অবশেষে ভালোবাসি (সিজন ২)part:8

অবশেষে ভালোবাসি (সিজন ২)part:8
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤



বাড়িতে ভয়াবহ নিস্তব্ধতা। যাকে বলে পিনপতন নিরবতা। একটু আগেও অনুষ্ঠানের আমেজে বাড়িটা ছিলো জাঁকজমকপূর্ণ কিন্তু হঠাৎই সব নিস্তব্ধ। আর এই নিস্তব্ধতার মূল কারণ হলো রিয়াদের মা,,তিনি খুব দৃঢ়ভাবে ঘোষনা করে দিয়েছেন যে তিনি এই সপ্তাহের মধ্যেই রিয়ার বিয়ে দিতে চান,,,পাত্র ঠিকঠাক। কিন্তু বাঁধ সাধলো রিয়াদ,,সে মায়ের কথা মানতে নারাজ,, বোনটা তার কলিজার টুকরা।।ছোট থেকেই বুকে আগলে রেখেছে তাকে। সেই বোনটাকে এই বয়সে বিয়ে নামক জঞ্জালে সে কিছুতেই ফেলবে না,,,তার বোনটা যে এখনো অবুঝ।।সাদিয়া কি করবে বুঝতে পারছে না।একবার শাশুড়ি মা তো একবার রিয়াদের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে,, দুজনের জেদই সমান,, কেউ কারো কাছে হারতে নারাজ।সাদিয়াও স্বামীর সাথে একমত,,এই বাচ্চা মেয়েটাকে বিয়ে দেওয়ার কোনো যুক্তি সে খুঁজে পাচ্ছে না ,,কিন্তু শাশুড়ীর মুখের উপর কথা বলার সাহসও তার নেই।রিয়াও দরজার আড়াল থেকে টলমলে চোখে ফাহিমকে দেখে চলেছে,,ছেলেটা কি ভাবলেশহীনভাবেই না ফোনে ডুবে আছে।রিয়ার থাকা না থাকা যেনো তাকে বিন্দু মাত্রও ভাবায় না।রিয়ার এবার খুব অভিমান হচ্ছে কিন্তু সে জানে এই অভিমানটুকু ফাহিমকে ছোঁবে না তবু মন যে মানে না,তার কি করবে সে?অদিতি সিঁড়ির এক কোনে দাঁড়িয়ে নক কামড়াচ্ছে ব্যাপারটা তারও মোটে ভালো লাগছে না।রিয়া মেয়েটা খুব বাচ্চাসুলভ তাকে এভাবে বিয়ে দেওয়ার কোনো মানে হয় না।হঠাৎই কোমরে কারো ছোঁয়া পেয়ে চমকে পাশে তাকিয়েই মেজাজ খারাপ হলো তার,,,উফফ আয়ান,,,এই ছেলেটার বিন্দুমাত্র লজ্জা আছে বলে অদিতির মনে হচ্ছে না।।কালকের ঘটনার পর অদিতি নিজেই লজ্জায় মরে যাচ্ছে আর এই আয়ানকে দেখো লজ্জা শরম উড়িয়ে দিয়ে সকাল থেকেই অদিতির সাথে চিপকে আছে,,বিরক্তিকর….

হাত সড়ান,,(দাঁতে দাঁত চেপে)

ওপপস,,সরি বেবি।।

ডোন্ট কল মি বেবি,,,(রাগী গলায়)

রেগে আছো নাকি,মিস ঝগরুটে?? (ভ্রু নাচিয়ে)

নাহ…..খুব আনন্দে আছি।আনন্দের ঠেলায় নাচানাচি করছি।দেখছেন না বাড়ির অবস্থা??এর মধ্যে মুখ উঠিয়ে ফাজলামো করতে চলে আসছেন…বিরক্তিকর।

আই থিংক,,তোমার লো-ক্লাস মেন্টালিটি আন্টিকে ইনফ্লুয়েন্স করেছে তাই এমন অদ্ভুত সব ডিসিশন নিচ্ছে,,(বাঁকা হেসে)

হোয়াট??আমার মেন্টালিটি লো ক্লাস??(দাঁতে দাঁত চেপে)

অবিয়েসলি,, উইথআউট ডাউট….

কথাটা বলেই বাঁকা হেসে নিচে নেমে গেলো আয়ান।।অদিতির ইচ্ছে করছে এই ছেলেটাকে খুন করে ফেলতে।বিরক্তিকর পার্সোনালিটি!! উফফফ…..


