ধ্রুবতারা পর্ব_১২ পুষ্পিতা_প্রিমা

ধ্রুবতারা
পর্ব_১২
পুষ্পিতা_প্রিমা

পতিতাপল্লীর সর্দার এরশাদ আলম আর তার সহচরদের হাতে জঘন্যভাবে আহত হওয়া তরুণী নাহিদা জান্নাত রাহাকে অবশেষে উদ্ধার করা গিয়েছে। ভাগ্যবশত তিনি বেঁচে আছেন। এই তরুণীর খোঁজ না পাওয়া পর্যন্ত এই খবর কোথাও প্রচার করা নিষিদ্ধ ছিল। অবশেষে আজ তা খোলাসা হলো।
তার উদ্ধারকর্মী পুলিশ ছিলনা, ক্রিমিনাল ডিপার্টমেন্টের ও কেউ ছিলনা। বরং সেন্ট্রাল হসপিটালে সদ্য জয়ন হওয়া জুনিয়র কার্ডিওলজিস্ট ডক্টর রোয়েন আহম্মেদ ছিলেন। ঘটনাসূত্রে জানা যায় রাহা বিয়ে করবে না বলেই পালিয়ে গিয়েছিলেন রূপসা গ্রামের উদ্দেশ্যে। কিন্তু মাঝপথে পুলিশের ভয়ে বিহনপুর স্টেশনে নেমে যেতেই এরশাদ আলমের চক্করে পড়েন তিনি। আমরা আর ও বিস্তারিত জানব ডক্টর রোয়েন আহম্মেদের কাছে , সঙ্গে থাকুন জনতা টিভির সাথে।

সাংবাদিকদের অনর্গল বকাবকানি আর এত এত প্রশ্নের সম্মুখীন রোয়েন। বিরক্তিতে মেজাজ চটে আছে। চোয়ালের রগ ফুলছে আর কমছে। কখন না এদের কয়েকটা দিয়ে বসে।
রোয়েন ত্যাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন ছুঁড়লো৷
‘ স্যার আপনার এভাবে চুপ থাকা মানাচ্ছেনা। কিছু অন্তত বলুন।
রোয়েন বলল
‘ আমি বাধ্য নই। ইনস্পেকটর তালুকদারকে ডাকুন।
সাংবাদিকরা নাছোড়বান্দা।
‘ নো স্যার। আমরা আপনাকে এভাবে ছাড়তে পারব না।
একজন তো বলেন উঠলো
‘ আমরা শুনেছি বিয়ে থেকে পালিয়ে যাওয়া রাহা, আপনাকে ভালোবাসে! এটা কতটুকু সত্য ডক্টর রোয়েন ?
রোয়েন অগ্নিচোখে তাকালো। সাংবাদিক ভড়কে না গিয়ে জিজ্ঞেস করল
‘ তাছাড়া ওই পল্লীতে রাহাকে উদ্ধার করতে গিয়ে আপনারা একঘরে রাত কাটিয়েছেন। বলা যায় টাকা দিয়ে আপনি রাহাকে কিনে নিয়েছেন। আমি কি ঠিক বলছি?
রোয়েন বলল
‘ মুখ সামলে!
হাসলো সাংবাদিক।
‘ ওইখানেই একজন লোক হসপিটালে জ্ঞান ফেরার সাথে সাথে এই বয়ান দিয়েছে ডক্টর রোয়েন। মনে হচ্ছেনা ওরা ভুল বলছে। তাছাড়া সত্যিটা বলায় আপনি নাকি রূপসা গ্রামের পুলিশ অফিসার জমিরের গায়ে ও হাত তুলেছেন?
রোয়েন ক্ষেপে উঠে ঝাঁপিয়ে পড়লো সাংবাদিকটার উপর। যেভাবে পারলো সেভাবে কিল ঘুষু দিল। নাক দিয়ে রক্ত বের করলো।

জায়িদ আর ঈশান দৌড়ে এল। রোয়েনকে ছাড়িয়ে নিতে গিয়ে রোয়েনের ধাক্কা ও খেয়ে বসলো। রোয়েনকে ছাড়িয়ে নিতেই রোয়েন হাঁপাতে হাঁপাতে বলল,

