ভ্যাম্পায়ার_কুইন# #সিজন_2# পর্বঃ০৬

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ০৬
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
মনে হয় ওরা বুঝে গেছে। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না আমি কি করবো। প্লান বানিয়ে দিলাম যেখানে আমি বাদে সবারই কাজ থাকবে। সবাই নিজেদের সব কিছু করবে তাহলে কি আমি বসে বসে সেটা দেখবো? না সেটা হতে পারে না। আমাকেও কিছু একটা করতে হবে। আমাদের প্লান অনুযায়ী এলিহা এগিয়ে গেলো আক্রমন করতে। আর লুসি এবং লুসানা একদম পিছে দাড়িয়ে রইলো। আমার কাজ থাকবে লুসি এবং লুসানাকে সাহায্য করা, যেহেতু ওরা কাউকে আক্রমন করতে পারবে না তাই আমাকেই করতে হবে কেউ ওদের আক্রমন করতে আসলে।
।।।
।।।
এলিহা সামনে চলে গিলো। কোমরে একটা তলোয়ার ছিলো। মাঝারি সাইজের একটা বেশ ধারালো তলোয়ার। তলোয়ারটা সাধারন হওয়ায় এলিহাকে নিজের ম্যাজিক পাওয়ার এর মাধ্যমে তলোয়ারকে শক্তিশালী করতে হবে। আর সে সেটাই করেছে। ওর ম্যাজিক দিয়ে তলোয়ারের ক্ষমতা আরো বারিয়ে দিয়েছে। এবং সেটা দিয়ে এক এক করে লরতে লাগলো। প্রথমে বাচ্চা ভেবে দুই একজনই এলিহার উপরে আক্রমন করে। কিন্তু যখন এলিহা তাদেরকে মেরে ফেলে তখন আস্তে আস্তে সবাই ওর উপরে ঝাপিয়ে পরতে লাগলো। ঠিক তখনি লুসি এবং লুসানা এলিহার চারিদিকে একটা ঢাল বানিয়ে দিলো। সকলেই একসাথে ঢালের উপরে আক্রমন করতে লাগলো। আর তখনি হ্যারি ওর স্পেলটা শত্রুদের দিকে ছুড়লো। বড় একটা এয়ার বল বানিয়েছে হ্যারি। আমি ওর স্পেল দেখে বুঝতে পারলাম ওর এট্রিবিউট হলো বায়ুর। বাতাস দিয়ে বিভিন্ন স্পেল ব্যবহার করতে পারবে হ্যারি। আর এখনকার যে স্পেলটা ও বানালো সেটা অনেকটা পাওয়ারফুল। কারন এটা কোথাও ফেললে ঘূর্নিঝড়ের মতো কাজ করবে। হ্যারি ওর এয়ার বলটা ছুড়ে ফেললো। আর সেটা শত্রুদের আঘাত করার আগেই এলিহা ওর ডানা দুটো বের করে উড়ে আমাদের কাছে চলে আসলো। আর সে সময়ই হ্যারির এয়ার বলটা শত্রুদের আঘাত করলো। এয়ার বল স্পেলে হ্যারির অনেকটা ম্যাজিক পাওয়ার শেষ হয়ে গেছে। এখন ও হাপাচ্ছে। মনে হচ্ছে না আর একটা ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু এটা অনেকটা কাজে দিয়েছে। যেহেতু তারা সকলেই হ্যারির স্পেল আগে থেকেই দেখতে পাই নি তাই তারা সেটা প্রতিহত করতে পারে নি। সেখানে ভয়ঙ্কর একটা ঘূর্নিঝড় দেখা দিয়েছে। এবং যার ফলে তাদের নিজেদের হাতে বানানো তলোয়ার দিয়েই বেশীর ভাগ গুরুতর আহত হয়েছে। অনেকে নিহতও হয়েছে। এরপর এখনো চল্লিশ জনের মতো দাড়িয়ে আছে। সবাই কম বেশী আহত হয়েছে। হ্যারির স্পেলটা মারাত্মক ছিলো। আমি ভাবতে পারে নি এটা এমন কাজে দিবে। আসল কথা বলতে ডেভিলদের ম্যাজিক পাওয়ার বেশী থাকে অনেক। তারা যেকোনো স্পেলই পুরো ক্ষমতায় ব্যবহার করতে পারে। তবে বেশী ট্রেনিং না থাকলে একটা স্পেলেই শরীরের সকল পাওয়ার চুষে নিতে পারে। তারজন্য ডেভিলদের অনেক ট্রেনিং এর প্রয়োজন হয়। বাকি শত্রুরা আমাদের চারিদিক দিয়ে ঘিরে ধরলো। এখন যেহেতু চারদিক দিয়ে আমাদের ঘিরে ধরেছে তাই আমরা কি করবো কিছু বুঝতে পারছি না। আমরা পাচজন পিঠ মিশিয়ে দাড়িয়ে রইলাম।
.
