বিষাক্ত প্রেমের অনুভূতি উর্মি প্রেমা (সাজিয়ানা মুনীর) পর্ব :৯

বিষাক্ত প্রেমের অনুভূতি

উর্মি প্রেমা (সাজিয়ানা মুনীর)

পর্ব :৯

তিন ঘন্টা পরিক্ষার হলে বসে থেকে সেহেরের নাজেহাল অবস্থা।কোমর বেঁকে গেছে। গতরাতে ভালো ঘুম হয়নি। প্রথম পরিক্ষার টেনশন দ্বিতীয়ত আরহামের শাসিয়ে যাওয়া।চোখজোড়া ঘুমে বুঝে আসছে।বড় এক হাই তুলে ক্লাস রুমের বাহিরে বের হয়।মেঘলা গুমট আকাশ । আবছা গরম গরম ভাব। আশেপাশে তেমন কোন লোকজন নেই।কেউ পরিক্ষার হলে কেউবা অনেক আগেই চলে গেছে।সেহের দু’কদম সামনে যেতেই নিতানকে দেখতে পায় বত্রিশ দাঁত বের করে হাসি দিয়ে দাড়িয়ে।জোরপূর্বক সেহের ঠোঁটের কোণায় হাসির রেখা টানে।নিতান নিজ থেকে আগবাড়িয়ে সুলভ স্বরে বলল,”এক্সাম কেমন হলো? সব কমন পরেছিলো ত? ”
“জি ভালো! নোট গুলো খুব কাজের ছিলো।আপনি ছেলেটাকে বলেছিলেন বলেই নোট গুলো দিয়েছিলো । ধন্যবাদ”
“ধন্যবাদের কিছু নেই।তাছাড়া তুমি যদি একান্তই ধন্যবাদ জানাতে চাও তাহলে আজ সন্ধ্যায় কফি ডেটে চলো! ”
সেহের নিতানের কথায় অপ্রস্তুত হয়ে পরে।নিতান তা বুঝতে পেরে ঝোপ বুঝে কোপ বসাল।বলল,”তোমার যদি সমস্যা থাকে নো প্রব্লেম এসো না।জোরাজোরির কিছু নেই। আই আন্ডারস্ট্যান্ড নতুন শহর নতুন লোক বিশ্বাস করতে পারছ না।”
সেহের অপ্রস্তুত স্বরে বলল,”না এমন কিছু না।আমি আসবো! ”
সেহেরের কথায় নিতান উল্লাসিত স্বরে বলে,”ঠিক সন্ধ্যা সাতটায় আমি তোমার অপেক্ষা করবো।কেমন? ”
সেহের জোরপূর্বক হেসে ‘হ্যা ‘সূচক মাথা নাড়াল।নিতান আবার বলল,”এড্রেস ফোনে মেসেজ করে দিবো।”
নিতান চলে যায়।সেহের নিতানের যাওয়ার দিকে ঘৃণার দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। কে বলবে এই সহজ সরল চেহারার পিছনে নিকৃষ্ট একটা রূপ লুকিয়ে আছে? সেহের সাথে সাথে ফোন বের করে, লিয়াকে ক্যান্টিনে আসতে বলে।

