ভ্যাম্পায়ার_কুইন# #সিজন_2# পর্বঃ১০

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ১০
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
–জ্যাক তোমার কি মনে হচ্ছে?(এলি)
.
–আমার মনে অনেক ভাবনা আসছে আপাতোতো। কিন্তু জেনারেলের চিন্তার সাথে আমার চিন্তা কখনো মিলবে না। এজন্য আমি সঠিক বলতে পারছি না।(আমি)
.
–আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। যদি ছুটিই দিতো আমাদের তাহলে নিজেদের বাসাতেই যেতে দিতো, কিন্তু ক্যাপিটাল শহরে কেনো থাকতে হবে?(লুসি)
.
–যায় হোক না কেনো? আমার ক্যাপিটালে যাওয়ার অনেক ইচ্ছা ছিলো ছোট থেকে। আর কালকে সেটা পূরন হচ্ছে।(হ্যারি)
.
–আমাদের উত্তেজিত হলে হবে না। আমার মনে হচ্ছে জেনারেল আমাদের একটা কঠিন মিশনে ফেলছে, যেটা আমাদের নিজেদেরই বের করে নিতে হবে। আপাতেতো আমি বেশী কিছু বলতে পারছি না। তবে কালকে কিছুটা ধারনা পাবো হয়তো।(আমি)
.
–জ্যাক তুমি ছোট ছোট বিষয়ে একটু বেশীই চিন্তা করো। বাদ দাও চিন্তা। আমরা এই দ্বীপ এখনো ঘুরে দেখতে পারি নি, চলো ঘুরি একসাথে।(হ্যারি)
.
–হ্যা এটা ভালো চিন্তা। আর এমনিতেও আমাদের এখনো বেশী বয়স হয় নাই বেশী চলে চিন্তা করার। এই বয়সে একটু ঘুরাফেরা না করলে হয়?(এলি)
.
–তোমরা দাড়াও আমি আসছি।(আমি)
.
–আবার কোথায় যাচ্ছো তুমি?(হ্যারি)
.
–যাবো আর আসবো।(আমি)
.
–জ্যাক।(হ্যারি)
।।।
।।।
আমি দৌড় দিয়ে আমার রুমের মধ্যে পৌছে গেলাম। আমার ছোট ব্যাগটা আমি কাধে নিলাম। ব্যাগের মধ্যে তিনটা বই রয়েছে শুধু। ব্যাগটা নেওয়ার কারন হলো আমি ভিরুদাকে বহন করতে চাই। হাতে করে নেওয়ার থেকে ব্যাগের মধ্যে ঝুলিয়ে রাখলে ভালো হবে। আমি ভিরুদাকে ব্যাগের মধ্যে রেখে আবার দৌড়ে চলে আসলাম বাকি চারজনের কাছে।
.
–তলোয়ার আনতে গিয়েছিলে?(এলি)
.
–হ্যা।এটা ভিরুদা।(আমি)
.
–নামটা অনেক আজব।(সবাই নাম শুনে হাসতে লাগলো)
.
–দেখতে পারি তোমার তলোয়ারটা?(এলি)
.
–হ্যা অবশ্যই।(আমি)
।।।
।।।
আমি তলোয়ারটা খুলে এলির হাতে দিতে গেলাম। এলি হাতল ধরার পর আমি ছেড়ে দিলাম। আর সাথে সাথেই ভিরুদা মাটিতে পরে গেলো। এলি হাতল ধরে উঠানোর চেষ্টা করেও পারছে না।
.
–এটা আমার দ্বারা উঠবে না।(এলি)
.
–তোমার শক্তি নাই এলি এজন্য উঠাতে পারছো না। দেখো কিভাবে উঠাতে হয়।(হ্যারি)

।।।
হ্যারিও চেষ্টা করলো উঠানোর কিন্তু একটুও নারাতে পারছে না। লুসি এবং লুসানাও চেষ্টা করেছে কিন্তু কেউ সামান্য পরিমান নারাতেও পারে নি। আমি ভিরুদার হাতল ধরে উঠিয়ে ফেললাম।
.
