#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
পর্বঃ২৫
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমার এন্ট্রিতে সবাই অনেকটা ভয়ে আসে। সবাই ভয়ে ঢোক গিলতে লাগলো,
.
–আমি এখানে এসেছি কেনো তা হয়তো আপনারা বুঝতে পেরেছেন। আমি কাউকে জোর করছি না। আপনারা আপনাদের নিজ ইচ্ছা এখন আমাকে জানাতে পারেন। কিন্তু আমি বলে রাখি একটা কথা। যদি আপনারা এখন আমার রাজ্যের অংশ না হতে চান তাহলে লোকির সাথে যুদ্ধে পরে আপনাদের যুদ্ধ ডেভিল কিং এর সাথে হবে।(আমি)
.
–কিন্তু জেনারেল লুসেফার তো আমাদের জানালেন আপনার আমাদের রাজ্যের প্রতি কোনো লোভ নেই, শুধু আপনি আমাদের সেনা চাচ্ছেন যুদ্ধের জন্য। তাহলে এখন আবার আপনার রাজ্যের অংশ হতে বলছেন কেনো?(সি জার রাজ্যের রাজা বলে উঠলেন)
.
–ও তাহলে লুসেফার সেটা বলেছে। হ্যা ঠিকই বলেছে লুসেফার৷ আমার এই মনস্টার দুনিয়ার কোনো রাজ্যের প্রতিই কোনো লোভ নেই৷ তবে এমন নয় যে আমি এটাকে এভাবে ফেলে দিবো, আচ্ছা সেটার কথা বাদ দিলাম। সেটা যুদ্ধের পরে শান্তি মতো আলোচনা করা যাবে৷ কিন্তু তার আগের কথা আমরা আলোচনা করি। লোকির সেনার মধ্যে আপাতোতো ড্রাগোনিয়া দুনিয়ার ফায়ার ড্রাগনরা রয়েছে। আমাদের আন্ডারওয়ার্ল্ড সেনার জন্য তাদের সেটা একটু বেশী হয়ে যায়। তাছাড়া তাদের প্রধান সেনার মধ্যে যোগ দিয়েছে স্যয়ারতালফাইম এর ডার্ক এল্ফস। ডার্ক এল্ফসদের রাজা ম্যালিকিত লোকির মতোই শক্তিশালী। কিন্তু এই যুদ্ধে সে যোগ দিবে না। আমার মনে হয় সে ভবিষ্যত এর চিন্তা করছে। যাইহোক লোকি আমাদের আন্ডারওয়ার্ল্ডে আক্রমন করলে মনস্টার দুনিয়া ও শেষ হয়ে যাবে। তাই আমি মনস্টার দুনিয়ার সবার সহযোগিতা কামনা করছি।(আমি কথাগুলো আমার মনস্টার ফর্মে ট্রান্সফার হয়ে বললাম)
।।।
।।।
মনস্টার ফর্মে কথাগুলো বলার কারন হলো এতে তারা ব্যাপারটা সিরিয়াসলি ভাবে নিবে। যাইহোক কেউ কোনো কথা বলছে না। সবাই নিজের নিজের জীবনের ভয়ে আছে। তাদের ভাবনা হাইমডালের মতো পড়তে পারলে কাজে দিতো এই সময়ে। জানি না হয়তো আন্ডারওয়ার্ল্ডে থাকলে আমি জানতে পারতাম আদৌও কি আমি পড়তে পারবো অন্য কারো মনের কথা। এবার আমার ছায়ার মধ্য থেকে আমাদের ভি রু দা বেরিয়ে আসলো। একে তো সবাই আমার ডেভিল কিং এর রূপ দেখে ভয়ে আছে, আবার ইগড্রাসিলের বাচ্চা রূপ দেখতে পেলো,
.
–জ্যাকসন লোকি তো শুধু নতুন ফায়ার কিং কে হাত করেছে। তুমি চাইলে আমি বাকি পাঁচ রাজার সাথে কথা বলবো, বিশেষ করে ওয়াটার এবং আর্থ কিং আমার সাহায্য করবে যদি আমি সেখানে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলি।(ভিরু)
.
–না আপাতোতো তোমাকে ড্রাগোনিয়াতে যেতে হবে না৷ তুমি সেখানে যাও না কয়েকশত বছর যাবৎ। বলা যায় না তারা হয়তো পাল্টে গেছে এখন। আর এখন তোমার সেখানে নয় বরং আমার সাথে প্রয়োজন।(আমি)
.