–কি করবো জ্যাক এখন?(হ্যারি)
.
–কি করবো সেটাই বুঝতে পারছি না।(আমি)
.
–আমাদের প্লানটা ভালোই কাজে দিয়েছে। কিন্তু হ্যারি যদি আরো একটা এয়ার বল ব্যবহার করতে পারতো তাহলে নিশ্চয়ই আমরা জিতে যেতাম।(এলিহা)
.
–আমি চেষ্টা করে দেখতে পারি।(হ্যারি)
.
–এখন সেটা কাজে দিবে না কোনো অংশে। যেহেতু আমাদের চারিদিক দিয়ে শত্রুরা ঘিরেছে। তাই এখন তোমার স্পেলটা কোনো কাজে দিবে না। বরং তোমার ক্ষতি হবে আরো।(আমি)
.
–তাহলে কি করবো? যদি আমরা আরো একটু শক্তিশালী হতাম তাহলে হয়তো বেচে ফিরতে পারতাম।(লুসানা)
.
–এটা সম্পূর্ন এলেক্স স্যারের প্লান। তিনি আমাদের টেস্ট করছেন। আমি জানি আমাদেরকে সম্পূর্ন মেরে ফেলবেন না।(লুসি)
.
–আমাদের তেমন আশায় থাকা যাবে না। কারন আমরা সকলেই এখানে শক্তিশালী হতে এসেছি।(হ্যারি)
.
–হ্যা। যা হবে শেষ পর্যন্ত দেখবো। আমাদের সম্পূর্ন চেষ্টা করবো আমরা এখানে।(এলিহা)
।।।।
।।।।
আমরা পাচজনই দাড়িয়ে আছে পাচদিকে মুখ করে। প্রত্যেক দিকেই আমাদের নজর রাখতে হবে। সবাইকে এখানে সাহসী হতে হবে। নাহলে মৃত্যু সবারই হবে। আমি কি করবো মাথায় আসছে না। কিভাবে কি ম্যাজিক ব্যবহার করবো সেটা বুঝতে পারছি না। মাথায় স্পেলের কথা আসছে কিন্তু আমি কোনো ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারছি না। হঠাৎ শত্রুপক্ষের আক্রমন আমাদের উপরে পরলো। তারা সকলেই তীরের ব্যবহার করছে। আমাদের দিকে এক একজন চারপাচটা তীর একসাথে ছুড়ছে। আর সেগুলো আগুনের মতো হয়ে আমাদের দিকে আসছে। লুসি এবং লুসানা আবারো আমাদের জন্য ঢাল তৈরী করলো। কিন্তু এবারের তীরের সংখ্যা আগের থেকে দ্বিগুন হওয়ায় ঢাল খুব সহজেই ভেঙে গেলো। এবং বেশ কিছু তীর আমাদের পাচঁজনের লাগলো। বিশেষ করে লুসি এবং লুসানার শরীরে বেশী তীর লাগলো৷ এরপরেও তারা দুজনে আমাদেরকে হিল করার চেস্টা করতে লাগলো। তাদের দুজনের শরীরে মোট বারোটা তীর লেগেছে। এমনিতেও এতো কম বয়সে এতো গুলো তীর শরীরে লাগায় ওদের শরীর দিয়ে রক্ত বেশী বের হচ্ছে। যার ফলে ওদের শরীর একদম দুর্বল হয়ে গেছে। একটু পরেই হয়তো বেহুস হয়ে যাবে দুজন। আর কিছুক্ষনের মধ্যে ওদের মৃত্যুও ঘঠতে পারে।
।।।
।।।
