ভ্যাম্পায়ার_কুইন# #সিজন_2# পর্বঃ৩০

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৩০
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
রানীকে বলে আমি রাজি করালাম। রানীর কথা বার্তা শুনে বুঝতে পারলাম, সে কিছু একটা চাই আমার দ্বারা। আর প্রিন্সেস এলিনার উক্তিও সঠিক এখানে। এ্যারসাক চাচ্ছে আমার গডহ্যান্ডের ব্যবহার করতে।
।।।
।।।
আমরা এ্যালকোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এ্যালকোর্ট মূলত তাদের অস্ত্রের জন্য বিখ্যাত। ইগড্রোলিয়া মিলিটারী ক্ষমতা, হিমরার তাদের আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং এ্যালকোর্ট তাদের অস্ত্রের জন্য বিখ্যাত। হিমরারে অনেক বিখ্যাত ডয়ারফস ও রয়েছে। তারা অনেক শক্তিশালী অস্ত্র বানাতে সক্ষম। তবে সেগুলো এক্সোনিয়ার ধারের কাছেও নাই। এক্সোনিয়ার যে ক্ষমতা রয়েছে, সেটা মনে হয় না এই দুনিয়ার অন্য কোনো তলোয়ারে রয়েছে। আমি, লুসি, লুসানা, হ্যারি, প্রিন্সেস এলিনা এবং এ্যারসাকের জেনারেল লুক সোজা এ্যালকোর্টের প্রবেশ এর গেইটে ঢুকলাম। এ্যালকোর্ট সহ বাকি তিনটা রাজ্যের চারিদিকে বিশাল উচু দেওয়াল রয়েছে, যেটা বানাতে কয়েক হাজার বছর সময় লেগেছে। অনেক শ্রমের প্রয়োজন হতো যদি ম্যাজিক না থাকতো এই দুনিয়াতে। একটা জিনিস আমার অনেক ভালো লাগে, সেটা হলো এই দুনিয়ার সবাই ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারে। এ্যারসাককে এ্যালকোর্টও নতুন রাজ্য হিসাবে মেনে নিয়েছে। তাই এ্যারসাকের অতিথি হিসাবে আমাদের ঢুকতে সমস্যা হলো না। এ্যালকোর্টে আমার এই প্রথম প্রবেশ। এ্যালকোর্টে বেশী ভাগ রয়েছে ভাইকিংসরা আমি শুনেছি এখানের রাজাও একজন ভাইকিংস। আমার চিন্তা হচ্ছে থরকে নিয়ে। সে কি এখনো জন্ম নিয়েছে? নাকি আরো পরে নিবে। সেটা পরে দেখা যাবে।
৷।
৷।
যেহেতু আমরা আরেক রাজ্যের অতিথি, তাই আমাদের সাদরে গ্রহন করলো এ্যালকোর্ট। একদম সোজা ক্যাপিটাল শহরে আমাদের টেলিপোর্ট করে দিলো একজন সেনা। যেহেতু আমাদের প্যালেসে কোনো কাজ নেই, তাই রাজার সাথে কথা বলার মানে হয় না। আমি এই রাজ্যের আর্কাইবে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালাম। হাটতে লাগলাম। আর প্রিন্সেস বলতে লাগলো,
.
–তোমার তো তলোয়ারে কোনো সমস্যা নেই, তাহলে ব্লাক স্মিথ দিয়ে কি করবে?(প্রিন্সেস)
.
–আমার কাছে আরেকটা ভাঙা তলোয়ার রয়েছে। যেটা ঠিক করতে হবে আমাকে।(আমি)
.
–কতগুলো তলোয়ার ব্যবহার করবে তুমি?(প্রিন্সেস)
.
–তিনটা।(আমি)
.
–এতোগুলো?(প্রিন্সেস)
.
–আমার মাস্টার ছয়টা ব্যবহার করতে পারবেন।(আমি)
.
–৬ টা তলোয়ার? কি নাম ছিলো তার?(লুক)
.
–লুসেফার।(আমি)
.
–লুসেফার? তার মুখে কি তলোয়ারের কাটা দাগ ছিলো?(লুক)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–লুসেফার। অন্যনাম সিক্স সোর্ড মাস্টার লুসেফার যে তার বয়সের সময়ের সেরা তলোয়ার এর যোদ্ধা ছিলো। কিন্তু হঠাৎ সে উধাও হয়ে যায়, তার খবর কেউই দিতে পারে নাই।(লুক)
.