‘ কুত্তার বাচ্চা তিলকে তাল করার রোগ তোদের কোনোদিন যাবে না? সর।
যা শুনেছিস সব দুইগুণ না তিনগুণ হাজার গুণ সত্যি। এবার কি করবি কর। যাহ।

জায়িদ রোয়েনকে টেনে নিয়ে গিয়ে পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বলল
‘ মামা শান্ত হও। এত রেগে গেলে চলে?
রোয়েন হাত সরিয়ে দিল জায়িদের।
‘ ছুঁবেনা আমায়। বলেই গটগট পায়ে হেঁটে চলে গেল।
ঈশান বলল
‘ বুঝতে পারছিনা মামা, কি হবে এবার? রাহার এই অবস্থা মানতে পারছিনা আমি। জিন্নাত কিছু আগে ও ফোন করে কান্নাকাটি করছিল, ওনি বলছেন সব ওনার জন্য হয়েছে। জায়িদ বলল
‘ দোষ কারো নয়, সব পরিস্থিতি। রোয়েনকে সামলাতে হবে। কোথায় গেল? একদম বাপের রাগ পেয়েছে। আজ জুননু থাকলে এক ডাকে ছেলেকে সামলে নিত। কেন যে চলে গেল ওই দু’জন!

__________

বাড়ি ফিরে ইজি চেয়ারে বসে দোল খেতে খেতে ভাবনার এপোড়ওপোড় দিতে লাগলো রোয়েন। শাওয়ার নিয়েছে কিছু আগে। কপালের পাশে ব্যান্ডেজটা সামান্য খুলে গিয়েছে। হাতের বাহুর কাছে চিনচিনে ব্যাথা হচ্ছে। ঘরে হঠাৎ লাইট জ্বালালো কেউ একজন।
‘ না খেয়ে না দেয়ে দৌড়াদৌড়ি করছিস কেন?
জবাব দিল না রোয়েন।
তাননা প্লেটের ভাত মেখে ভাইয়ের মুখের কাছে দিয়ে বলল
‘ ভাত খেয়ে নে দুটো। আমি কফি আনছি।
রোয়েন বলল
” এখন আন। ভাত খাবো না।
‘ ভাত না খেলে কফি পাবি না।
তাননার জোরাজুরিতে খেতে হয়।
মামুণি কোথায়?
‘ রুমে। গায়ে জ্বর এসেছে।
‘ কখন?
‘ চিন্তার কিছু নেই, আমি ঔষধ খাইয়েছি। টিভিতে নিউজ দেখে কান্নাকাটি জুড়ে দিয়েছিল। রাহার মা ওনি। মেয়ের এই দশা, চরিত্রে কলঙ্ক মেনে নেওয়ার কথা নয়। আমার এই দশা হলে মানতে পারতি?
‘ তোকে আর রাহাকে আলাদা করে কখন দেখেছি আমি? আমি কি রাহার এই দশা হোক তা কখনো চেয়েছি?
পানি খাইয়ে দিল তাননা। বলল
‘ কফি আনছি।
রোয়েন চোখ বন্ধ করে রাখলো৷ রাহাকে পাগলা গারদে রাখলে সুস্থ হওয়ার কোনো চান্স নেই। এখানে আনার কথা ভাবা ও যাবেনা। সবার গায়ে হাত তুলবে। কি করবে এখন?
তাননা কফি এনে দিল। বলল
‘ রাহাকে বিয়ে করে নে।
চমকালো রোয়েন।
‘ অসম্ভব। আমি পারব না।
‘ তো কে পারবে? একটা ছেলের সাথে পুরো একটা রাত একঘরে কাটিয়েছে শুনে আর কে বিয়ে করবে তাকে? তারউপর পাগল!
‘ ও পাগল না।
‘ নাহ, পাগল না। মানসিক ভারসাম্যহীন। তোর জন্য ওর এই দশা হয়েছে। তোর জন্য। সবাই বলে তুই নাকি আব্বার মতো হয়েছিস। মাথা হয়েছিস। তুই ভালোবাসতে জানিস না। আব্বা ভালোবাসতো জানতো। পরিবারটাকে শেষপর্যন্ত আগলে রেখে গেছে, আম্মাকে পাগলের মতো ভালোবাসতো। আর তুই তো ভালো কিভাবে বাসে সেটা ও জানিস না। এত পাষাণ কেন তুই? কাদের ছেলে তুই?