–আমি এ পর্যন্ত অনেক তলোয়ার সম্পর্কে পড়েছি, কিন্তু এমন কোনো তলোয়ার আমার জ্ঞানের বাইরে একদম।(এলি)
.
–এটা অনেক স্পেশাল তলোয়ার মনে হচ্ছে।(লুসি)
.
–একদম আনকমন একটা তলোয়ার, জ্যাক ছাড়া কেউ এটাকে উঠাতে পারে না। ওয়াও, আমারও এমন একটা তলোয়ার লাগবে।(হ্যারি)
.
–আমি বুঝতে পারছি না, এটা আমরা উঠাতে পারছি না, কিন্তু জ্যাক খুব সহজেই উঠাচ্ছে।(লুসি)
.
–আমার মনে হচ্ছে এই তলোয়ার প্রথম যে স্পর্শ করবে শুধু সেই এটা উঠাতে পারবে। এবং সে মারা যাবার পর, আবার যে প্রথম এটা স্পর্শ করবে সেই উঠাতে পারবে।(এলি)
.
–সেসব কথা বাদ দাও। এলি আমি এটা এনেছি তোমার থেকে তলোয়ার এর ব্যাসিক শিখতে। আমি এটা দিয়ে কয়েকটা স্লাইস দিলেই আমার সব ম্যাজিক পাওয়ার শেষ হয়ে যায়। এর জন্য প্রথমটার পরে আর আমার জোর হয় না।(আমি)
.
–ও আচ্ছা। চলো আমার সাথে যেখানে ঠিক মতো শিখতে পারবে।(এলি)
.
–কোথায়?(আমি)
.
–তোমরা যাও তাহলে যেহেতু তলোয়ার চালানো শিখবে শেখানে আমাদের কিছু করার নেই। বরং আমরা তিনজন আমাদের স্পেলের প্রাকটিস করি এখানে। তোমাদের হলে এখানে এসো তারপর আমরা একসাথে ঘুরতে যাবো।(হ্যারি)
.
–ওকে।(আমি)
।।।
।।।
আমি এলিহার সাথে হাটতে হাটতে বনের পাশে চলে আসলাম। এলি এবার ওর কোমড়ে থাকা তলোয়ার বের করলো এবং সামনে থাকা দুটো ভেদ গাছের(সরু এক ধরনের গাছ যার কাঠ অনেক শক্ত হয়, এটার ফল অনেক বিষাক্ত হয়) দিকে একটা স্লাইস দিলো অনেকটা দূর থেকেই। ছোট একটা তরঙ্গ গেলো সামনের দিকে। এবং সেটা ভেদ গাছ দুটোর গায়ে লাগলো। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম কেটে যাবে। কিন্তু না কেটে কিছুটা ক্ষত হয়েছে শুধু গাছে। এরকম আরো বিশটা শক্তিশালী স্লাইস দিলে হয়তো কেটে যাবে।
.
–ওয়াও।(আমি)
.
–এইযে দেখতে পেলে এটা আমার এয়ার স্লাইস স্পেল। আমি স্পেলের দিক দিয়ে অনেকটা দুর্বল। এই একটা স্পেল ব্যবহার করলে আমি আর কোনো স্পেলই ব্যবহার করতে পারি না।(এলি)
.
–কেনো? আমি তো শুনেছি ভ্যাম্পায়াররা অনেক শক্তিশালী হয় ম্যাজিক পাওয়ারের দিক দিয়ে।(আমি)
.