–আপনি জানেন কিভাবে তার কথা?(আমি)
.
–আমার বাবা বলেছিলো আমাকে, তার সাথে লড়াই হয়েছিলো লুসেফারের সাথে।(লুক)
.
–তাহলে আমার মাস্টার লুসেফার আরসাকের ছিলো?(আমি)
.
–হ্যা। তবে সে তবে আমার বাবার মতে সে আরসাক থেকে নতুন কিছু খোজার জন্য বের হয়েছিলো। আর তখনি আমার বাবার সাথে তার লড়াই হয়। তার কাছ থেকে আমার বাবা খুব গুরুতর আহত হয়ে পালিয়ে ফিরে আসে।(লুক)
.
–ওওওও।(আমি)
.
–এখন কোথায় আছে লুসেফার? আমি আমার বাবার হারের প্রতিশোধ তার থেকে নিতে চাই। এতোদিনে তো অনেক বৃদ্ধ হয়ে গেছে মনে হয়।(লুক)
.
–সে মারা গেছে।(আমি)
.
–তাহলে আমি আপনার সাথে লড়বো আবার। তবে সামনে বার পুরো শক্তিতে লড়বো। আপনি আপনার তলোয়ার দিয়ে লড়বেন। আমিও আমার ম্যাজিক পাওয়ার দিয়ে।(লুক)
.
–হ্যা ঠিক আছে। তবে সেটার জন্য ব্লাক স্মিথকে খুজতে হবে আগে। তারপর এ্যারসাকে ফিরে আপনার সাথে লড়াই করা যাবে।(আমি)
.
–আমি শুনেছি ব্লাক স্মিথকে কয়েক বছর যাবৎ কেউই খুজে পাচ্ছে না, তাহলে কিভাবে বের করবো তাকে?(হ্যারি)
.
–আমি খুজে দেখতে পারতাম, তবে তাকে আমি কখনো দেখি নি। একবার একজনকে দেখলেই আমি সার্চ ম্যাজিক দিয়ে তাকে যেকোনো জায়গায় খুজে নিতে পারবো।(প্রিন্সেস)
.
–আমাদের শুধু ব্লাক স্মিথের একটা ছবির প্রয়োজন শুধু। আর সেটা আর্কাইবে গেলে হয়তো পেয়ে যাবো।(আমি)
.
–তাহলে যাওয়া যাক।(লুক)
।।।
।।।
হ্যারি, লুসি, লুসানা এবং লুক সামনে হেটে যাচ্ছে। আমি পিছনে পরেছিলাম। আমি পিছে থাকায় প্রিন্সেসও আমার পাশে হেটে যাচ্ছে। আমি সিওর করতে চাই এনার কিছু মনে আছে কিনা, তার জন্য কিছু পরীক্ষা আমাকে করতে হবে। যদি মনে থাকে তাহলে ও নিজেই স্বিকার করবে। আর মনে না থাকলে সেটাও বুঝতে পারবো আমি। আমি হঠাৎ প্রিন্সেসের হাত ধরে ফেললাম। এবং তালুতেই আমার তালু রেখে হাটতে লাগলাম। প্রিন্সেস অনেকটা চমকে গেলো। কিছুক্ষনপর বলতে লাগলো,
.
–জ্যাক আশেপাশের সবাই আমাদের দেখছে।(প্রিন্সেস)
.
–ও সরি প্রিন্সেস। আপনি হারিয়ে না যান, এজন্য আমি হাত ধরেছিলাম। দুঃখিত আমি।(আমি)
.