রোয়েন বলল
‘ ভালোবাসতো? আব্বা ভালোবাসতে জানে? তাহলে ছেড়ে গেল কেন আমাদের? এই তার আগলে রাখা? আর আম্মা? শুনেছি ছেলেমেয়ে গুলো তার প্রাণ ছিল। কি করে ওই মাটির ঘরে শুয়ে আছে প্রাণগুলো ছেড়ে? পাষাণ হওয়া আমি তাদের কাছে শিখেছি। আমার মনে কিচ্ছু নেই। নেই দয়া, মায়া, ভালোবাসা। সহানুভূতি দেখাতে পারবো না আমি।
বলেই রুম থেকে বের হয়ে গেল রোয়েন। তাননা ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইলো। রোয়েন সোরার রুমে গেল। রিহান মায়ের পাশে গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে। সোরার গালে জলের দাগ স্পষ্ট। রোয়েন থার্মোমিটার নিল হাতে। ডাকল
‘ মামুনি?
সোরা চমকে উঠলো। পিটপিট করে রোয়েনকে দেখে কেঁদে উঠলো চিকনসুরে। গলা ভেঙে গেছে। রিহান বলল
‘ আম্মা কেঁদোনা।
রোয়েন গিয়ে জড়িয়ে ধরলো। বলল
‘ তোমার কষ্ট আমি দূর করে দেব মামুনি। কেঁদোনা। কাঁদলে সমস্যা বাড়ে। কমে না।
সোরা বলল
‘ রাহাকে কোথায় রেখে এসেছ? ও নাকি ওর আব্বার গায়ে ও হাত তুলেছে।
‘ ও এখন ঠিক নেই তাই। যখন ঠিক হয়ে যাবে তখন এমন করবেনা।
সোরা কাঁদল।
বলল
‘ কখন ঠিক হবে? আমি আর পারছিনা।
রোয়েন বলল
‘ শীঘ্রই ঠিক হয়ে যাবে। আমি ওকে এই বাড়িতে নিয়ে আসবো।
রিহান বলল
‘ আপু যদি আমাদেরকে ও মারে? আপুকে নাকি শিকলবন্দী করে রেখেছে?
‘ হ্যা।

রোয়েন থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মেপে বলল
‘ রিহান এই ঔষধ গুলো নিয়ে আসবে দোকান থেকে। তারপর নিয়ম অনুযায়ী খাওয়াবে। আমি আসছি।
সোরা ধরে ফেলল রোয়েনের হাত। বলল
‘ রাহাকে এনে দাও আব্বা। ও আমার অনেক কিছু। একজনের দিয়ে যাওয়া আমানত। আমি ওকে হারাতে পারবো না।
রোয়েন মাথায় হাত বুলালো সোরার। কপালে বিশ্বাস ভরসার আশ্বাস এঁকে দিয়ে বলল
‘ বিশ্বাস রাখো আমার উপর। কিচ্ছু হবে না রাহার। আর কেঁদোনা৷ ঠিক আছে? কাঁদবে?
সোরা মাথা নাড়িয়ে বলল
‘ নাহ।
রোয়েন বলল
‘ ঠিক আছে। আসছি আমি। একটু ঘুমানোর চেষ্টা করো।
রিহান মাকে প্রশ্ন করল
” আপু কার দিয়ে যাওয়া আমানত আম্মা?
সোরা ছেলেকে জড়িয়ে ধরলো। কেঁদে উঠে বলল
‘ এসব প্রশ্ন করতে নেই।