–হ্যা সেটা হয়। কারন সব ভ্যাম্পায়ারই জন্মের পর কারো না কারো রক্ত পান করে। কিন্তু আমার পরিবার রক্ত খেতে পছন্দ করে না। এর জন্য আমরা পর্যাপ্ত পরিমান ম্যাজিক পাওয়া জোগাড় করতে পারি না। যেহেতু একটার বেশী স্পেল আমার দ্বারা হয় না। তাই আমি কাছের লড়াই বেছে নিয়েছি। আর সেটার জন্য অনেক ট্রেনিং এর প্রয়োজন হয়। তলোয়ার দিয়ে স্লাইস দিলে তলোয়ারের ক্ষমতা অনুযায়ী প্রতিটা স্লাইসে তলোয়ার শরীর থেকে ম্যাজিক পাওয়ার শুষে নিবে আর সেটা শক্তিশালী স্লাইসে পরিনত করবে। তোমার তলোয়ারের ক্ষমতা বেশী বলে কয়েকটা স্লাইসে তোমার পুরো ম্যাজিক পাওয়ার শেষ হয়ে যায়। আর তুমি যদি সেটা নিয়ন্ত্রন করতে পারো তাহলে এই গাছগুলো কেনো স্পেল ছাড়াই স্লাইস দিয়ে কেটে ফেলতে পারবে।(এলি)
.
–সত্যি?(আমি)
.
–হ্যা। নিজের ম্যাজিক পাওয়ার নিয়ন্ত্রন করাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন। সেটার জন্য তলোয়ার নিয়ে দাড়ানোর যে স্টাইল সেটা তোমার চেন্জ করতে হবে। প্রথমত যখন লম্বা কোনো তলোয়ার হাতে নিলে বাম পায়ে নিজের শরীরের সমস্ত ভর রাখতে হয়। তারপর যখন একটা স্লাইস মারতে যাবে তখন শরীরের সমস্ত ভর ডান পায়ে নিয়ে স্লাইস মারতে হয়। এতে করে যেকোনো তলোয়ারই স্বাভাবিক ভাবে নিয়ন্ত্রন করা যায়। এবং প্রতিটা স্লাইস আরো শক্তিশালী এবং দ্রুত হয়।(এলি)
.
–ও। চেষ্টা করে দেখি।(আমি)
।।।
।।।
আমি আমার ডান পা আগিয়ে দিয়ে দারালাম যেভাবে এলি দাড়িয়েছিলো। তারপর আমার সকল ভর বাম পায়ের মধ্যে রাখলাম। এবং ভিরুদাকে দিয়ে একটা স্লাইস দেওয়ার আগেই সমস্ত ভর ডান পায়ে নিয়ে একটা স্লাইস দিলাম। আসলেই এলির কথা মতো আগের থেকে অনেক দ্রুত এবং শক্তিশালী হলো এটা। আমি এভাবে একসাথে অনেকগুলো দিতে লাগলাম। এখন আগের থেকে আমার ম্যাজিক পাওয়ার কম যাচ্ছে তলোয়ারের মাঝে। কিন্তু বিশ ত্রিশটা স্লাইসের পর আর আমার শরীর কুলাতে পারলো না। শরীরের ম্যাজিক পাওয়ার শেষ হয়ে গেলো আমার। বুঝতে পারলাম অনেক ট্রেনিং এর প্রয়োজন আমার। যত বেশী ট্রেনিং করবো ততই শক্তিশালী হয়ে যাবে তলোয়ার নিয়ে।
.
–একটু সময় লাগবে তোমার। আমার জানা মতে তলোয়ার চালানোর এটাই সবচেয়ে কমন টেকনিক যেটা আমার পূর্ববর্তী পরিবারের সদস্যরা অতীত থেকে শিখে আসছে। আমিও প্রথম যখন তলোয়ার হাতে নি তখন আমি দুটোর বেশী স্লাইস দিতে পারতাম না। কিন্তু এখন প্রতিরাতেই আমি এক হাজার স্লাইস করে প্রাকটিস করি।(এলি)
.
–ওয়াও। এক হাজার।(আমি)
.
–হ্যা। কিছু সাধারন টেকনিক আছে সেগুলোর বই আছে আমার কাছে। তুমি চাইলে আমি শিখাতে পারি।(এলি)
.
–বই আছে?(আমি)
.