–কিন্তু আমি আর তোমার ছায়ার মধ্যে থাকতে পারবো না। ভিতরের কালো ধোয়া গুলো আমাকে মেরে ফেলতে চাই।(ভিরু)
.
–হ্যা ঠিক আছে। আর ভিতরে থাকতে হবে না। তো আপনাদের মনে হয় না আর এই ব্যাপারে কোনো কথা আছে। আপাতোতো আমি পাঁচ রাজ্য চাই না। আপনাদের মধ্য থেকে আমি একটা রাজা বা রানী যায় আমাকে দিবেন সেটাই চলবে, মনস্টার দুনিয়ার সকল মনস্টার হোক সে সৈনিক কিংবা হান্টার সবাইকে এই যুদ্ধের জন্য আপনাদের মধ্য থেকে একজন নিয়ন্ত্রন করবে। এখন সেটা কে হবে আপনারাই ভেবে বলুন।(আমি)
।।।
।।।
কেউই ভয়ে কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। এমনিতেই আমার কালো ছায়া নেগেটিভ ভাবার জন্য বেরে গেছে আবার। আর সেটার জন্য অনেকের ভালো করে শ্বাস নিতেও সমস্যা হচ্ছে। জানি না আমার কালো ছায়া এতোটাও ভয়ানক হবে। যায় হোক কেউই রাজি হচ্ছিলো না। হঠাৎ তখনি একজন হাত তুললো। আমি তো পুরো অবাক। এনা হাত তুলবে আমি সেটা কখনো ভাবি নি। আমি তো ভেবেছিলাম রানী কর্ডিলা আমার সৎভাই এর হাত তুলে ধরবে। কিন্তু রানী কর্ডিলার এমনিতেই অবস্থা কাহিল। একজন সাকুবিচ্ এর মনে হয় শক্তিশালী কোনো মনস্টারকে দেখলে এমনি হয়। যাক তার কি হয়েছে সেটা বড়রা বুঝে নিয়ো।
.
–কেউ রাজি না পুরো মনস্টার দুনিয়ার সেনাকে নিয়ন্ত্রন করতে, কারন তাদের মনে ভয় আছে কোনো ভুল হলে এমনিতেই ডেভিল কিং তার জীবন নিয়ে নিবে।(এনা)
.
–তো তুমি হাত তুললে কেনো? ডেভিল কিং তোমাকে ভালোবাসে, এজন্য তোমাকে কিছু করবে না এজন্য?(আমি)
.
–না, একজন প্রিন্সেস হিসাবে আমার কর্তব্য আমার রাজ্যের মানুষের যখন আমার প্রয়োজন তখন আমি তাদের পাশে দাড়ায়। আর এখন তো তাদের উপর চারিদিক দিয়ে বিপদ। এক দিকে এজগার্ডের নতুন রাজা লোকি আর এক দিকে নতুন ডেভিল কিং। এখন এসবের ভয়ে আমার বাবা রাজা কোয়াডার্ট, আমার ভাই প্রিন্স এলেক্স এরা কেউ ভয়ে কিছু বলতে পারছে না। সেখানে একজন প্রিন্সেস হয়ে আমাকেই কিছু বলতে হবে।(এনা)
.
–বাহ বাহ, আমি খুব ইমপ্রেসড হয়েছি প্রিন্সেস এনা। যাইহোক আপনাকে কি রানী হিসাবে মানতে এখানে কারে সমস্যা আছে? যদি সমস্যা থাকে তাহলেও সমস্যা নাই। প্রিন্সেস এনা আমি ডেভিল কিং জ্যাকসন সাটান (সাটান ডেভিল কিং দের উপাধী নাম একটা) তোমাকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য এই পুরো মনস্টার দুনিয়ার রানী বানাচ্ছি। এখন থেকে পুরো পাঁচ রাজ্যের যত মনস্টার আছে আপনি তাদের থেকে যারা লড়তে পারে তাদের পুরো একটা সৈন্য একজন জেনারেল সহ আমাকে দিবেন।(আমি)
.
–একজন জেনারেল?(এনা)
.
–হ্যা আমার পঞ্চম জেনারেল হ্যারি অদ্রি আর আপনার দেওয়া একটা জেনারেল দুজন মিলে পুরো মনস্টার দুনিয়ার সেনা নিয়ন্ত্রন করবে।(আমি)
.
–হ্যা ঠিক আছে। আমরা আপনার সব শর্তে রাজি আপাতোতো। কিন্তু আমাদেরও কিছু শর্ত আছে।(এনা)
.
–কি সেগুলো?(আমি)
.