ছাদের সরু রেলিং এর উপর পা ঝুলিয়ে বসে আছে রিয়া।তার দৃষ্টি নিচের দিকে।।”আচ্ছা এখান থেকে লাফিয়ে পড়লে কি সে মরে যাবে ??” প্রশ্নটা তাকে খুব ভাবাচ্ছে।।হঠাৎই ফাহিমের কন্ঠ ভেসে এলো তার কানে।কিন্তু পিছু ফিরে তাকালো না সে।।রিয়া ডিসিশান নিয়ে নিয়েছে সে কিছুতেই ফাহিমের সাথে কথা বলবে না ,,কিছুতেই না।ফাহিমের অপরাধ হলো সে রিয়ার বিয়ের কথা শুনে কষ্ট পায় নি,,এটা ফাহিমের গুরুতর অন্যায় তার উচিত ছিলো কষ্ট পাওয়া।ছোটখাটো কষ্ট নয় দেবদাস হয়ে যাওয়া টাইপ কষ্ট পাওয়া উচিত ছিলো তার।।

এই মেয়ে আজও কি তারা গুনছো নাকি???(মুচকি হেসে)

…..………………..

কি হলো??কথা বলছো না কেন??

কেনো বলবো কথা??বলবো না কথা(ঠোঁট ফুলিয়ে)

ওরে বাবা,,আজকে পিচ্চিটা রেগে আছে নাকি?(মুচকি হেসে)

হুম রেগে আছি,,একটু না অনেক বেশি রেগে আছি।।

আচ্ছা??তাহলে পিচ্চিটার রাগের কারণটা কি জানতে পারি??(রেলিং এ হেলান দিয়ে)

এই এই আপনি আমাকে পিচ্চি পিচ্চি কেনো করছেন হ্যা??আপনি জানেন আমার বয়স কতো??আমার বয়স হলো ১৮ বছর ৪ মাস ৩ দিন,,হুহ।।তাহলে আমি পিচ্চি হলাম কিভাবে শুনি??

হাহাহাহা বাহ তুমি এত্তো বড় হয়ে গেছো??মিনিট আর সেকেন্ডটাও বলে দিলে সুবিধা হতো।।কাল তোমার হবু বর আসছে তাকে ক্লিয়ারলি বলা যেতো তুমি কতো বড়….

একদম মজা করবেন না।।আমি ওই ছেলেকে কিছুতেই বিয়ে করবো না…(মুখ গোমরা করে)

কেনো?ছেলে তো শুনলাম মাশআল্লাহ খুব সুন্দর।।তাহলে সমস্যা কি?(ভ্রু নাচিয়ে)

আপনি চান আমি বিয়েটা করে নিই?(কাঁদো কাঁদো মুখে)

অবশ্যই….এসেছিই যখন বিয়েটাও খেয়ে যাই। কতোদিন বিয়ের দাওয়াতে যাওয়া হয় না।।হেব্বি মজা হবে কি বলো??(মজা করে)

আপনি যান এখান থেকে….

কেনো??(অবাক হয়ে)

আমার খুব কান্না পাচ্ছে।কিন্তু আমি আপনার সামনে কাদঁতে চাইছি না।সো গো ফর্ম হেয়ার…(চুল খোঁপা করতে করতে)

ফাহিম কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো। তার চোখদুটো স্থির হয়ে আছে রিয়ার ঘাড়ের ওই কালো উজ্জল তিলটাই।ফাহিমের খুব ইচ্ছে হচ্ছে তিলটা ছুঁয়ে দিতে,,একধরনের অবাধ্য নেশা মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে বারবার।ফাহিম এক পা এগিয়ে গেলো অন্য পা ফেলার আগেই রিয়ার কথায় ঘোর কাটলো তার….

কি হলো যাচ্ছেন না কেন??যান না প্লিজজ…

ফাহিম কোনো কথা না বলেই নেমে গেলো ছাঁদ থেকে।। চোখের পলক ফেলতেই তার চোখে ভেসে উঠছে সেই মায়ায় মাখানো কালো তিল।আবার পরমুহূর্তেই নিজের এমন ভাবনায় নিজেকে গালি দিয়ে উঠছে সে।।কিন্তু কথায় আছে না,” মন শোনে না কোনো বারন”। আমরা কাকে ভালোবাসবো সেটা আমাদের হাতে নেই,,সে তো নিয়তিই নির্ধারন করে দেই।।ভালো না বাসার জন্য হাজার যুক্তিও ভালোবাসার একটা যুক্তিহীন কারনের কাছে হেরে যায়।।