–না ঠিক আছে।(প্রিন্সেস)
।।।
।।।
আমি হাত ছেড়ে দিলাম। এমন কোনো কিছু বললো না যেটাই আমি কিছু বুঝতে পারবো, তাই আমি আপাতোতো আর কিছু করলাম না। পরে দেখা যাবে এটা। আপাতোতো আমরা আর্কাইবে গেলাম।
।।
।।
আর্কাইব থেকে কোনো প্রকার খবর পেলাম না। একটা ছবির আশা করেছিলাম। কিন্তু কোনো তথ্যই আর্কাইবে নেই। শুধু আর্কাইব নয়, বরং এই পুরো ক্যাপিটালের মধ্যে ব্লাক স্মিথ নিয়ে কোনো তথ্য নেই, যেটা আমরা দুইদিন ক্যাপিটালে থেকে বুঝতে পেরেছি
তারপরও বের হয়েছি তথ্য বের করার জন্য। আমি আজকে একাই বের হয়েছি। অন্য কাউকে আমার সাথে আনে নি। প্রিন্সেস আসতে চেয়েছিলো। কিন্তু সে ঘুমানোর পর আমি একাই চলে এসেছি।
।।।
।।।
একটা গলি দিয়ে হাটতে ছিলাম। হঠাৎ সামনে গলিতে একটা রোগা ছেলেকে কয়েকজন বড় বড় লোক মিলে মারছিলো। কাছে গিয়ে লক্ষ করলাম। ছেলেটা দুটো রুটি চুরি করেছে। আর তার ফলে তাকে মারছে রুটির মালিক এবং তার লোকেরা। ছেলেটাকে দেখে বুঝলাম সে আমার মতো একটা মানুষ। আমি দাড়িয়েই ছিলাম। সাহায্য করতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু যখন লোকগুলোর মুখের কথা শুনতে পারলাম, তখন নিজের রাগ ধরে রাখতে পারলাম না।
.
–তোদের মতো দুর্বল মানুষদের তো মরেই যাওয়া ভালো। তোকে আজকে এখানে মেরে পুতে রাখলে কেউ কোনো কিছু বুঝবেও না।(মালিকটা ছেলেটাকে বললো)
।।।
।।।
আমি সোজা টাইম স্পেল ব্যবহার করলাম। এটার নাম টাইম স্টপ। এটা দিয়ে পুরো আধা মিনিট সময় আটকিয়ে রাখা যায়। সময়ের স্পেল গুলো গুরুত্বপূর্ন। এগুলো অনেক ক্ষতিকরও। যদি কিছু না বুঝেই আমি বারবার সময়ের স্পেল ব্যবহার করি তাহলে অনেক ক্ষতিকর কিছু একটা হয়ে যেতে পারে। তাই সময়ের স্পেল খুব কম ব্যবহার করাই ভালো। আমি আমার হাত গুলো এখন কাজে লাগাতে পারবো। সময় আটকে যাওয়ায় আমি এগিয়ে গেলাম। মোট চারজন লোক দাড়িয়ে মারছিলো ছেলেটাকে। দুজন লাথি দিচ্ছিলো। একজন ঘুষি এবং একজন একটা লাঠি দিয়ে বারি দিচ্ছিলো। আমি আমার পিঠ থেকে চারটা হাত বের করে ফেললাম। আমার হাত আমি লুকের সাথে ব্যবহার না করলেও এখানে করতে পারবো ঠিকই। এই হাতগুলো শুধু আমার নিরাপত্তার জন্য না। প্রতি রাতে এই হাত গুলো বের করে এদের দ্বারা কি কি করা যায় সেটা আমি গবেষনা করেছি। আর আমার গবেষনা থেকে খুব ভালো জিনিসই পেয়েছি। আমি আমার পাঁচটা হাতকে ব্যবহার করতে পারবো যে কোনো কিছুর রূপ বানাতে। সাধারন কথায় আমি পাঁচটা হাত দিয়ে আমার ধারনা মতে কোনো যে কোনো কিছুর রূপ দিতে পারবো। এমনকি আমি জীবিত জিনিসের মতো রূপও দিতে পারবো, যাদের চেহারা থাকবে না তবে শরীর ঠিকই হবে। আর তাদেরকে আমার ইচ্ছামতো নারাতে পারবো। ক্ষমতাটা অস্থির। এটাকে গডহ্যান্ড বলা হয় কেনো সেটা আমি বুঝতে পেরেছি। আমি চারটা হাত বের করে সেটা দিয়ে ভয়ানক হিংস্র নেকড়ে বাঘ বানিয়ে ফেললাম যেগুলো চারজনের উপরে ঝাপিয়ে পরলো। যেহেতু সময় বন্ধ ছিলো, তাই কেউ চিল্লানোর সুযোগ পেলো না। সাথে সাথেই তাদের পুরো শরীরে খেয়ে ফেললো আমার হাতের তৈরী নেকড়ে বাঘ গুলো। আধা সেকেন্ড হওয়ার পর আমি ছেলেটার মাথায় হাত দিলাম। এতে করে তার শরীরের ক্ষত ঠিক হতে লাগলো। ছেলেটার হাতে দুটো রুটি ছিলো যেটা অনেক শক্ত করে ধরে রেখেছিলো,
.
