ভ্যাম্পায়ার_কুইন# #সিজন_2# পর্বঃ১৩

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ১৩
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আজ দুটো মাস হয়েছে বৃদ্ধ লোকটা মারা গেছে। এই কয়েকবছরে তার জানা সকল টেকনিক এবং জানা সকল ম্যাজিক আমার সাথে শেয়ার করে৷ যদিও আমি ম্যাজিক স্পেল ব্যবহার করতে পারি না, তারপরও আমার স্পেল সম্পর্কে জানার অনেক আগ্রহ। তাই বৃদ্ধ লোকটা আমাকে তার জানা সকল স্পেলই আমর সাথে শেয়ার করেছে। আমি এখন অনেক স্পেল সম্পর্কে জানি, কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সেগুলো সেটাও জানি, কিন্তু ব্যবহার করতে পারি না আমি। কিসের জন্য ব্যবহার করতে পারি না এটাই আমি আজ পর্যন্ত বুঝতে পারি নি। কিন্তু বৃদ্ধ লুসেফারের কথা মতে, আমার শরীরের একটা অংশ হয়তো সিল(লক) করা রয়েছে যেটা আমার ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারবে। আমাকে শুধু সেই সিলটাকে ভাঙতে হবে, তাহলেই আমি ম্যাজিক স্পেল ব্যবহার করতে পারবো। কিন্তু সেটার জন্য আমাকে সিলটা খুজতে হবে, আর সেটা খোজার জন্য আমাকে এই জায়গা থেকে বের হতে হবে। আমি আগে চেষ্টা করি নি এখান থেকে বের হওয়ার। কারন আগে আমি বৃদ্ধ লোকটার থেকে ট্রেনিং এ ব্যস্ত ছিলাম। বৃদ্ধলোকটা মূলত একাধিক তলোয়ার দিয়ে লড়তে পছন্দ করে। সে একসাথে ছয়টা তলোয়ার নিয়ন্ত্রন করতে পারে। সেটা আমার জন্য একদম অসম্ভব। কিন্তু আমি মাত্র দুটো তলোয়ার চালানোই ভালো করে শিখেছি। বর্তমানে আমি এখান থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছি, আমি পুরাতন লোকদের লেখা দেখে কিছু জানার চেষ্টা করলাম। বৃদ্ধ লোকটা আমাকে তেমন বেশী কিছু বলে নি এই জায়গা সম্পর্কে। কিন্তু আমি আশা করছি কেউ তো এখান থেকে বেচে ফিরেছে, এক মাস যাবৎ আমি সবগুলো দেওয়ালের লেখা গুলো পড়ে কাটাচ্ছি। এর মাজে আজকে আমি একটা ক্লু পেয়েছি।
।।।।
।।।।
এই জায়গাটার নাম হলো রুইনস অফ ড্রিম। এক কথায় এটাকে ছোট স্বপ্নের দুনিয়া বলা হয় যেটা মাটির অনেক নিচে রয়েছে। এখানে আজ পর্যন্ত যে প্রবেশ করেছে তারা কখনো বের হতে পারে নি। যেহেতু তারা কেউই জানে না তারা এখানে কিভাবে প্রবেশ করেছে, তাই এখান থেকে বের হওয়ার কোনো রাস্তাই তারা খুজে পাই নি। বরং তারা এখানেই মারা গিয়েছে। তবে একজন লেখেছিলো সে এখানে একটা কিছু দেখেছিলো যেটা সে কখনো উঠাতে পারে নি। হয়তো সেটাই এখান থেকে বের হওয়ার রাস্তা। সরাসরি লেখা নেই সে কি দেখেছিলো, কিন্তু আমার মনে হয় সেটাই এখান থেকে বের হওয়ার রাস্তা। আমাকে শুধু খুজতে হবে সে জিনিসটা যেটা সে ধরতে পারে নি। আপাতোতো আমি এখানে যা দেখছি তাতে একটা জিনিসই রয়েছে যেটা আমার ধরার বাইরে। সেটা হলো উপরের পাথর, যেটা আলো দিচ্ছে। তাছাড়া যা রয়েছে সবই ধরার