ক্যান্টিনের শেষ টেবিলটায় লিয়া সেহের পিয়াল বসে আছে।তিন জনই গম্ভীর মুখ করে গভীর চিন্তায় মগ্ন।লিয়া চিন্তিত স্বরে বলে,”সত্যি ই কি তুমি যাবে? আই মিন সে কতটা ডেঞ্জারাস তুমি তো জানো ”
“না যেয়ে উপায় কি? ভিডিও ক্লিপ তো নিতে হবে।তুমি কি নিশ্চিত ভিডিওটা নিতানের ফোনেই আছে? ”
লিয়া মাথা ঝাঁকিয়ে উত্তর দেয়,”হ্যা ভিডিওটা ফোনেই আছে। ”
পিয়াল ভাবনাগ্রস্ত স্বরে বলল ,”তোমার সাথে নিতানের কি করে পরিচয়? আর ভিডিওটাই বা তার কাছে কি করে গেল? ”
লিয়া ভিতু থতমত স্বরে,”যখন ফাস্ট ইয়ারে ছিলাম নিতানের সাথে আমার পরিচয় হয়।আমাদের মাঝে নরমালি সিনিয়র জুনিয়রের সম্পর্ক ।জাস্ট এতোটুকুই।দাদাজানের ইলেকশনের সময় আরহাম ভাইয়ের সাথে তার ঝামেলা হয় এর পর থেকে নিতানকে এড়িয়ে চলি।কিন্তু হ্ঠাৎ সেদিন রাইসার বার্থডে পার্টিতে আবার দেখা হয়।নিতান আগবাড়িয়ে কথা বললে আমি সৌজন্য সুলভ ভাবে কথা বলি।হঠাৎ তার হাত থেকে আমার গায়ে ড্রিংক পরে যায়।আমি ক্লিন করার জন্য ওয়াশরুমে যাই ।এ সুযোগে নিতান আমার পিছু নেয়।রাইসার বেডরুমে পৌছয়।আমার সাথে জোরজবরদস্তির চেষ্টা করে।আমি রেগে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে কোনরকম বেরিয়ে আসি।এরপর আর কোন যোগাযোগ হয়নি।কয়েকদিন আগে এক রাতে নিতান তার ফেসবুক একাউন্ট থেকে রাইসার বার্থডের কয়েকটা ছবি পাঠায়।যেখানে স্পষ্ট মনে হচ্ছে আমি নিজ থেকে নিতানের সাথে এটাচ হয়েছি।হুমকি দিয়েছে আমি যদি ওর শর্তে রাজী না হই তাহলে এই ছবি গুলো ওয়াহিদের পরিবারের কাছে পাঠাবে।”
“নিতান এমন কি শর্ত দিয়েছে? “পিয়াল প্রশ্ন করলো।লিয়া নিচু স্বরে আমতা আমতা উত্তর দিলো ,ওই জানোয়ারটা এক রাতের জন্য সেহেরকে তার বেড পার্টনার হিসাবে চায়।”
পিয়াল রাগে গরগর করতে করতে বলে,”কি জানোয়ার ওকে তো মেরে কুচি কুচি করে ফেলা উচিত! ”
সেহের ছোট নিশ্বাস ছেড়ে শান্ত স্বরে বলে,”যা হওয়ার তা হয়ে গেছে।আমাদের এখন ঠাণ্ডা মাথায় প্লান অনুযায়ী কাজ সারতে হবে। ”
“যদি বুঝে যায়? তোমার কোন ক্ষতি করে? ”
“বুঝবে না ,আর ওর এতো সাধ্যি নেই যে ও আমার ক্ষতি করবে।যদি করতে পারতো তাহলে এতো দিন অপেক্ষা করতো না। অনেক আগেই করতো । লিয়াকে ব্লাকমেইল করে আমার অবধি পৌছাতে চাইতো নাহ ”
লিয়া ভীতু গলায় বলল,”এবার কি করবে? ”
“কি আর, প্লান অনুযায়ী বাকি কাজ করবো। নিতান জানে আমি ওঁর আসল রূপ সম্পর্কে এখনো জানিনা । নিতানের কথা মত লিয়া ওঁর সাথে আমার বন্ধুত্ব করিয়ে দিয়েছ।আর যা হচ্ছে সবটা নিতানের ইচ্ছামত হচ্ছে।আমি আজ কফি ডেটে যাবো ঠিক সুযোগ বুঝে ওঁর ফোন চুরি করবো ।”
“ফোনে যদি ভিডিও না থাকে? “পিয়াল প্রশ্ন করলো।সেহের কিছু একটা ভেবে উত্তর দিলো ,”ওকে উল্টো ব্লাকমেইল করার মত তথ্য ত ফোনে অবশ্যই থাকবে । তাই না? লিয়ার কথা অনুযায়ী এর আগেও ও আরো অনেক মেয়ের ভিডিও করে তাদের ব্লাকমেইল করে বেড পর্যন্ত নিয়ে গেছে।ঐসব প্রমাণ হাতে পেলেও যথেষ্ট ওঁর বিরুদ্ধে লিগ্যাল স্টেপ নেওয়া যাবে । ”
“তুমি একা এসব করবে? “পিয়াল বলল ।সেহের হ্যা সূচক মাথা নাড়াতেই লিয়া হুংকার দিয়ে বলল,”মোটেও না! আমি তোমাকে একা ওই জানোয়ারের কাছে যেতে দিবো না।আমার জন্য তোমাকে বিপদে পরতে দিবো না। তোমার সাথে আমিও যাবো ”
সেহের লিয়ার হাতে হাত রেখে আশ্বস্ত স্বরে বলল,”আমার উপর ভরসা রাখো ।কিছু হবে না।আর তাছাড়া তুমি গেলে বাড়ীতে কে সামলাবে? তারউপর দুদিন পর তোমার আকদ।সন্ধ্যায় বের হলে নানা প্রশ্ন উঠবে! এরচেয়ে বরং তুমি বাড়ীতে সামাল দিও আমি এদিকটা দেখবো! কেমন? ”
লিয়া অনিচ্ছাকৃত ভাবে মাথা নাড়াল।মন কেমন জানো কু ডাকছে ।মনে হচ্ছে বড় কিছু ঘটবে !