–প্রথমত আপনি আন্ডারওয়ার্ল্ড শাসন করবেন। আমাদের সাথে কোনো রকম যুদ্ধে আসবেন না। দ্বিতীয়ত আপনার আন্ডারওয়ার্ল্ড এর সাথে আমাদের রাজ্যের বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক থাকবে। যখন যার যেটা প্রয়োজন হবে সেটা দিয়ে একে অপরকে সাহায্য করবো, তৃতীয়ত আপনার আন্ডারওয়ার্ল্ডে প্রবেশের ব্যবস্থা সবার জন্য করে দিতে হবে।(এনা)
.
–ঠিক আছে আমি আপনার এই শর্তে রাজি।(আমি)
.
–যদি কখনো আপনি আপনার শর্ত ভেঙে ভেলেন?(এনা)
.
–সেটা হবে না কখনো। আমার মধ্যে শুধু ডেভিলের রক্ত নেই। এন্জেলের রক্তও বয়ছে। আর এন্জেলরা কখনো মিথ্যা কথা বলে না।(আমি)
.
–তাহলে আমরা যুদ্ধের জন্য আপনার সহায়তা করতে রাজি। কিন্তু আমাদের সেনাদের নিজের সেনা ভাবতে পারবেন না? পরিস্থিতি খারাপ হলে আমরা নিজেরাই নিজের ইচ্ছায় ফেরত আসতে পারবো।(এনা)
.
–এটা কিভাবে হয়? যদি আপনারা নিজ ইচ্ছায় যুদ্ধের আগেই ফেরত চলে যান তখন?(আমি)
.
–আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি সেটা হবে না। বরং আমরা যুদ্ধের ময়দানে আপনাদের পাশেই বন্ধু হয়ে লড়বো।(এনা)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু তারপরও হ্যারি আপনাদের সেনার প্রথম জেনারেল থাকবে। মেনে নিন আর নিন সেটা।(আমি)
.
–ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের জেনারেলের আদেশ ছাড়া আপনার জেনারেল কোনো আদেশই দিতে পারবে না।(এনা)
.
–ঠিক আছে।(আমি)
।।।
।।।
আমি কিছুই বলতে পারলাম না। এমনিতেও এনা যখন সিরিয়াস হয়ে কথা বলছিলো আমি শুধু তাকিয়েই ছিলাম। ওর কোনো কথায় না বলার ক্ষমতা পেলাম না৷ এক হিসাবে ভাবতে গেলে একজন স্ত্রী তার স্বামীকে যেভাবে শাসন করে ঠিক তেমনই মনে হচ্ছিলো। আমি তো মনে মনে ভেবে নিয়েছিলাম, এই সুযোগে আমি অনেকগুলো শর্ত তাদের উপরে দিয়ে দিবো যাতে তাদের রাজারা এমনিতেই পুরো রাজ্য আমাকে দিয়ে দেয়। হ্যা অবশ্য এতোক্ষনের নেগেটিভ চিন্তা আমার এটাই ছিলো। কিন্তু এনা যে রানী হওয়ার জন্য রাজি হবে সেটা জানে কে? এখানে এলেক্স কিংবা কহিলকে আমি ভেবে নিয়েছিলাম। পুরো নেগেটিভ চিন্তা এখন শেষ হয়ে গেলো। যেহেতু আমি এখন এনাকে নিয়ে ভাবতে ছিলাম। জানি না হঠাৎ আমার এন্জেল সাইড জ্বলতে লাগলো, ডান সাইড দিয়ে এবার সাদা ধোয়া বের হতে লাগলো। এই ধোয়াটা একদমই কালোর থেকে বিপরীত। এটাই আশেপাশের সবাই এবার আরাম অনুভব করতে লাগলো।
.