মতো। তাছাড়া আমি দেওয়ালের একদম উপরেও কোনো কিছু দেখছি না যে আমার ধরার বাইরে। এদিকে আমার মাথা ঘুরছে কি করবো এটা ভেবে। তাই আমি শান্ত হতে পানিতে নেমে পরলাম। ছোট পুকুর হলেও পানি কতটা গভীর আমি আজ পর্যন্ত বুঝতে পারি নি। আমার মনে হচ্ছে এই পুরো জিনিসটা পানির উপরে ভাসছে। কারন আমি ডুব দেওয়ার পর নিচে শেষ দেখতে পাই না৷ কিন্তু যা মনে তাতে অনেক গভীর হবে। তখনি আমার লেখার কথা মনে পরে গেলো। সে লেখেছিলো জিনিসটা সে ধরতে পারে নি। আমার এখন মনে হচ্ছে সে পানির নিচের কথায় বলছে। জিনিসটা আসলেই অসম্ভব। পানির গভীরতা না যেনে নিচে যাওয়া পাগলামী। কেউই চেষ্টা করবে না এটা। পানির এট্রিবিউট যাদের আছে শুধু তারাই পানির নিচে স্পেলের মাধ্যমে যেতে পারে। কিন্তু একদম বেশী নিচে যাওয়া কারো জন্য সম্ভব নয়। কারন অনেক নিচে গেলে পানির চাপ অনেক বেড়ে যায়, আর তখন ম্যাজিক পাওয়ারও বেশী প্রয়োজন হয় স্পেল ঠিক রাখতে। আমি কি করবো বুঝতে পারছি না। কিন্তু এটা ছাড়া আমি কোনো সুযোগ দেখছি না। কিন্তু কিছু তো করতেই হবে। পানির নিচে ছাড়া অন্য কোনো জায়গা আমি দেখছি না। আর এটা চেষ্টা না করলে আমি চিরকাল এখানে বন্ধী থাকবো। আমি চাইনা সারাজীবন এখানেই থাকতে। তাই কিছু একটা করতে হবে। আমাকে যেকরেই হোক একদম পানির নিচে যেতে হবে। কিন্তু সেটা কিভাবে? আমি ভাবতে লাগলাম কি করা যায়। আমি আশে পাশে তেমন কিছুই দেখছি না। কিন্তু বৃদ্ধ লোকটা যেখানে মারা গেছে সেখানে আমি একটা বড় পাথর গেথে রেখেছি যাতে সেখানে আমার পা না পরে। আমার নজর সেই পাথরটার উপরে পরলো। আমি দৌড়ে গেলাম গাছ তিনটার কাছে। লুসেফারের বানানো ছয়টা কাঠের তলোয়ার এখানে অনেক কাজে দিলো। গাছ তিনটার গৌড়ায় আমি খুরতে লাগলাম। অনেকটা জড় পেলাম আমি। সেগুলো কেটে নিলাম। চিকন চিকন জড় গুলো একসাথে বেধে লম্বা এবং মোটা একধরনের দড়ি বানিয়ে ফেললাম। আমি পাথরটাকে দড়ি দিয়ে বেধে ফেললাম। এবং তলোয়ার ছয়টা আমি লুসেফার যেখানে মারা গিয়েছে সেখানে রেখে মাটিতে গেথে দিলাম। তারপর দড়ির আরেক অংশ আমি আমার ডান পায়ে বেধে দিলাম। এবার পাথরটাকে আমি উল্টিয়ে উল্টিয়ে পানির কাছে নিয়ে আসলাম। আমার একটাই চান্স এখান থেকে বেচে ফেরার। সেটা হলো যদি আমি পানির মধ্যে দম ঠিক রাখতে পারলে। আমি কোনোরকম ঢোক গিলে ফেললাম। এখন মৃত্যুতে আমার ভয় নাই, যা হওয়ার সেটা হবে। হয়তো বেঁচে ফিরবো নাহলে পানির নিচে মারা যাবো। কিন্তু আমি এখানে বৃদ্ধ লুসেফারের মতো এক থাকতে চাই না।
।।।
।।।