সোফায় মাথা নিচু করে বসে আছে রিয়াদ,,চোখ -মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে প্রচুর পরিমানে রেগে আছে সে।রিয়াদকে কখনোই এতোটা রাগতে দেখে নি সাদিয়া।রিয়াদের এমন রূপে রুমে ডুকতেই ভয় লাগছে তার আর আপু কি না তাকেই পাঠালো রিয়াদকে শান্ত করতে।হায় আল্লাহ কি হবে এখন?যদি রিয়াদ ওকে বকে দেয়??কোনো রকম দোয়া দুরুদ পড়ে বুকে ফু দিয়ে রুমে ডুকে গেলো সাদিয়া।রিয়াদের কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখতে পেয়ে অসীম সাহস নিয়ে হুট করেই বসে গেলো রিয়াদের কোলে।।রিয়াদ যে তাতে চরম বিরক্ত তা তার মুখের ভাবই বলে দিচ্ছে স্পষ্টভাবে….

কি হচ্ছেটা কি সাদিয়া??সরে বসো।(বিরক্তি নিয়ে)

নাহ,,আমি এখানেই বসবো।

সবসময় জেদ ভালো লাগে না সাদিয়া।।সরো বলছি,,বাচ্চাদের মতো বিহেভ বন্ধ করো….(রাগী গলায়) এন্ড গো ফ…

আর কিছু বলার সুযোগ হয়ে উঠলো না তার এর আগেই একজোড়া উষ্ণ ঠোঁটের স্পর্শে থমকে গেলো সে।।কিছুক্ষণ পর ছাড়া পেলেও হতভম্ব হয়ে বসে রইলো সে,,এমন একটা পরিস্থিতিতে একমাত্র সাদিয়ার পক্ষেই এমনটা করা পসিবল।।।কিছুক্ষন চুপ থেকে নীরবতা ভেঙে শান্ত কন্ঠে বলে উঠলো সাদিয়া..

দেখো রিয়াদ..আমি জানি রিয়াকে তুমি কতোটা ভালোবাসা আর মা যে রিয়াকে কতোটা ভালোবাসে সেটাও আমি জানি,,আমার থেকে তুমিই সেটা বেশি ভালো জানো তাই নয় কি?তাহলে এতো রাগ কেন??মা নিশ্চয় না বুঝে কিছু করছে না।

তুমি কি বলতে চাইছো?রিয়াকে বিয়ে দিয়ে দিই?(রেগে গিয়ে)

নাহ রিয়াদ,,তা নয়।কিন্তু তোমাকে মার সাথে এই ব্যাপারে কথা বলতে হবে।তোমার কথাটাও মাকে বুঝিয়ে বলতে হবে আর মার কথাটাও তোমায় বুঝতে হবে।।এভাবে দুজনেই রাগারাগি করলে ফলাফল কি হবে রিয়াদ?শুধু অশান্তি।।ছোট থেকে একা হাতে বড় করেছে মা তোমাদের,, তার কথাটা তোমরা না বুঝলে কে বুঝবে বলো??(গলা জড়িয়ে)

…………………….….

কি হলো কিছু বলছো না কেন??ভুল বললাম??

আমি মার সাথে কথা বলবো..(শান্ত কন্ঠে)

থেংকিউ থেংকিউ(গালে ঠোঁট ছুঁইয়ে)

রিয়াদও এবার মুচকি হেসে সাদিয়াকে জড়িয়ে নিলো নিজের সাথে।তবু চোখে- মুখে টেনশনের ছাপটা স্পষ্টই রয়ে গেলো,, মাকে সে বোঝাতে পারবে তো??


অদিতি বাগানে হাটঁছে,,এই বাড়িতে এই বাগানটাই তার সবচেয়ে বেশি পছন্দ হয়েছে।।গোলাপ ফুল তার খুব প্রিয় আর বাগানটাই গোলাপ গাছের ছড়াছড়ি।।চারদিকে ফুটন্ত গোলাপ দেখে অদিতির মনটাও ফুরফুরে লাগছে,,আচমকা মাথায় টোকা পড়ায় পিছনে ফিরে তাকালো সে,,কিন্তু একি কেউ নেই।।আনমনে সামনে ফিরে তাকতেই আয়ানকে দেখতে পেয়ে চেঁচিয়ে উঠলো।।ভয় পেয়েগিয়েছিলো বেচারী,,তাড়াতাড়ি বুকে থুথু দিয়ে রাগী চোখে তাকালো ।।আয়ান তো হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে তা দেখে অদিতির রাগ যেনো আরো দ্বিগুন বেরে গেলো….কি বজ্জাত ছেলে।।

