী গার্লফ্রেন্ডদের মতো না,,,সো সাবধান।।

চুপ করবি তুই??তেমন কিছুই না,,,উল্টো মান ইজ্জত সব আমার চলে গেছে। ছি ছি

এই মাইয়াদের মতো প্যানপ্যান না করে বল তো কাহিনী টা কি??(বিরক্তি নিয়ে)

আরে,,নিচে আসছি খেলা দেখবো বলে।এসে দেখি ম্যাডাম ডকুমেন্টারি দেখছে।খেলার চ্যানেল দিতে বলায় এমন ভাব করলো যেনো মহাপাপ করে ফেলছি।।আমারও মেজাজ খারাপ হলো,,তাই রিমোট ধরে দিলাম টান।।ওই মেয়েও তো কম যায় না এতো সহজে ছাড়বে নাকি??শুরু হলো টানাটানি,, আর এক পর্যায়ে ব্যালেন্স না রাখতে পেরে দুজনেই সোফা থেকে ধপাসস্।।

তাহলে তো রোমান্টিক সীন ক্রিয়েট হওয়ার কথা।।সুন্দরী মাইয়ার উপর পড়েও তোর মুখ বাংলার পাঁচ কেন??এসব তো তোর কাছে সিম্পল ম্যাটার হওয়ার কথা।।(ভ্রু কুঁচকে)

আরে পুরোটা তো শোন,,কথার মাঝে বাম হাত কেন ডুকাচ্ছিস??এতটুকু হলে তো কথায় ছিলো না কিন্তু যা হলো তাতে আয়ান চৌধুরীর মানসম্মান ধ্বংস,,,শেষ শেষ

আবার পেচাঁচ্ছিস??

আবে আমার লুঙ্গি……..আর কিছু বলা লাগবে?বুঝোস না শালা??এই জিনিস আমি কখনো পড়ছি??(করুন চোখে)

ফাহিম এবার আয়ানকে পুরোপুরি ভাবে খেয়াল করলো।।আয়ানের গায়ে লুঙ্গি দেখে ফাহিম চরম অবাক।।এই জীবনে সে আয়ানকে লুঙ্গি পড়তে দেখেছে বলে তার মনে পড়ছে না তাহলে আজ?

তুই লুঙ্গি পড়তে গেছিস কোন সুখে?(অবাক হয়ে)

সুখে নয় ডাফার দুঃখে।।মনে নাই? কালকের খেলায় এটাই আমার ডেয়ার ছিলো।।(মন খারাপ করে)আর এটাই আমার কাল হলো।

আয়ানের কথায় ফাহিম হাসতে হাসতে রীতিমতো গড়াগড়ি খাচ্ছে।।আয়ানের মুখটা দেখার মতো হয়েছে.…..

মাইয়া কি সব দেখে নিছে নাকি মামা??(হাসতে হাসতে)

আয়ানের করুন চাহনী দেখেই ফাহিমের বুঝা হয়ে গেলো উত্তরটা হ্যা।।এবার তো ফাহিমের হাসতে হাসতে শহীদ হয়ে যেতে ইচ্ছা করছে।।ফাহিম আয়ানের পাশে সোফায় বসে হুহা করে হাসছে আর ওকে সান্ত্বনা দিচ্ছে,, এদিকে আয়ান রেগে – মেগে বোমমম।।


ফাহিম আর আয়ান গার্ডেনের দোলনায় পাশাপাশি বসে আছে।রাত প্রায় ১ঃ৩০।ফাহিমের হাতের জলন্ত সিগারেটটার আগুন ভোঁতা হয়ে আসছে ধীরে ধীরে।।হাসি চেপে রাখার প্রচেষ্ঠায় সিগারেটটা মুখে দেওয়া হয়ে উঠছে না আর।।আয়ান বার বার রাগী চোখে তাকাচ্ছে কিন্তু তাতে ফাহিমের কোনো প্রতিক্রিয়া হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না।।হঠাৎ ছাদের দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়েই বলে উঠলো আয়ান,,,

ফাহিম?দেখ তো ছাদের কোনে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে বলে মনে হচ্ছে না??

এই মেয়েটা এখনো ছাদে??পাগল নাকি?

কার কথা বলছিস??কে ওইটা?তাও এতো রাতে(অবাক হয়ে)

ওই পিচ্চি মেয়েটা(সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে)

পিচ্চি মেয়েটা আবার কে??(ভ্রু কুচঁকে)

আরে ওইযে রিয়াদের বোনটা।

ওহ,,রিয়া??