আমি পাথরটাকে ফেলে দিলাম পানিতে। এবং সেটা এতো স্পিডে পানির নিচে পরছিলো যে আমি আমার দম হারিয়ে ফেলতে লাগলাম। পাথর শুধু পরছেই নিচে। পানি আমার চোখে লাগায় আমি দেখতে পাচ্ছি না কিছুই। আর পানির এতো নিচে আলো না থাকায় আমার দেখতেও অনেক সমস্যা হচ্ছে। আমার দম রাখতে অনেক সমস্যা হচ্ছে, কিন্তু তারপরও আমি আরো নিচে যাচ্ছি। হঠাৎ আমার নিচে পরার স্পিড আরো বেরে গেলো। আমি এতো স্পিডে নিচে যাচ্ছি যেটা দেখে মনে হচ্ছে আমি আকাশ থেকে মাটিতে পরছি হয়তো। আমার স্পিড আগের থেকে দশগুন বেরে গেছে। এবং আমার দমও প্রায় শেষের দিকে। হঠাৎ আমার দম শেষ হয়ে গেলো। এবং আমি কিছুটা পানি খেয়ে বেহুশ হয়ে গেলাম। পানির এতো চাপ ছিলো যেটা আমার শরীরকে এখন পিষে পেলতে চাচ্ছিলো।
।।।
।।।
যখন আমি চোখ খুললাম, আমি ভেবে নিয়েছিলাম মারা গেছি। মনে হচ্ছিলো পরের জীবনে চলে এসেছি আমি। আমি যে মাটির উপরে দাড়িয়ে আছি সেটা দিয়ে নীল আলো বের হচ্ছে। অনেক মনোমুগ্ধকর একটা দৃশ্য। সামনে বিশাল একটা মোটা গাছ রয়েছে, যেটার সামনে একটা বিশাল পাথর রয়েছে। পাথরের উপরে একটা তলোয়ার গাথা রয়েছে। যেটা দেখতে একদম নীল রঙের। আমি আমার শরীরটা চিমটি দিয়ে কেটে দিলাম একটু। রক্ত বের হওয়া দেখে বুঝলাম আমি মরি নি এখনো। মনে হচ্ছে আমি পানির নিচে আরেকটা জায়গায় চলে এসেছি। উপরে আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। কারন উপরে শুধু কালো অন্ধকার। আমি এগিয়ে গেলাম পাথরের কাছে। তলোয়ারটা আমার খুব ভালো লেগেছে। পাথরের গায়ে অনেক বড় কিছু লেখা আছে। লেখা গুলো পড়তে লাগলাম,
..
যদি তুমি এপর্যন্ত এসে থাকো, তাহলে আমি নিশ্চয়ই মেনে নিচ্ছি তুমি ওয়াটার ম্যাজিকে অনেক পারদর্শী। শুধু তাই নই, তোমার বুদ্ধি এবং সাহস দুটোই আছে। যাইহোক অনেক প্রশ্ন তোমার মাথায় আছে, কিন্তু আমি সব গুলোর উত্তর দিতে পারবো না। সাধারনত তুমি যে জায়গায় এতোদিন ছিলো সেটাকে বলা হয় রুইনস অফ ড্রিম। মূলত এটা আমি প্রথম আবিষ্কার করেছিলাম। মূলত এ তলোয়ারটার মধ্যে ওয়াটার ড্রাগন ভ্যালিরা সিল রয়েছে। এটা অনেক গুরুত্বপূর্ন অস্ত্র, আমি চাই নি যে কারো হাতে এটা চলে যাক। তাই আমি এটাকে এই রুইনস অফ ড্রিমে নিয়ে আসি। এবং এটাকে এখানেই সিল করে রাখি। যে কেউ এই তলোয়ারকে ব্যবহার করতে পারবে না যদি না ভ্যালিরা নিজ থেকে তার পার্টনার না পছন্দ করে। কিন্তু আমি বলতে পারি যদি তুমি এতোদূর এসে থাকো তাহলে নিশ্চয় ভ্যালিরার জন্য তুমি যোগ্য একজন ব্যক্তি। তারপরও আমি আশা করবো ভ্যালিরার সঠিক ব্যবহার করবে যদি ভ্যালিরাকে পাথর থেকে উঠাতে পারো।
।।।
।।।
আমি বুঝতে পারলাম যে এই জায়গাটা প্রথম খুজে পেয়েছিলো সেই হয়তো ওয়াটার ড্রাগন ভ্যালিরাকে মুক্ত করেছিলো। কিন্তু হয়তো এটা অনেক আগের কাহিনী। যেহেতু আমার মত অনেকেই এই জায়গার মধ্যে এসেছে, তাই আমি যেটা বুঝতে পারছি সেটা হলো এই জায়গাটার বের হওয়ার রাস্তা আগে খুব সহজই ছিলো। কিন্তু এই লোকটা হয়তো সব কিছু চেন্জ করেছে। জায়গাটাকে সে হয়তো নিজের মতো আবার বানিয়েছে যাতে সে এখানে আশা সবাইকে পরীক্ষা করতে