সমস্যা কি আপনার??আমার পিছে পিছে ঘুরছেন কেন??(বিরক্তি নিয়ে)

পিছে কই??আমি তো তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আছি বেবি ডল।

খবরদার আমার উপর এসব ফালতু ওয়ার্ড উইজ করবেন না,, লুচু কোথাকার।(রাগী গলায়)

আচ্ছা তুমি তো সরাসরিই বলতে পারো যে তুমি চাইছো আমি তোমায় কিস করি।এতো পেচিঁয়ে বলার কি আছে?(বাঁকা হাসি দিয়ে)

হোয়াট??কি সব বাজে বকছেন??

তা নয় তো কি?সেদিন লুচু বলার পর যে মিষ্টি খাওয়েছিলাম সেটা খুব মনে ধরেছে বুঝি??তাই বারবার লুচু ডাকছো,,,ওকে কাম,,,আই হেভ নো প্রবলেম….(এগিয়ে আসতে আসতে)

এ,,এই ভালো হচ্ছে না কিন্তু দ..দূরে দ..দূরে দাঁড়ান(কাঁপা গলায়)

সেটা তো হবে না,,,কাছে তো আসতেই হবে….(বাঁকা হাডি দিয়ে)

কথাটা বলার সাথে সাথে আয়ানকে একটা ধাক্কা দিয়েই এক দৌড়ে ভেতরে চলে গেলো অদিতি।।আয়ানও মুচকি হাসি দিয়ে বসে গেলো দোলনায়।।আজানা এক কারনে মেয়েটাকে জ্বালাতে তার ভীষন রকম ভালো লাগে,,,একটু বেশিই ভালো লাগে।।


রাত ১২ঃ৩০ রিয়া বিছানায় গালে হাত দিয়ে বসে আছে।।এই মুহূর্তে তার ধপ করে বড় হয়ে যেতে ইচ্ছে করছে,,ফাহিমের মতো বড়।।তাহলে নিশ্চয় ফাহিম তাকে পিচ্চি পিচ্চি বলে দূরে ঠেলে দিতো না।।কিন্তু কিভাবে হবে সে বড়??ঠিক তখনই দরজায় টোকা পড়ায় চোখ তুলে তাকালো সে……

কি রে বুচি আসবো??

যদি না বলি তাহলে কি ওইখানেই দাঁড়িয়ে থাকবি ভাইয়া?

নাহ,, তবুও ঢুকে যাবো,,,

তাহলে ভং ধরে দাড়িয়ে আছিস কেন চলে আয়।

কি রে আমার বোনটার কি মন খারাপ?(পাশে বসতে বসতে)

হুম.(মাথা নাড়িয়ে)

খুব বেশি খারাপ??

হুম

ওহহ…আমার বোনটার মনটা ভালো করার জন্য কি আমি কিছু করতে পারি?

নাহ,,পারো না।।তবে এখান থেকে চলে গিয়ে আমায় একা ছেড়ে দিতে পারো।

ওও তারমানে সে আমার সাথে আইসক্রিম খেতে যেতে পারবে না।তাকে এখানে একা বসে থাকতে হবে?ওকে তাহলে আমি যাই কি আর করা??(উঠতে উঠতে)

ভাই??তুই আমায় আইসক্রিম খেতে নিয়ে যাবি??

চেয়ে তো ছিলাম কিন্তু মহারানীর সময় কই??(মন খারাপ করে)

কি যে বলিস ভাইয়া,, মহারানীর অফুরন্ত সময়….চলুন সেনাপতি( ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে, হাত বাড়িয়ে দিয়ে)

যো আগ্গা মহারানী( হাত ধরে, মুচকি হেসে)