–হ্যা। সাথেই রাখি সবসময় আমি এটা।(এলি)
।।।
।।।
আমি এলির থেকে বইটা নিয়ে পড়তে লাগলাম। একটা গাছের নিচে দুজনে বসে রইলাম। অনেকটা সময় কাটছে, কিন্তু আমি বইতে থাকা সবগুলো টেকনিকই পরে ফেললাম। আমি এলির সময় বেশী নষ্ট করতে চাই না। আমি জানি ও ওর সমস্ত চেষ্টা করছে তলোয়ার নিয়ে শক্তিশালী হওয়ার। তাই ওর উপরে আমাকে শিখানোর চাপ দিতে চাই না। আর এখানে আছিই একদিন। এরপর দুবছরের জন্য কে কোথায় থাকবো সেটা আমার সন্দেহ। হয়তো আলাদা জায়গায় আমাদের থাকতে হবে। যাইহোক এলিহার বইতে প্রায় উনিশটি ছোট ছোট টেকনিক রয়েছে তলোয়ার ব্যবহারের। আমি সেগুলো একবার করে পড়ে নিলাম। আর একবার পড়াতেই আমার মুখস্ত হয়ে গেলো। আমি জানি না হয়তো এটা আমার কোনো ক্ষমতা হবে। আমি কোনো বই একবার পড়লেই সেটা আমার মুখস্ত হয়ে যায়। জ্ঞান বারানোট ক্ষেত্রে এটা অনেক কাজের একটা জিনিস। কিছুক্ষন পর পড়া শেষ করে।
.
–নাও শেষ। অনেকক্ষন হলো আমরা এখানে একা চলো বাকিদের কাছে যাওয়া যাক। এতোক্ষনে আমার ম্যাজিক পাওয়ারও অনেকটা হয়ে গেছে।(আমি)
.
–একবার করে পড়াতেই হবে তোমার?(এলি)
.
–কোনো বই একবার পড়লে সেটা আমার সবসময় মনে থাকে। তাই কোনো সমস্যা হবে না আমার। পরে সময় মতো টেকনিকগুলো শিখে নিবো।(আমি)
.
–ঠিক আছে।(এলি)
।।।
।।।
আমরা দুজনই হাটতে হাটতে চলে আসলাম হ্যারি, লুসি, লুসানার কাছে। ওরাও ট্রেনিং করছে। হ্যারি ওর ছোট ছোট স্পেল গুলো ছুড়ে মারছে লুসি এবং লুসানার দিকে এক এক করে। আর লুসি এবং লুসানা ঢালের ব্যবহার করে সেটা আটকে দিচ্ছে।
.
–অনেক কড়া ট্রেনিং হচ্ছে মনে হয়।(আমি)
.
–হ্যা। তোমাদের তলোয়ার ট্রেনিং শেষ নাকি?(হ্যারি)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–তাহলে চলো ঘুরে দেখি দ্বীপটা।(হ্যারি)
।।।
।।।
আমরা পাঁচজন ঘুরতে লাগলাম পুরো দ্বীপ। রাতের দিকে আমরা ফিরলাম আমাদের রুমের মধ্যে। সারাদিন কিছু খাওয়া হয় নি। হ্যারি কিছুটা খেয়েই ঘুমিয়ে গেলো। আর আমি খেয়ে ভিরুদাকে নিয়ে বাইরে চলে আসলাম। আমি এলির দেখানো মতো প্রাকটিস করতে লাগলাম। আমাকে আমার স্লাইসের সংখ্যা বারাতে হবে, এবং সেটা অনেক দ্রুত করতে হবে। শুধু তাই নয় আমার নিজের চলাচলও দ্রুত করতে হবে। সব মিলিয়ে অনেক কড়া ট্রেনিং করতে হবে। আমি এলির বই থেকে অনেকটা তথ্য পেয়েছি কিভাবে নিজের এবংতলোয়ার দ্রুত করা যায়। কিন্তু সময় লাগবে সেটার জন্য। এখন থেকেই ট্রেনিং করলে কয়েক বছরের ভিতরে অনেক শক্তিশালী হয়ে যেতে পারবো।