__________

জায়িদ আর ঈশান মাত্রই এল। নাহিলের বুকে ছোট্ট বিড়াল ছানার মতো গুটিসুটি মেরে পড়ে থাকা রাহাকে দেখে হাসি ফুটলো তাদের মুখে। নাহিল মেয়ের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল
‘ বাড়ি যাবে মা?
রাহা বলল
‘ আমাকে ছাড়।
নাহিল বলল
‘ ছাড়ব না। আব্বার সাথে কেউ এভাবে কথা বলে? তুই তুকারি কে শিখিয়েছে?
রাহা ঘুষাঘুষি করল। জায়িদ বলল
‘ নাহিল কি করছিস? ছেড়ে দে। ও তো স্বাভাবিক নেই।
নাহিল বিশ্বাস করতে চাইলো না। বলল
‘ ও ঠিক আছে জায়িদ ভাই। হয়ত আমার উপর রাগ করে এরকম করছে। বিয়ে দিয়ে দিচ্ছিলাম তো।
জায়িদ বলল
‘ নাহিল তুই ও পাগল হয়ে গেলি?
রাহা গর্জন করল অস্ফুট স্বরে।
‘ তুই পাগল। আমি পাগল নই।
জায়িদ ভড়কে গেল। নাহিলকে জোরে ধাক্কা মারলো রাহা। নাহিল ছিটকে পড়তে গিয়ে ও আটকে গেল।
রোয়েন এসে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলল নাহিলকে। নাহিল চোখ ঘষে বলল
‘ মুননা এটা কি হলো? রাহা?
রোয়েন বলল
‘ তোমার মুখে কি হয়েছে?
নাহিল বলল
‘ কিছুনা।
রাহা হাত তালি দিয়ে বলল
‘ এই বাজে ছেলে, আমি তোকেই খুঁজছি, এদিকে আয়। আয়।
রোয়েন বলল
‘ তুমি তোমার আব্বাকে আঘাত করেছ?
রাহা মুখ কালো করে ফেলে বলল
‘ তুই বকা দিচ্ছিস কেন? ওই লোকটা আমাকে ধরতে আসে শুধু শুধু। বলেছি না আমার মাথায় ব্যাথা করে। ওরা শোনেনা।
নাহিল চোখ ঘষলো আবার। জায়িদ নাহিলকে টেনে নিয়ে গিয়ে বলল
‘ চল তো। মুননা সামলাবে রাহাকে। তুই এরকম করলে হবে? সোরাকে কে সামলাবে? এরকম করিস না ভাই।

নাহিল বলল
‘ মুননাকে চলে আসতে বলো। দয়া দেখাতে হবেনা আর। চলে আসতে বলো।
জায়িদ বলল
‘ থাম।
রোয়েন কান পেতে শুনে। নাহিল বলে
‘ রাহা পঁচুক, গলুক, মরুক কার কি? মুননার ও কি যায় আসে? সহানুভূতির দরকার নেই রাহার। রাহা ভালো হলে হবে নাহলে, পাগলা গারদে পড়ে থাকবে।
রোয়েন মাথা নামিয়ে থাকলো। রাহা বলল
‘ তোকে মারব?
রোয়েন চুপ করে থাকে। রাহা চেয়ার টেনে নেয়। নার্সদুটো চিল্লিয়ে উঠে।
রোয়েন বলল
‘ কাকে মারবে?
‘ তোকে মারব।
‘ কেন?
‘ আমার মারতে মন চাই। মারি?
রোয়েন চেয়ারটা নিয়ে ফেলল। রাহার হাত দুটো ধরলো। বলল
‘ সিস্টার হাত বাঁধুন।
নার্স হাত বেঁধে দিল। রাহা তড়পাতে তড়পাতে কাঁদল। রোয়েন তাকে থামিয়ে দিতে দিতে বলল
‘ রাহা, রাহা শোনো আমার কথা।
রাহা শুনলো না। মাথা নাড়াতে নাড়াতে কাঁদলো। রোয়েন আরেকটা চড় দিতে উঠে ও দিলনা। নার্স আঁতকে উঠলো। রাহা শান্ত হয়ে গেল রোয়েনের হাত তোলা দেখে। মুখ চেপে ধরে অঝোরে কেঁদে দিয়ে বলল
‘ আমি মাথায় ব্যাথা পাই।
রোয়েন বলল
‘ কাঁদলে তে অবশ্যই পাবে। কাঁদছ কেন?
রাহা কান্না থামানোর চেষ্টা করতে করতে বলল
‘ তুই মারিস কেন? বকা দিস কেন?