–তো আমি জানি না আপনারা এখন কি করবেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে আপনাদের কাছে জেনারেল হ্যারি অদ্রি আসবে, তখনি বুঝে নিবেন যুদ্ধে যেতে হবে। তাই সৈন্য রেডি রাখুন।(আমি)
।।।।
।।।।
আমি আর কিছু বললাম না। এনাকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম আন্ডারওয়ার্ল্ডে। কিন্তু এখন যা হলো তাতে বুঝতে পারলাম এনার ঘাড়ে অনেক বড় কর্তব্য চলে গেছে। আর আমি এনার সাথে এখন কথা বললেও ও কথা বলবে না আমার সাথে। তাই আমি সময় নষ্ট করলাম না। এমনিও জানি এনা আমার উপরে রেগে আছে। ওর রাগ ভাঙাতে হবে এই যুদ্ধ শেষ হলে। আপাতোতো আমি টেলিপোর্টেশন স্পেল ব্যবহার করে আমার সিংহাসনের রুমে চলে আসলাম। আমার চার জেনারেলের মধ্যে কর্ডিজ আর লুইস দাড়িয়ে আছে। মূলত তাদেরকে আমি আমাকে আলফাইমে নিয়ে যেতে বলেছি কারন টেলিপোর্টেশন স্পেল কাজ করে শুধু যে জায়গায় আমি গিয়েছি। আলফাইমে কখনো আমি যায় নি। তাই টেলিপোর্টেশন স্পেলের মাধ্যমে আমি সেখানে কখনো যেতে পারবো না। কিন্তু আমার চার জেনারেল আগের ডেভিল কিং এর জেনারেল থাকার ফলে তারা দশ দুনিয়ার মধ্যে নয় দুনিয়ায় ঘুরেছে। তবে তারা একবার আমাকে সেখানে নিয়ে গেলে তারপর থেকে আমি একাই যেতে পারবো সেখানে।
।।।
।।।
লুইস ব্যবহার করলো টেলিপোর্টেশন স্পেল। দেখতে দেখতেই আমরা আলফাইম এর প্রাসাদের একটা বিশাল বেলকনিতে এসে দাড়ালাম। কিন্তু সমস্যা হলো চারিদিক থেকে আমাদেরকে সৈনিক ঘিরে ধরলো৷ তাদের হাতে শুধু ধনুক আর তীর। ধনুক আর তীর গুলো ম্যাজিক দিয়ে বানানো তাই সেগুলো সব সময় বহন করতে হয় না। আমি শুনেছি এল্ফসরা ম্যাজিকের দিক দিয়ে মনস্টারদের থেকে অনেক উন্নত। তারা সব ধরনের স্পেলই ব্যবহার করতে সক্ষম। কিন্তু সমস্যা হলো তাদের রাজা সব স্পেল ব্যবহার করতে দেয় না তাদের। যাইহোক আমি এতোক্ষন এল্ফসদের নিয়ে যা ভাবছিলাম তারা ঠিক তেমনি। তাদের শরীর দেখতে মানুষের শরীরের মতো মনে হলেও পার্থক্য শুধু তাদের কানে। তাদের কান অনেকটা বড়। যদি তাদের কান ঢেকে রাখা হয় তাহলে তাদের মানুষই মনে হবে। তাদের শারিরীক ক্ষমতা তেমন নেই। তারা ম্যাজিকাল শক্তির সাহায্যেই শক্তিশালী। যাইহোক আমাদের এখানে টেলিপোর্ট হওয়ার ফলে সৈনিকগুলো তীরের নিশানায় রাখলো না শুধু আমাদের। বরং তাদের তীরগুলো আমাদের দিকে ছুরতেও লাগলো।
.
–মাই কিং, আপনার এদের জন্য কিছু করতে হবে না। বরং আমাদের দেখতে দিন ব্যাপারটা।(কর্ডিজ)
।।।
।।।
লুইস আর কর্ডিজ তাদের দশটা ডানা খুলে ফেললো। ডেভিল জেনারেলদেরও দশ ডানা হয়। তবে তাদের ডানা দিয়ে কোনো রকম কালো ছায়া বের হয় না। বরং সেগুলো অনেকটা কালো কবুতর এর ডানার মতো মনে হয়। লুইস আর কর্ডিজ দুজনের ডানার ঝাপটায় সব গুলো তীর দূরে গিয়ে পরলো। আর সেই সাথে সব সৈনিকগুলোও বাতাসের ঝাপটায় দূরে গিয়ে পরলো। অবস্থা ভালো না থাকায় এবার তিনজন এল্ফস আমাদের সামনে টেলিপোর্ট হয়ে আসলো। দেখে অনেকটা রাজকীয় রাজকীয় ভাব মনে হচ্ছে।
.
–ডেভিল কিং, আমি অনেক দুঃখিত আমার সৈন্য আপনাকে চিনতে পারে নি। আমি তাদের হয়ে আপনার কাছে মাফ চাচ্ছি।(মাঝের এল্ফস)
.
–আপনি কে?(আমি)
.
–আমার নাম কুয়ান। আমি এই আলফাইমের রয়েল মিনিস্টার। আপনাকে আমি স্বাগতম জানাচ্ছি আলফাইমে।(কুয়ান)
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
অপেক্ষা করুন পরবর্তী পার্টের জন্য। আজকে আরেকটু বড় করতাম, কিন্তু আব্বু ধমকাচ্ছে। তাই এই পর্যন্তই। কেমন হলো জানাবেন।