।।।
।।।
ট্রেনিং শেষ করে আমিও রুমের মধ্যে চলে আসলাম। তলোয়ার চালানো যে এতোটা কষ্ট হবে সেটা আগে জানতাম না। আগে তো ভাবতাম শুধু এদিক সেদিক করলেই হয়, কিন্তু প্রতিটা স্লাইস এবং পদক্ষেপ একদম ঠিক না হলে শরীরের ম্যাজিক পাওয়ার সব তলোয়ারই চুষে নিবে। অবশ্য সাধারন তলোয়ারে এরকম হয় না। এখন সবারই কাছে ম্যাজিকাল তলোয়ার রয়েছে। আর ম্যাজিকাল তলোয়ার ব্যবহার কারীর ম্যাজিকাল পাওয়ারের দ্বারাই চলে।
।।।
।।।
যাইহোক আমি রুমে এসে ভিরুদাকে ড্রেস পরিয়ে দিলাম। এরপর আমি ঘুমিয়ে পরলাম। সকালে যখন ঘুম ভাঙলো তখন আমি নিজেকে একটা ম্যাজিকাল যানের ভিতরে আবিষ্কার করলাম। বুঝতে পারছি না এখানে কিভাবে আসছি। আমার সামনেই একজন অফিসার বসে আছেন। একটা ব্যাচ ওয়ালা অফিসার তিনি। মানে সবচেয়ে নিচের পদের অফিসার। আমি তাকে জিজ্ঞেস করতে লাগলাম।
.
–স্যার আমি কোথায়? এখানে আসলাম কিভাবে?(আমি)
.
–তাহলে এতোক্ষন পর ঘুম ভাঙলো তোমার। আমি দুঃখিত তোমার ঘুম না ভাঙাতে পারায় আমি তোমাকে এবং তোমার জিনিসপত্রকে সোজা এখানে টেলিপোর্ট করে নিয়ে এসেছি।(অফিসার)
.
–আমার ব্যাগ স্যার?(আমি)
.
–আমি ব্যাগটা উঠাতে পারি নি। তাই সেটাকে ধরে টেলিপোর্টেশন গেইটের মাধ্যমে আমি এখানে নিয়ে এসেছি। এই যে পাশেই রয়েছে।(অফিসার)
.
–আমরা কোথায় এখন স্যার?(আমি)
.
–আমরা ২ নং শহরে আছি এখন। একটু পরই রয়েল ক্যাপিটালে পৌছে যাবো।(অফিসার)
.
–ওওওও।(আমি)
।।।
।।।
আমি আমার ব্যাগ চেক করে নিলাম। জামা কাপড়ের ব্যবস্থা আমাদের মিলিটারি থেকেই হতো, তাই আমাকে জামাকাপড় বহন করতে হতো না। ব্যাগের মধ্যে আপাতোতো তিনটা বই এবং ভিরুদা রয়েছে।
.
–স্যার আমার বন্ধুরা কোথায়?(আমি)
.
–তাদেরকে নেওয়ার জন্য অন্য অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এক একজনের জন্য আলাদা অফিসার পাঠিয়েছেন জেনারেল।(অফিসার)
.
–রয়েল ক্যাপিটালে কোথায় যাচ্ছি আমরা এখন?(আমি)
.