পারে। যাইহোক আমি এই বিষয়ে মাথা ঘামাতে চাই না। আমি তলোয়ারটাকে ডান হাত দিয়ে ধরলাম। কিন্তু আমার ডান হাত হঠাৎ জ্বলতে শুরু করলো। হাতে পেচানো কাপড় পুরো আগুনে পুরে গেলো। ডান হাতে যে ড্রাগনের ছবি ছিলো সেটা দিয়েই আগুন বের হচ্ছে। হঠাৎ তলোয়ার থেকে বিদ্যুৎ এর শক খেলাম ঝোরালো একটা। তাতে আমি দূরে গিয়ে পরলাম। বুঝতে পারলাম না কি হচ্ছে। কিন্তু যতদূর আমি বুঝতে পারছি আমার ডান হাতের ছবিটা ভিরুদাকে উঠানোর পরই হয়েছিলো। আর ভিরুদাকে আমি ছাড়া কেউ উঠাতে পারে না। এরমানে আমি ডান হাত দিয়ে এই তলোয়ার উঠাতে পারবো না। যেহেতু আমার ডান হাতে ফায়ার ড্রাগনের ছবি আকা আছে তাই সেটা দিয়ে আগুন বের হচ্ছিলো। কিন্তু তলোয়ার ছেড়ে দেওয়ার পর আমার হাত জ্বালা করা এবং আগুন বের হওয়া দুটোই বন্ধ হয়ে গেলো। আমি আবারো সাহস করে গেলাম। এবং বাম হাত দিয়ে তলোয়ারটার হাতল ধরলাম। এবার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু টান দিতে যাবো তার আগেই আবারো বিদ্যুৎ এর শক খেলাম। এবং দূরে গিয়ে পরলাম। আমি বুঝতে পারলাম অনেক শক্তিশালী সিলিং স্পেল দিয়ে আটকানো হয়েছে এটাকে এখানে। আমাকে এটাকে টেনে বের করতে হলে একটু শক খেতেই হবে। আমি আবারো চলে গেলাম সামনে। এবং বান হাত দিয়ে ধরলাম। টান দিলাম এবার দেরী না করে। আর সেই সাথে শকও লাগতে লাগলো। কিন্তু আমি এবার ছেড়ে দিলাম না। আমার পুরো শরীর ঝাকুনী দিয়ে উঠছে। এবং কোনো ভাবেই আমি নরতে পারছি না। টান দেওয়ার শক্তি টুকুও আমার নেই। হৃদপিণ্ডও বন্ধ হয়ে গেছে আমার। দম নিতে সমস্যা হচ্ছিলো আমার।
।।।
।।।
তখনি আমার পিঠ থেকে বারোটা সাদা হাত বের হলো। হাতগুলো এক এক করে পুরো তলোয়ার ধরে ফেললো। এবং সেটাকে টেনে পাথর থেকে বের করে দিলো। তলোয়ার আমার বাম হাতে চলে আসলো, আর তখনি আমার শরীরে যে ক্ষত হয়েছে সেগুলো আবার ঠিক হতে লাগলো। একা একাই আমার হৃদপিণ্ড আবার কাজ করতে লাগলো। হঠাৎ তলোয়ার থেকে একটা নীল আলো বের হলো, যেটার জন্য আমি কিছুক্ষনের জন্য দেখতে পারলাম না কিছু। আর তারপরই দেখতে পেলাম আমার বাম হাতে আরেকটা ড্রাগনের ছবি আকা হয়ে গেছে, যেটা ডান হাতের থেকে আলাদা। তবে এটা একদম সত্যিকারের ড্রাগনের মতোই দেখা যাচ্ছে। নীল রঙের ছোট একটা ড্রাগন মনে হচ্ছে দেখে। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো আমার বাম হাতেই নরতে লাগলো ড্রাগনটা। ডান হাতের ড্রাগনটা শুধু কালো রঙে শরীর আকানো। তাছাড়া একটু আগেই আমি আগুন দেখতে পেয়েছি শুধু সেটা থেকে। কিন্তু বাম হাতেরটা পুরো সত্যিকারের ড্রাগনই। আর আমি অবাক হচ্ছি এটার নরাচরা দেখে। হঠাৎ কথা বলতে লাগলো বাম হাতের ড্রাগনটা।
.
–তাহলে এতো বছর পর আমাকে কেউ ঘুম থেকে ভাঙালো(একটা মেয়েলি শব্দ। ড্রাগনটা মেয়ে)
.
–আহহহ।(আমি চিল্লিয়ে উঠলাম)
.