রোয়েন বলল
‘ তোমাকে নিয়ে কোথায় যাব আমি? কি করব? দেখেছ বাবাই কি বলে গেল? দেখেছ? আমার ওই একটা দোষ। তোমাকে কেন বিয়ে করলাম না?
রাহা কেঁদে কেঁদে বলল
‘ কেন করিসনি?
রোয়েন বলল
‘ এখন করব। আজই করব। বিয়ে করে নিলে কি তুমি সুস্থ হয়ে যাবে? যাবে?
রাহা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলল
‘ তোকে বিয়ে করব না। তোর সাথে কথা ও বলব না। তুই বাজে ছেলে।
রোয়েন বলল
‘ হ্যা, আমি তো বাজে ছেলে। বাজে ছেলে আমি। ভালো ছেলে কখন বলেছি? বলেছি? তোমার কাছে ভালো হওয়ার জন্য কি আমি বসে আছি? অত ফালতু কাজ করার সময় কোথায়?
রাহা বন্দী হাতদুটো দিয়ে চোখ মুছলো। তারপর গরাদে ডুকে মেঝেতে শুয়ে পড়লো। ঘুমিয়ে গেল। রোয়েন বলল
‘ ওর মাথার নিচে একটা নরম বালিশ দিন সিস্টার। মাথার ব্যাথা নয়ত আর ও বাড়বে। নার্স একজন এগিয়ে এসে বলল
‘ জ্বি, স্যার।

_________

রাত দশটা কিংবা এগারোটা। তাননা তখন বাড়ির সবাইকে রাতের খাবার খাওয়াতে ব্যস্ত। সোরাকে খাওয়াতে বেগ পেতে হলো। সালমা বেগম অনেকটা জোর করে মেয়েকে খাওয়ালেন। তাননা সালেহাকে ঔষধ দিচ্ছিল। দরজার কলিং বেল বেজে উঠলো তখুনি। তাননা হাত মুছতে মুছতে এগোলো। দরজা খুলে দিতেই রোয়েনকে দেখে বিস্ফোরিত চোখে তাকালো তাননা। রোয়েনের কোলে রাহা। তাননা রাহাকে দেখে ডাকল
‘ রাহা?
রোয়েন বলল
‘ সরে দাঁড়া।
তাননা বলল
‘ রাহাকে হঠাৎ এখানে?
রোয়েন হাতে থাকা কাগজটা ফেলে দিল। তাননা সেটা কুড়িয়ে নিয়ে চোখ বুলিয়ে সাথেসাথে রোয়েনের দিকে তাকালো। রোয়েন হাঁটা ধরলো। সোরা দাঁড়িয়ে পড়লো। শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। নাহিল এসে তাননার হাত থেকে কাগজটা কেড়ে নিল। চোখ বুলিয়ে তাননার দিকে চেয়ে থাকলো। তাননা বলল
‘ বাবাই মুননা নিশ্চয় ভেবেচিন্তে,
নাহিল বলল
‘ নাহ, দয়া দেখিয়েছে। এই দয়াটা যদি দুইদিন আগে দেখাতো তাহলে আজ রাহার এই অবস্থা হতো না।
তাননা বলল
‘ বাবাই মুননাকে ভুল বুঝোনা প্লিজ।
নাহিল বলল
‘ ভুল বুঝব কেন? মহৎ কাজ করে ফেলেছে সে।
রোয়েন রাহাকে রেখে এসে সবার উদ্দেশ্যে বলল
‘ আমি এসব ব্যাপার নিয়ে আর কোনো কথা শুনতে চাই না। বিয়ে করে নিয়েছি। ব্যস।
জায়িদ এল ঠিক তখুনি। নাহিলের হাতের কাগজ নিয়ে দেখলো। বিস্ময়ে চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম৷ কেউ কিচ্ছু বলার সাহস করে উঠতে পারলো না। শুধু সালেহা বেগম জিজ্ঞেস করল
‘ বিয়ে ছেলে খেলা নয় ভাই। কাদের সাক্ষী রেখেছিস? রাহা কবুল বলেছে? সাইন করেছে? তুই কি মন থেকে এই বিয়ে করেছিস?
রোয়েন বলল
‘ বিয়ে করে নিয়েছি, এই একটা কথা কি যথেষ্ট নয়? আর কি চাও তোমরা? খোদার কছম আর একটা প্রশ্ন করলে এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাব আমি।
সবাই আর কোনো প্রশ্ন করল না।

চলবে
একটু বেশি এলোমেলো হয়ে গেছে বোধহয়?t

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here