–রয়েল প্যালেসে।(অফিসার)
।।।।
।।।।
আমি আর অফিসারকে কিছু বললাম না। কারন আমি বাইরের সুন্দর দৃশ্য দেখতে পাচ্ছি এই যান থেকে। অনেক আশ্চর্যজনক একটা যান এটা। দেওয়ালের বাইরেও দেখা যাচ্ছে ভিতর থেকে। মনে হচ্ছে কাঁচের তৈরী এটা। কিন্তু বাইরের কোনো আলো আবার ভিতরে আসছে না। তাই এটাকে কাঁচও বলা যাচ্ছে না। নতুন কোনো বস্তু হবে হয়তো। কিছুক্ষনের ভিতরে আমরা রয়েল ক্যাপিটালে পৌছে গেলাম। যেটা আশা করেছিলাম সেরকমই। বিশাল একটা শহর। বড় তো অবশ্যই হবে কারন রাজ্যের প্রধান শহর এটাই। এখানেই রাজ্যের রাজা এবং তার পরিবার থাকে। তাছাড়া বাকি সকল শহরের লোকেরা এখানে ব্যবসা করতে আসে। এ ছাড়াও এখানের জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশী। এখানে এই রাজ্যের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিরাই বসবাস করে। গরীবরা বেশীর ভাগ ধনীদের কাজকর্ম করেই জীবিকা নির্বাহ করে। আমাদের যানটা অনেক স্পিডে যাচ্ছে যার জন্য আমি ঠিক মতো কিছু লক্ষ করতে পারছি না। তবে এক ঝাপসায় যা দেখছি তাতেই আমি মুগ্ধ হচ্ছি। দূরে বিশাল প্যালেস দেখতে পাচ্ছি যার দিকেই আমাদের যান চলে যাচ্ছে। আমি খুব উত্তেজিত কি থেকে কি হবে সেটা নিয়ে। এই প্রথম আমার নিজ রাজ্যের প্যালেসে যাবো তার জন্য আমি অনেক নার্ভাসও হয়ে গেলাম।
।।।
।।।
দেখতে দেখতে আমাদের ম্যাজিকাল যানটা প্যালেসের সামনে থামলো। বাইরে বের হয়ে অবাক হলাম, কারন যানটার বাইরে থেকে ভিতরে দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু ভিতর থেকে বাইরে একদম স্পষ্ট দেখা যায়। হয়তো প্যালেসের লোকদের জন্য এসব যান ব্যবহৃত হয়। অফিসার তাকে ফলো করতে বললেন। আমিও তার পিছন পিছন আশেপাশের সব কিছু দেখতে দেখতে হাটতে লাগলাম। প্যালেসটা বিশাল বড়। একদম নিচ থেকে দেখে মনে হচ্ছে এটার মাথা একদম আকাশ ছুয়ে ফেলছে। আমাকে প্যালেসের ভিতরে নিলো না অফিসার। বরং পাশ দিয়ে পিছনের দিকে নিয়ে গেলো। পিছনের দিকে বিশাল বড় মাঠ রয়েছে। আর প্যালেসের বিভিন্ন জায়গায় হাজার হাজার গার্ড ম্যাজিকাল বন্ধুক নিয়ে দাড়িয়ে আছে। ম্যাজিকাল বন্ধুক শুধু রয়েল গার্ডদের জন্য প্রস্তুত হয়। এটা একদম আধুনিক একধরনের অস্ত্র যেটার মধ্য থেকে ছোট ছোট পাথরের টুকরার মতো একধরনের শক্ত পদার্থ বের হয়, যেটা অনেক ভয়ঙ্কর হয়। মূলত একজনের ম্যাজিক পাওয়ার যত হবে তার বন্ধুক থেকে তত বেশী গুলি বের হবে৷ এরকম অস্ত্র সামনে দেখতে পাওয়া অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার। ভবিষ্যতে তীর, তলোয়ার হয়তো সব উঠে এরকম অস্ত্রেরই যুদ্ধ হবে।
।।।
।।।
আমাকে একটা বেঞ্চের উপরে বসতে বলে চলে গেলো আমার সাথের অফিসার। বুঝতে পারছি না এখানে আনলো কিসের জন্য। আমাকে কি প্যালেসে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নাকি সেটা বুঝতে পারছি না। আমি আমার আমার ব্যাগটা কাধ থেকে কোলে নিয়ে বসে পরলাম। আসে পাশে তাকিয়ে আছি সব গার্ড আমার দিকে তাকিয়ে আছে৷ এটা দেখে আমি আরো বেশী নার্ভাস হয়ে গেলাম। ঢোক গিলতে লাগলাম। ঘাম বের হতে লাগলো শরীর থেকে। হঠাৎ কোথা থেকে একটা মেয়ে এসে বলতে লাগলো,
.