–কি হয়েছে? চিল্লাচ্ছো কেনো বাচ্চা?(ড্রাগন)
.
–আমার হাতের ছবিওয়ালা ড্রাগন কথা বলছে আমার সাথে। আমার এটা বিশ্বাস হচ্ছে না। আমি মনে হয় স্বপ্ন দেখছি।(আমি)
.
–না বৎস। তুমি স্বপ্ন দেখছো না। বরং এটাই সত্যি। এই তলোয়ার যে উঠাতে পারবে তার হাতে আমি এভাবেই থাকবো। এখন তুমি মারা যাওয়া পর্যন্ত আমি এভাবেই তোমার হাতে থাকবো।(ড্রাগন)
.
–হ্যা। কিন্তু আমি একটা জিনিস বুঝতে পারছি না। এই তলোয়ার ধরার পরই আপনার ছবি আমার হাতে আসলো, আর আপনি কথাও বলছেন। কিন্তু এইযে আমার বাম হাতে আপনার মতো আরেকটা ড্রাগনের ছবি রয়েছে, কিন্তু সে কথা বলছে না কেনো?(আমি)
.
–ঔটা তো ইগড্রাসিল। ওকে পেলে কোথায়?(ড্রাগন)
.
–একটা আজব গুহার মধ্যে বন্ধী ছিলো। আমাকে বলেছিলো তাকে মুক্ত করতে, কিন্তু কি হয়েছিলো তার সাথে আমি বুঝতে পারি নি। হঠাৎ সে বিশাল ড্রাগন থেকে একটা তলোয়ার হয়ে গিয়েছিলো, আর সেটা আমি ধরাতে হাতে এই ছবি চলে আসে।(আমি)
.
–ওওও। তাহলে তুমি তাকে মুক্ত করেছিলে তার সিল থেকে। আসলে এটা আমাদের ড্রাগনদের শেষ ম্যাজিক। আমরা বেশ কিছু স্পেশাল ড্রাগন ছিলাম যাদের কাছে অস্ত্র হওয়ার ক্ষমতা ছিলো। এটা একটা স্পেল, যেটা আমাদের সারা জীবন অস্ত্র হয়ে থাকতে দিবে। আমরা তখনি মারা যাবো যখন আমাদের অস্ত্রকে কেউ ভেঙে ফেলবে, তাছাড়া আমরা আমাদের ব্যবহারকারী ছাড়া চিরকাল ঘুমে থাকবো। আর এই স্পেল ব্যবহার করলে অনেকটা সময়ের প্রয়োজন হয় ড্রাগনদের ঘুম থেকে উঠতে। আমি যখন এটা ব্যবহার করেছিলাম তারপর দশ বছর ঘুমিয়েছিলাম। এবং যে মুক্ত করেছিলো দশ বছর পর তার হাতে আমার সম্পূর্ন রূপ দেখা দিয়েছিলো, তাছাড়া আমি দশ বছর ইগড্রাসিলের মতোই ছিলাম।(ড্রাগন)
.
–ওওওও। আচ্ছা এখন আমরা বের হবো কিভাবে এখান থেকে বলতে পারবেন?(আমি)
.
–হ্যা অবশ্যই। কিন্তু শর্ত আছে দুটো আমার।(ড্রাগন)
.
–আবার শর্ত?(আমি)
.
–হ্যা। আমাকে ব্যবহার করার জন্য তো দুটে শর্ত মানতেই হবে।(ড্রাগন)
.
–ওকে ঠিক আছে কি শর্ত আপনার?(আমি)
.
–আমার নাম ভ্যালিরা। আমাকে তুমি করে বলতে হবে, এবং নাম ধরে ডাকতে হবে। সংক্ষেপে ভ্যালি বললে হবে।(ভ্যালিরা)
.
–ওকে।(আমি)
.
–আরেকটা হলো….
.
–ওয়েট ওয়েট। ঔখানেই তো দুটো শর্ত ছিলো।(আমি)
.
–না ঔটা একটাই ছিলো। আরেকটা আছে।(ভ্যালি)
.
–ওকপ বলো শুনছি।(আমি)
.
–আগে প্রমিশ করো এটা কাউকে জানাবে না৷ বিশেষ করে ইগড্রাসিলকে না যখন ও ঘুম থেকে উঠবে।(ভ্যালি)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে।(আমি)
.