নিতানের পাঠানো এড্রেস অনুযায়ী সেহের পাঁচ তারকা হোটেলের সামনে দাড়িয়ে।ভিতরে ডুকতেই কর্নারে এক টেবিলে নিতানকে দেখতে পায়।হাত উঁচু করে সেহের কে ডাকছে।সেহের মুখে জোরপূর্বক হাসির রেখা টেনে নিতানের দিকে এগিয়ে যায়।বাহিরে অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে ।নিতান সেহের মুখোমুখি বসে।নিতান মেনু দেখে কফি অর্ডার করেছে যার মূল্য তিন হাজার টাকা।ওয়েটার কফি নিয়ে আসলে সেহের কুঞ্চিত ভ্রু করে বিচক্ষণ চোখে কফির কাপে স্বর্নের টুকরা খোঁজার চেষ্টা করে।এমন কি আছে এই কফিতে যার মূল্য তিন হাজার টাকা? পাঁচ তারকা হোটেল বলেই কি আকাশ চুম্বী দাম রাখবে?
সেহেরের ভাবনায় ছেদ পরে নিতানের গলার স্বরে,”কি হলো খাচ্ছ না যে? ”
সেহের মুচকি হেসে উত্তর দিলো ,”এই তো নিচ্ছি ”
“বায় দ্যা ওয়ে তোমাকে সাদারঙে অপ্সরী লাগছে ”
“ধন্যবাদ! “সেহের গম্ভীর স্বরে বলল।দুজনের মাঝে পিনপতন নীরবতা । নীরবতা ভেঙে নিতান আবারো বলল,”তুমি কি অস্বচ্ছন্দ বোধ করছ? ”
“জি নাহ ,আমি ঠিক আছি।”
কফি মুখে দিতে কেমন জানো অদ্ভুত ব্যতিক্রম এক স্বাদ অনুভব করে । কয়েক চুমুক খাওয়ার পর মাথা ঝেঁকে উঠে। এমন সময়ই সেহেরের ফোন বেজে উঠে।লিয়া কল করেছে।নিতান সামনে থাকায় সেহের ফোন রিসিভ করল না।ফোন আরো কয়েকবার বাজল।জরুরী কোন তলব হয়তো। শেষ অবধি কোন উপায় না পেয়ে সেহের নিতান থেকে সামান্য দূরে সরে ফোন রিসিভ করলো।হ্যালো বলার পূর্বেই অপরপাশ থেকে লিয়ার অস্থির স্বর ভেসে আসে।লিয়া বলল,”কাজ হয়েছে? ”
“নাহ ,মাত্র পৌছিয়েছি! ”
“আরহাম ভাই সব জেনে গেছে । ভিডিও থেকে শুরু করে সবটা।ভীষণ রেগে বেরিয়েছে তোমার কাছেই হয়তো আসছে । সাবধান! ”
লিয়ার কথা শুনে সেহের কেঁপে উঠে ।কাঁপা কাঁপা স্বরে বলে,”কি করে জানলো ? ”
“তোমাকে বাড়ীতে না দেখে আমার কাছে জিগ্যেস করে ..আর …আমি ”
“আর তুমি সবটা বলে দিলে? ”
“না বলা ছাড়া কোন উপায় ছিলো না।ভাইয়া ভীষণ রেগে ।মনে হচ্ছিল চোখ দিয়ে গিলে ফেলবে ….”
“অকে রিলেক্স ,যা হবার হয়েছে । আমি কাজ শেষ করে এখনি বের হচ্ছি! ”
সেহের কথা শেষ করে নিতানের সামনে বসে।কফির মগে চুমুক দিকে কোণা চোখে নিতানের দিকে তাকায়। নিতানের ফোনটা টেবিলেই আছে।নিতান অন্যমনস্ক হয়ে আশেপাশে দেখছে সেহের সুযোগ বুঝে যেই ফোনটা হাতে নিবে এমন সময়ই ফোনটা বেজে উঠে।সেহের ভয়ে কেঁপে উঠে দ্রুত হাত গুটিয়ে নেয়।নিতান ফোন রিসিভ করে বলে,”মাম্মাহ সব রেডি তো? এই তো মামা আর একটু অপেক্ষা করো । ফাঁদ ফেলাইছি পাখি ধরা দিতে যতক্ষণ ”
বলেই নিতান সেহেরের দিকে তাকিয়ে জঘন্য হাসি দেয়। ততক্ষণে কফিতে মেশানো ড্রাগ সেহেরের উপর কাজ করতে শুরু করে দিয়েছে।নিতান আগে থেকেই ওয়েটারকে টাকা দিয়ে কফিতে ড্রাগ মিশিয়ে রেখেছে।সেহের চোখের সামনে সব কিছু ঝাপসা দেখছে।সবকিছু অন্ধকার হয়ে আসছে।শরীর কেমন জানো ছেড়ে দিয়েছে।সেহের মাথায় হাত দিয়ে কোন রকম দাড়াবার চেষ্টা করে।এমন সময়ই ধপাস করে চেয়ারে পরে যায়।নিতান হাত বাড়িয়ে ধরতে নিলে সেহের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে আধো আধো স্বরে বলে,”ছাড়ো আমাকে! কফিতে কি মিশিয়েছ? এমন গোল গোল ঘুরছে কেন সব! ”
“ছেড়ে দেবো? এক রাতের জন্য পুরো এগারো হাজার খরচা করেছি ।কিছু না করেই ছেড়ে দিবো? ”
সেহের নিজের শক্তিহীন শরীর নিয়ে হাত পা ছুড়াছুঁড়ির চেষ্টা করে কিন্তু নিতানের শক্তির সাথে কোন ভাবেই পেরে উঠে না। আশেপাশের লোকজন খুব স্বাভাবিক ভাবে নিচ্ছে। পাঁচ তাড়কা হোটেলে এসব স্বাভাবিক । রোজ প্রায় এমন অনেকেই ড্রিংক করে ড্রাংক অবস্থায় পরে থাকে।