–কে তুমি? তোমাকে তো এখানে কোনোদিন দেখি নি?(আমার সমান একটা মেয়ে)
.
–আমার নাম জ্যাক। আমাকে এখানে একজন অফিসার এনেছেন।(আমি ভয়ে উত্তর দিলাম)
।।।
।।।
হঠাৎ দুজন ছেলে আসলো এবং আমার শরীরে লাথি দিয়ে আমাকে বেঞ্চ থেকে ফেলে দিয়ে বলতে লাগলো,
.
–সাহস হয় কিভাবে প্রিন্সেস এর সাথে এভাবে কথা বলতে?(দুজন ছেলের একজনকে চিনতে পারলাম সে হলো কহিল স্যার। আরেকজন কে চিন্তে পারলাম না)
.
–কহিল, আখিল পিছনে যাও। আমি কথা বলছি তো ওর সাথে।(মেয়েটা)
.
–জ্বী প্রিন্সেস।(দুজনই একসাথে বলে উঠলো)
।।।
।।।
আমি দুজনের লাথিতেই অনেক ব্যথা পেয়েছি। নিচে পরে আমার হাতে অনেকটা কেটে গেছে। মেয়েটা একটা হাত দিলো আমার দিকে। আমি সেটা ধরতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কহিল স্যার বললো সে প্রিন্সেস তাই সেটা ঠিক হবে না। আমি প্রথমে বুঝতে পারি নি যে এটা প্রিন্সেস হবে। নাহলে কখনো এতো ক্রাজুয়ালি কথা বলতাম না। আমি উঠে আমার ব্যাগটা কাধে দিয়ে হাটু গেড়ে দিয়ে সম্মান জানালাম। রাজ্যের এটাই নিয়ম। রাজা এবং তার পরিবারকে এভাবেই সম্মান জানাতে হবে।
.
–তুমি একটু আগে বললে তোমার নাম জ্যাক তাই না?(প্রিন্সেস)
.
–জ্বী প্রিন্সেস। আমি অনেক দুঃখিত আমি আপনাকে চিনতে পারি নি। এজন্য আমি ঔভাবে কথা বলেছি আপনার সাথে।(আমি)
.
–কোনো সমস্যা নেই। তাহলে তুমি জ্যাক। ঠিক আছে দেখা হবে আবার জ্যাক।(প্রিন্সেস)
।।।
।।।
প্রিন্সেস চলে গেলো। তার সাথে আখিলও পিছন পিছন যেতে লাগলো। আমি প্রিন্সেস এর একটা জিনিস বুঝলাম না। আমার নামটা শোনার পর তাকে অনেক খুশি মনে হলো। যাইহোক কহিল স্যার আমাকে বলতে লাগলো,
.
–ভাগ্য ভালো প্রিন্সেস এর জন্য বেঁচে গেলে আজকে। আমি কখনো দেখি নি প্রিন্সেস এভাবে কারো সাথে কথা বলতে। তারপরও সাবধান। আমি কিছু না করলেও প্রিন্সেস এলিনার রয়েল গার্ড এরপর তোমাকে প্রিন্সেস এর সাথে কথা বলা দেখলেই মেরে ফেলবে।(কহিল)
.
–ওকে স্যার।(আমি)
.
–কিন্তু তুমি এখানে কেনো? তোমাদের তো— বইলো না জেনারেল তোমাকে এখানে নিয়ে এসেছে।(কহিল)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–বাবার সাথে যে কি করবো আমি।(কহিল)
.
–সরি স্যার কিন্তু জেনারেল কি আপনার বাবা?(আমি)
.
–হ্যা। আচ্ছা বাদ দাও। এখানে অপেক্ষা করো জেনারেল একটু পরেই এখানে চলে আসবে।(কহিল)
.