–আচ্ছা আমার দ্বিতীয় শর্ত হলো আমাকে ইগড্রাসিলের কাছে নিয়ে যাও।(ভ্যালি)
.
–কিভাবে?(আমি)
.
–তোমার বাম হাত আর ডান হাত একসাথে করো তাহলেই তো হয়।(ভ্যালি)
।।।।
।।।।
আমি দুইহাত একসাথে করলাম। তখনি একটা চুমুর শব্দ পেলাম। জোরে চুমু দিলে যেমন একটা শব্দ হয় উম্মাহ, তেমনি একটা শব্দ হলো। এবার আমি হাত সরিয়ে লাগলাম। ভ্যালি পুরো লজ্জা লাল হয়ে গেছে।
.
–আসলে আমি ইগড্রাসিলের উপরে অনেক আগে থেকেই প্রেমে পরে আছি। কিন্তু পানি আর আগুন কখনো তো এক হয়না। এজন্য সাহস করে কখনো বলতে পারি নি। তাই আজ একটু সাহস দেখিয়ে দিলাম।(ভ্যালি)
.
–আমার মনে হয় না এভাবে কেউ ভালোবাসা দেখায়।(আমি)
.
–আমরা ড্রাগনরা এভাবেই নিজেদের ভালোবাসা দেখায় একে অপরের সাথে।(ভ্যালি)
.
–আচ্ছা বাদ দাও। এখন বলো বের হবো কিভাবে এখান থেকে?(আমি)
.
–খুব সহজ। আমার মূল শরীর কে ধরো শক্ত করে। এবং সেটা দিয়ে ঔ বিশাল গাছে একটা স্লাইস দাও। একটা পোর্টল খুলে যাবে যেটা কিনা তোমাকে বের করে দিবে এখানে থেকে।(ভ্যালি)
।।।
।।।
আমি ভ্যালির কথা মতো গাছের মধ্যে স্লাইস দিলাম একটা বাম দিয়ে তলোয়ার দিয়ে। এবং ভ্যালির কথা মতো একটা পোর্টাল খুলে গেছে গাছের মধ্যে। আমি আর দেরী করলাম না। সোজা ভিতরে ঢুকে গেলাম। সবচেয়ে রহস্যের বিষয় হলো আমি পোর্টালে ঢোকার পরই চোখ বন্ধ করে নিয়েছিলাম। যখন আমি চোখ খুললাম আমি তখন ঠিক সেই গুহার মধ্যে দেওয়ালে পিঠ লাগিয়ে বসে আছি। আমার পিঠে আমার ব্যাগ রয়েছে। সবচেয়ে আজব হলো আমার সব কিছু স্বপ্নের মতোই লাগছিলো। আমার জামা কাপড় সব কিছু কেমন জেনো ছোট ছোট মনে হচ্ছিলো। জামা কাপড়ের কিছু হয় নি৷ কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ছোট হওয়া নিয়ে। আমার এখনো মনে আছে আমার জামার সাইজ লুসেফার বারিয়ে দিয়েছিলো তার ম্যাজিক দিয়ে। মনে হচ্ছে আমি গুমাচ্ছিলাম এবং স্বপ্ন দেখছিলাম সেই জায়গা সম্পর্কে। কিন্তু আমার বাম হাতে তলোয়ারটা দেখে আমি বুঝতে পারলাম সব স্বপ্ন ছিলো না। বরং আমি নিজেই স্বপ্নের দুনিয়ায় চলে গিয়েছিলাম। আমি আশা করবো এখানে পাঁচ বছরে তেমন কিছু চেন্জ হয়নি। আমার মনে হলো যে আমি গুহার মধ্যে হারিয়ে গিয়েছিলাম। তাই আমি আর কোনো রাস্তা নিলাম না। সোজা গুহার দেওয়াল ভাঙার সিদ্ধান্ত নিলাম। ভ্যালির ক্ষমতা তো আমারো দেখতে হবে। আমি ভ্যালিকে শক্ত করে ধরলাম বাম হাত দিয়ে। এবার তলোয়ারটা থেকে বিশাল পানির টর্নেডো বের হতে লাগলো। এবং সেটা সামনের দিকে যেতে লাগলো। আমি সোজা দেওয়ার দিকে সেটা ছুড়ে মেরেছি, যাটে পুরো দেওয়াই ভেঙে যায়।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
অপেক্ষা করেন পরের পর্বের জন্য। কেমন হলো জানাবেন। কিছু না বুঝলে ইনবক্সে জানাবেন, বুঝিয়ে দিবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here