রিয়াদ আর রিয়া পাশাপাশি হাঁটছে।। রিয়ার হাতে দুটো আইসক্রিম। আর একটা রিয়াদের হাতে জমা রেখেছে,,সেটা রিয়াদের খেতে মানা।রিয়াদও মুচকি হেসে বোনের কথায় সম্মতি জানিয়েছে।।রিয়া হাঁটছে আর আইসক্রিম খাচ্ছে সাথে পুরো মুখেও মাখাচ্ছে,,আর রিয়াদ তাকে বিভিন্ন কথা বলে খেপিয়ে চলেছে কিন্তু হঠাৎই রিয়া থমকে দাড়ালো,,রিয়াদ ভ্রু কুচকে তাকাতেই, মুখ ফুলিয়ে বলে উঠলো …” আমি আর হাঁটবো না ভাইয়া,,,পা ব্যাথা করছে কোলে নাও।” রিয়াদও মুচকি হেসে কোলে তোলে নিলো তাকে,,,বোনটা তার এখনো সেই ছোটই আছে,,হাজারও আবদার তার কাছে।তবু কেনো যে মা ওকে পর করে দিতে চাইছে কে জানে??তার এই ছোট্ট বোনটাকে কি কেউ ওর মতো করে আগলে রাখতে পারবে??

ভাইয়া?

হুম?

আমার ওজন বেড়েছে না কমেছে?

বাড়লেই কি আর কমলেই কি,,তুই তো অলওয়েজ আটার বস্তা।।

কিহ,,আমি আটার বস্তা??এটা বলতে পারলি তুই ভাই??(মুখ গোমরা করে)

না বলতে পারার কি আছে??খুবই ইজি ওয়ার্ড।।

হুহ,,,আচ্ছা ভাইয়া,,আকাশের তারাগুলো যদি ধপ করে আমাদের উপর পড়ে যায় কেমন হবে রে?(আকাশের দিকে তাকিয়ে)

তোর মাথা হবে।।পাগলের মতো কথা বলছিস কেন বুচি??

ভাইয়া আমি না পাগল হয়ে যাচ্ছি।।আমার মধ্যে একটু পাগলাটে পাগলাটে ভাব চলে আসছে,,তুই কি খেয়াল করেছিস??

না তো,,কি রকম পাগলাটে?(ভ্রু কুচঁকে)

এই দেখ না,,আগে আমি কতো মিষ্টি করে হাসতাম আর এখন আমার হাসিতে একটা পাগল পাগল ভাব চলে এসেছে শুনবি??

না থাক,,পরে আবার রাস্তার মানুষ আমাদের পাগলাগারদে না পাঠিয়ে দেয়।।তার থেকে তুই এই পাগলামোর কারনটা আমায় বল,,

তোকে বলা যাবে না,,,তোকে বলার নিয়ম নেই।।এটা শুধু বোনদের বলতে হয়।। এটাই নিয়ম,, মাকেও বলা যায় বাট আমার মাকে বলা যাবে না…

কেনো??বলা যাবে না কেনো??(ভ্রু কুঁচকে)

কারন আমাদের মা টা বিরাট ডেঞ্জারাস মহিলা,,,তাকে বললে সে কুরুক্ষেত্র বাঁধিয়ে দিবে।।

ওও আচ্ছা…তাহলে বলতে হবে না।।তবে তুই তোর ভাবিকে বলতে পারিস

হুম আইডিয়া খারাপ না,,ভেবে দেখবো।।আচ্ছা ভাইয়া আমি যদি বিয়েটা না করি কেমন হয়??

খুবই ভালো হয়।

আমি যদি পালিয়ে যাই তাহলে কেমন হয়?

সেটা আরো ভালো হয়…

কিন্তু আমার তো বিএফ নাই,,কার সাথে পালাবো(মন খারাপ করে)

একা একা পালাবি।।একা পালানোর মজাই আলাদা।।ঘুরবি বেড়াবি দুদিন পর চলে আসবি কোনো যন্ত্রনা নেই।অনেকটা পিকনিক টাইপ বাট সাথে কেউ থাকবে না এটাই ডিফারেন্স।।

বাহ্ ভাই,, তুই তো জিনিয়াস…

কথাটা বলেই দুজন একসাথে হেসে উঠলো।।ফাঁকা রাস্তায় ওদের হাসিটা যেনো ঝংকার তুলে প্রতিধ্বনিত্ব করে উঠছে বারবার।।ভাই- বোনের ভালোবাসাগুলো কি অদ্ভূত,, হাজার চিন্তা-ভাবনাগুলোকেও নিমিশেই হাওয়ায় মিশিয়ে দিতে পারে এই ভালোবাসা।।


রাত ২ টা,, ফাহিম ঘুমোচ্ছে কিন্তু ঘুমের মাঝেই তার খুবই প্রবলভাবে মনে হচ্ছে কেউ একজন তার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে।।ফাহিমের..

#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here