–জ্বী স্যার।(আমি)
।।।।
।।।।
আমি বসে ছিলাম বেঞ্চের উপরে। কিন্তু কারো কোনো ঠিক ঠিকানা নাই। অনেকক্ষন পর প্রায় প্যালেস থেকে অনেকেই আমার দিকে আসছে। আমি জানি না কেনো সবাই এদিকে আসছে। কিন্তু ব্যাপারটা মোটেও আমার ভালো লাগছে না। সকলের সামনে আমি দশ স্টার ওয়ালা অফিসার দেখতে পেলাম। তারমানে তিনিই জেনারেল। আমি জানি না কেনো, কিন্তু তার চেহারা আমার চেনা চেনা মনে হচ্ছে। আমি সঠিক বলতে পারছি না, কিন্তু আমার হারানোর মেমোরীর মধ্যে তার কোনো না কোনো স্মৃতি অবশ্যই আছে। সকলে আমার কাছেই আসলো। সকলে বলতে রাজাও এখানে এসেছেন। আমি অবাক সোজা রাজাকে এখানে দেখে। আমি আমার হাটু গেড়ে সম্মান জানালাম।
.
–জ্যাকসন।(জেনারেল)
.
–জ্বী স্যার।(আমি)
.
–তোমাকে এখানে আনা হয়েছে কেনো সেটা জানো?(জেনারেল)
.
–না স্যার।(আমি)
.
–মূলত বলা হয়েছিলো তোমাদের পাঁচজনকে দুবছরের জন্য ক্যাপিটালে থাকতে হবে। সেটা কেনো বলা হয়েছিলো এটা কি জানো?(জেনারেল)
.
–না স্যার।(আমি)
.
–তোমার বাকি বন্ধুদের ক্যাপিটালের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের বাসায় পাঠানো হয়েছে। তারা চাইলে তাদের সারা জীবন কাটাতে পারবে। আর তোমার ক্ষেত্রে সেটা আলাদা। কারন ক্যাপিটালে তোমার নিজের পরিবার আছে।(জেনারেল)
.
–আমার পরিবার?(আমি)
.
–হ্যা তোমার পরিবার।(জেনারেল)
.
–সরি স্যার। কিন্তু আমার স্মৃতিতে এমন কোনো জিনিস সম্পর্কে কিছু নেই। একটু খুলে বলুন।(আমি)
.
–তোমার বাবার সম্পর্কে কিছু জানো?(জেনারেল)
.
–জানলেও আমার স্মৃতিশক্তি হারিয়ে গেছে, যার জন্য আমি মনে করতে পারছি তাকে।(আমি)
.
–তোমার ডান হাতের তালুতে একসাথে চারটা তিল আছে দেখো।(জেনারেল)
.
–হ্যা।(আমি)
।।।
।।।
জেনারেল আমার দিকে এগিয়ে এসে তার ডান হাত ও দেখালো আমাকে। তার ডান হাতেও আমার হাতের যেখানে চারটা তিল সেখানেই তিল আছে। আমি পুরো অবাক হয়ে গেলাম।
.
–তার মানে, আপনি আমার..(আমি)
.
–হ্যা।(বাবা)
।।।
।।।
আমি আর কিছু বললাম না। তিনি আমার বাবা এটা জেনে আমার কোনো কিছু ফিলও হলো না। আমাদের দুজনের চেহারায় অনেকটা মিল রয়েছে। কিন্তু বাবাকে কিভাবে ফিল করতে হয় এটা বুঝতে পারছি না। আর তাছাড়া তারা যা বলছে তাতে আমি এখনি বিশ্বাস করতে পারি না। তিনি আমার সত্যিকারের বাবা হলে অনেক আগেই আমার সাথে দেখা করতেন। আর দেখা করলে আমি তার চেহারা ঠিকই মনে রাখতাম। সব মিলিয়ে আমার মাথা ঘুরে যাচ্ছে। কিন্তু আমি কোনো রকম আর কথা বললাম না। আমাকে সোজা প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হলো। নিজের দিকে একটা বিশাল রুম আমাকে দেওয়া হলো। হঠাৎ একদিনের মধ্যে আমার ভাগ্য একদম খুলে গেলো।
।।।।।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
।।।।।
অপেক্ষা করুন পরবর্তী পার্টের জন্য। কেমন হলো জানাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here