আকাশ ভেঙে বর্ষণ নেমেছে । আরহাম হোটেলের সদর দরজায় দাড়িয়ে । পুরো রেস্টুরেন্টের দিকে চোখ বুলায়।দূর কিনারের একটা টেবিলে নিতানকে দেখা যাচ্ছে।সেহেরের হাত ধরে টানাটানি করছে।আরহাম রাগে কাঁপতে থাকে ।চোয়াল শক্ত হয়ে এসেছে । রাগের জন্য এটা সঠিক জায়গা না। চোখ মুখ বন্ধ করে রাগের উপর নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করে । কিন্তু কিছুতেই পারছেনা । বড়বড় পা ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে যায়।টেবিলের উপর থেকে কাঁটাচামচ নিয়ে সেহেরের দিকে বাড়ন্ত নিতানের হাতে ঢুকিয়ে দেয়। নিতান চিৎকার করে রক্তাক্ত হাত নিয়ে দূরে ছিটকে পরে।আরহামকে দেখে ভয়ে কাঁপতে লাগে।আরহাম নিতানের ফোন পায়ে নিচে পিষে ফেলে। রেগে সিংহের মত গর্জন করে বলে,”তোর মরণ কাছে এসেছে! কোথায় হাত দিয়েছিস তোর জানা নেই।আগেই ওয়ার্নিং দিয়েছিলাম শুনিসনি ত?…..তোর কলিজা এতো বড় হয়েগেছে মেয়েদের ব্লাকমেইল করিস? তাও আবার আমার বাড়ীর মেয়েদের! মরণ ভয় নেই? ”
নিতান আহত হাত নিয়ে কোনরকম প্রাণ নিয়ে বেরিয়ে যায়।আরহাম নিতানের যাওয়ার দিকে তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে থাকে।