–আমাকে মারবেন না। আমি আর চুরি করবো না।(ছেলেটা)
.
–নাম কি তোমার?(আমি)
.
–আমার নাম আইরো।(আইরো)
.
–চুরি করেছো কেনো?(আমি)
.
–আমার ছোট বোন তিন দিন হলো কিছুই খাই নি। তাই আমাকে চুরি করতে হয়েছে।(আইরো)
.
–ও। রুটি দুটো তো ময়লা হয়ে গেছে। কি করবে? এটাই কি তোমার বোনকে খেতে দিবে?(আমি)
.
–তাছাড়া আর কি করবো। এটা না দিলে সে না খেয়ে মারা যাবে।(আইরো)
.
–তার থেকে তুমি কিছু টাকা নাও আমার থেকে। এবং এটা দিয়ে কিছু কিনে তোমার বোনকে এবং নিজে খেয়ো।(আমি)
.
–কিন্তু?(আইরো)
.
–কোনো কিন্তু নই।(আমি)
।।।
।।।
আমাকে ভয় পেয়ে ছেলেটা আমার থেকে কিছু অর্থ নিয়ে নিলো।
.
–দূর এখন ব্লাক স্মিথকে পাবো কোথায় বুঝতে পারছি না?(আমি ফিসফিসিয়ে বললাম)
.
–আপনি ব্লাক স্মিথকে খুজছেন?(আইরো)
.
–হ্যা। তুমি জানো তাকে?(আমি)
.
–এই রাজ্যের অধিকাংশ লোকই তার সম্পর্কে জানে। তবে কেউ তার চেহারা সম্পর্কে জানে না।(আইরো)
.
–কিন্তু কেউই তো বললো না তার সম্পর্কে কিছু।(আমি)
.
–সেটার কারন হলো সবাই ব্লাক স্মিথের সম্পর্কে গোপন রাখতে চাই সবকিছু।(আইরো)
.
–ওওও। তাহলে তুমি কি জানো তার সম্পর্কে।(আমি)
.
–শোনা যাচ্ছে সে একশো এক নং শহরে রয়েছে। সেখানে ব্লাক মার্কেট রয়েছে। শহরটা অনেক ঘনবসতী সম্পূর্ন, তাই কেউ এখনো খুজে বের করতে পারে নি তাকে।(আইরো)
.
–ওওওও। ধন্যবাদ তোমাকে।(আমি)
.
–আমি আপনার আর কোনো সাহায্যে আসতে পারলে বলবেন। আপনি আমার জীবন বাচিয়েছেন, আমি আমার জীবন দিয়ে সব কিছু করতে রাজি।(আইরো)
.
–তুমি তোমার বোনের খেয়াল রেখো ঠিকমতো তাহলেই হবে।(আমি)
.
–ঠিক আছে।(আইবো)
।।।
।।।
আমি আইবোর থেকে সরে আসলাম। অনেকটা গুরুত্বপূর্ন তথ্য পেয়ে গেলাম। যদিও সবাই ব্লাক স্মিথের সম্পর্কে জানে, কিন্তু কেউ আমাদের বললো না তাহলে। জানি না কেনো। হয়তো তার সম্পর্কে সব কিছু গোপনই রাখতে চাই। আমাকে এখন যাইতে হবে একশো এক নং শহরে। সেখানে গিয়ে খুজতে হবে ব্লাক স্মিথ কে।
।।।
।।।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো গলিটা পার হওয়ার পরই আবার সেই হুড পরা মেয়েটাকে দেখতে পেলাম যেটা কিনা জেসি। বুঝতে পারছি না ও এখানে কি করছে। কিন্তু আমার ম্যাজিক পাওয়ার অনুভব করলে ঠিকই আমার কাছে আসবে ও। আর সেটা আমি চাই না। আমি পিছনের দিক দিয়ে বের হয়ে গেলাম। জেসিকে অনেক কিছু বলার ছিলো। কিন্তু আপাতোতো এটা ভালো সময় না। এখন আমাকে ব্লাক স্মিথকে খুজতে হবে। কোনোরকম ঝামেলায় পরা যাবে না আমার।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
গল্পটা কেমন লাগছে সেটা জানাবেন। সবাই নিজেদের মন মতো মন্তব্য দিবেন। কোথায় খারাপ হচ্ছে সেটাও বলে দিবেন, যাতে প্লট চেন্জ করতে পারি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here