হবে হয়তো রিয়া টিয়া।।নাম মনে নাই,,আমার তো পিচ্চিই মনে হয়,,কাজকর্মও তো তাই

রিয়া কিন্তু ব্যাপক সমস্যার মধ্যে আছে,,ব্যাপারটা কি তুই বুঝতে পারছিস ফাহিম?(মুচকি হেসে)

কি রকম সমস্যা?(ভ্রু কুচঁকে)

ফাহিম ভাব কমায় মার,,তুই নিজেও একজন সাইকোলজি টিচার তো আমি জানি বিষয়টা তোর চোখে পড়েছে।।কিন্তু স্বীকার যাচ্ছিস না।

আরে আমি কি তোর মতো সাইকিয়াট্রিস্ট নাকি যে মানুষ দেখেই সমস্যা বলে দিবো।।কি বলছিলি সেটা কনটিনিউ কর।

রিয়া ইজ মেডলি লাভ উইথ সামওয়ান।।আর আমার ধারনা ভুল না হলে,,মানুষটা হচ্ছিস তুই।(রহস্যময়ী হাসি দিয়ে)

পাগল হইছিস তুই??কি সব বাজে বকছিস?এমন কিছুই না,,পিচ্চি একটা মাইয়া, ভালোবাসার “ভ” বুঝে ও??ফালতু…

হুম ঠিক বলেছিস,,এটাকে ভালোবাসা বলা যায় না,,একে বলে আবেগ।।আবেগ জিনিসটা খুব খারাপ,,আর এই স্টেজের মেয়েদের আবেগ কতোটা মারাত্মক তা তো তুই ভালো করেই জানিস।।আর রিয়া এক গভীর আবেগে ডুবে আছে যার পরিনাম মারাত্মক হতে পারে ….এবার সব তোর হাতে…

আমার হাতে?কি বোঝাতে চাস তুই??প্লিজ আয়ান আমাকে এর মধ্যে টানিস না,,,এসব ফালতু বিষয়ে আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই,,সেটা তুই খুব ভালো করেই জানিস।

আচ্ছা তুই কি এখনো সাদিয়ায় আটকে আছিস??

নো ওয়ে,,ওকে আমার ভালো লাগতো,।এই ভালোলাগাটা নেক্সট স্টেজে যাওয়ার আগেই ওর বিয়ে হয়ে যায়,,সো এটা নিয়ে আমিও আর মাথা ঘামায় নি।।

তাহলে প্রবলেম কি?আমার মতো তো তোর আর “প্রেমে পড়া বারন” টাইপ কোনো কাহিনী নাই,,তাহলে ওকে নিজের করে নিলেই পারিস,,,বুড়ো হয়ে যাচ্ছিস,,আর কতো? (দাঁত কেলিয়ে)

ওয়ান সেকেন্ড,,ওয়ান সেকেন্ড।কার কথা বলছিস তুই?(ভ্রু কুঁচকে)

কার আবার রিয়া,,,(মুচকি হেসে)

তুই আসলেই পাগল হয়ে গেছিস,,ওই পিচ্চি মেয়ে??যে আমার থেকে ১০/১১ বছরের ছোট হবে।।তুই তার সাথে আমাকে জড়াচ্ছিস,,ইউ আর সিক ইয়ার….

কথাটা বলেই সিগারেটটা ছুঁড়ে ফেলে ভেতরে চলে গেলো ফাহিম।।আয়ান দোলনায় বসে হাসছে,,মনের কোনে এটা চাপা টেনশনও জেগে উঠছে বারবার,,”মেয়েটা এই অাবেগ নামক ভয়ঙ্কর জাল থেকে বের হতে পারবে তো?নাকি শেষ হয়ে যাবে অসহায় অনুভূতিগুলোর কাছে?”


অদিতি বিছানায় পা তুলে বসে ক্রমাগত পা নাচাচ্ছে,,একধরনের অস্থিরতা কাজ করছে তার মধ্যে।।এক দুই গ্লাস না এই পর্যন্ত পুরো এক জগ পানি শেষ করেছে সে তবুও হতচ্ছাড়া গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আসছে বারবার….ঘুমোতেও পারছে না সে,,চোখটা বন্ধ করলেই একটা সীনই মাথায় ঘুরে বেড়াচ্ছে বেপরোয়াভাবে আর সাথে সাথেই উঠে বসছে সে,,কি বিরক্তিকর ব্যাপার উফফ….

,#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here