বৃষ্টি থামার নাম নিচ্ছে না।তার উপর সেহেরের এই পাগলামো।মাতাল সেহের আরহামের হাত জড়িয়ে নিভু নিভু চোখে তাকিয়ে। সেহেরের এই অবস্থায় এই বৃষ্টির ভেতর বাড়ীতে যাওয়া অসম্ভব। আরহাম হোটেলে রুম বুক করে।আজ রাতটা এখানেই পাড় করবে।আরহাম সেহেরকে কোলে তুলে নেয়।সেহের আরহামের ব্লেজারের কলার শক্ত করে চেপে ধরে। সেহেরের সাদা গোল্ডেন কারুকাজের ওরনাটা মাটি ছুঁই ছুঁই। আরহাম সেহেরকে কোলে করে রুম অবধি নিয়ে আসে।সেহেরকে বিছানায় বসাতেই, সেহের তড়াক করে বিছানার পাশে সোনালি টেবিলের উপর চড়ে।আরহামের আর ভেজা ব্লেজার ছাড়ানো হলো না।রাগী গোমড়া মুখে সেহেরের দিকে তাকিয়ে থাকে।অন্যদিকে সেহের টেবিলের উপর চড়ে পুরো ঘর মাথায় তুলে নিয়েছে ।উল্টাপাল্টা পাগলের প্রলাপ করছে।আরহাম সেহেরের দিকে পা বাড়ালে ,সেহের হঁশিয়ারি স্বরে বলে,”এই গোমড়া মুখো ছেলে! এই ,হ্যা তোমাকেই বলছি ,একদম আমার দিকে পা বাড়াবে না বলে দিলাম!…আ..আমি কামড়ে দিবো । আমি কিন্তু খুব ভালো কামড় দিতে পারি হুহ! ”
আরহাম বিরবির করে বলল,”চাশমিস বিড়াল ”
আরহামের বিরবিরিয়ে কথা সেহেরের কান অবধি পৌছয়।তেতে বলল,”এই রাগী রাক্ষস কি বললে তুমি? আমি চাসমিস? বিড়াল? তুমি জানো চশমা কারা পরে? যারা বেশি জ্ঞানী মাত্রাধিক কিউট সুন্দরী তারাই চশমা পরে ।”
আরহাম সেহেরের কথায় হেসে ফেলে।মজার স্বরে বলে ,”তুমি কিউট ,সুন্দরী ? কই আমার চোখে ত পরছে না!”
“ব্যাটা ,তুমি কানা! তাই তোমার চোখে পরছে না।মন দিয়ে ,ভালো করে দেখো । চারচোখ ,ওহ সরি ,দুই চোখ দিয়ে দেখো ঠিক দেখতে পাবে। ”
“কানা কে তা ত দেখতেই পাচ্ছি । ”
“কি তুমি আমাকে কানা বললে? আমি কানা? আমি বাঁচবো না মরে যাবো । এখনি এখান থেকে ঝাপ দিয়ে সুইসাইড খাবো! ”
“টেবিল থেকে ঝাপ দিয়ে সুইসাইড খাবে? ”
“হ্যা খাবো এখনি খাবো ! তোমার কোন সমস্যা? কেউ আমাকে ভালোবাসে না । না বাবা, না মা ।সবাই আমাকে শুধু দূরে ঠেলে দেয়। কেউ ভালোবাসে না কেউ না ”
কথাগুলো বলতে বলতে সেহের কান্না করে দেয়।নেশার ঘোরে মানুষের আবেগ নিজে নিজেই জেগে যায়। কোন কিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। সেহেরের সাথেও তাই হচ্ছে। নিজের হাসি কান্না কোন আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে পারছে না।হাত ছড়িয়ে সেহের নিজের ঝোঁক টেবিলের দিকে হেলিয়ে দেয়।আরহাম সাথে সাথে ধরে ফেলে।সেহের হাওয়ায় ভাসছে।আরহাম গভীর চোখে সেহেরের দিকে তাকিয়ে আছে। সেহের গোল গোল চোখে তাকিয়ে অভিমানী স্বরে বলে,”গোমড়া মুখো রাগী রাক্ষস তুমি ধরেছ কেন? ছাড়ো আমাকে? এক্ষণ ছাড়ো! “আরহাম মুচকি হেসে বলে ,”বাহ জাতে মাতাল তালে ঠিক! ”
আরহাম কোলে তুলে বিছানায় শুয়িয়ে দেয়।সেহের আস্তে আস্তে বিরবির করে বলে,”তুমি আমার কাছে আসবেনা । ছাড়ো আমাকে! তোমার গায়ের মিষ্টি ঘ্রাণ আমাকে বেকাবু করে দেয়।দূরে যাও….”
না শুনার মত করে আরো অনেক কিছু বলল যা আরহামের কান অবধি পৌছয় না।আরহাম সেহেরের চোখের পানি মুছে দিয়ে কপালে গাঢ় চুমু দিয়ে বলল ,”কে বলেছে কেউ ভালোবাসে না? এই যে আমি ভালোবাসি তো । তাও অনেক বেশি! নিজেকে ভুলিয়ে তোমাকে পাই। একবার শুধু তুমি আমার হও দুনিয়ার সব সুখ তোমার পায়ে এনে ফেলবো । কথা দিলাম ”

চলবে….❣️

ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন ।প্লিজ সবাই সবার মতামত জানাবেন😊😊😊।

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here