আমরা তিনজনও অনেক গুরুতর আহত হয়েছি। শরীর দিয়ে রক্ত পরছে অনেক। বেশীক্ষন আর টিকে থাকতে পারবো না এখানে। আমাদের এই অবস্থার পরও যেহেতু এলেক্স এবং কহিল স্যার আমাদের সাহায্যের জন্য আসে নি এরজন্য আমরা বুঝতে পারলাম আমাদের মৃত্যু অবধারিত। আমাদের আহত হওয়ার পরও শত্রুরা আমাদের দিকে আরেক রাউন্ড তীর ছুরলো। তীর গুলো ঠিক আমাদের দিকে আসছে। তবে এবার এক দিক দিয়েই আসছে তীর গুলো। কারন সকলেই একপাশে চলে এসে তীর গুলো ছুড়েছে। আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। আমি সোজা উঠে হ্যারি, লুসি, লুসানা এবং এলিহার সামনে দু হাত বারিয়ে দাড়ালাম। এমনিতেই শরীরে তিনটা তীর লেগেছে আমার, তারপর এখন তাদের ছোড়া প্রায় সবগুলো তীরই আমার শরীরে গেথে যায়। আমার সব অঙ্গ প্যারালাইস হয়ে গেলো। কোথাও বোধ পেলাম না আমি। শুধু সামনের দিকে তাকিয়ে আছি। প্রায় ত্রিশটার উপরে তীর আমার শরীরে গেথে গেছে। আশে পাশে কে কি বলছে আমি কিছুই শুনতে পাচ্ছিলাম না। সব মিলিয়ে আমি বুঝে গেলাম আমার সময় শেষ হয়ে গেছে এই দুনিয়াতে। আমি সামনে তাকালাম শত্রুরা আবার আরেক রাউন্ড তীর আমাদের দিকে ছুড়ছে। আমি বুঝতে পারছি এটা যুদ্ধের ময়দান। এখানে কেউই কোনো মায়া দেখাবে না। যতক্ষন পর্যন্ত না সব গুলো শত্রু মারা যাচ্ছে ততক্ষন পর্যন্ত কোনো আক্রমন থামবে না। আমি কোনো রকম আমার ঘাড় ঘোরালাম। আমি চারজনের চোখেই পানি দেখতে পাচ্ছি। তারা কি বলছে আমি শুনতে পাচ্ছি না। কারন আমার দুটো কান বরাবর চারটা তীর গেথে গেছে। ডান চোখ দিয়ে একটা তীর গেথে যাওয়ায় আমি ডান চোখ দিয়ে কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। যেহেতু আমার পুরো শরীর প্যারালাইস হয়ে গেছে, তাই আমি কোনো ব্যথা অনুভব করতে পারছি না। মনে হচ্ছে এখনি আমার জীবন শেষ হয়ে যাবে। বাকি তীর গুলো ঠিক আমার গায়ে লাগবে তখনি আমার পিঠ থেকে অনেকগুলো সাদা হাত বেরিয়ে আসলো। আমার এটা অনেক দেখা দেখা মনে হলেও মনে পরছে না কোথায় দেখেছি আমি। আমাদের দিকে যেগুলো তীর আসছিলো সবগুলো তীরই আমার পিঠ থেকে হাতগুলো বের হয়ে ধরে ফেললো৷ আমি বিশ্বাস করতে পারছি না এতোগুলো হাত আমার পিঠ থেকে বের হয়েছে। শুধু তাই নয় আমার পিঠ থেকে আরো কিছু হাত বের হলো যেগুলো এক এক করে আমার এবং বাকি চারজনের শরীর থেকে তীর গুলো টেনে টেনে বের করে দিচ্ছে। এবং সবগুলো তীর একসাথে শত্রুদের দিকে ছুরলো। আর এর ফলে সবগুলো তীর শত্রুদের গায়ে গিয়ে লাগলো। আমার শরীর আস্তে আস্তে জ্বলতে লাগলো। সাদা একটা আলো বের হচ্ছে আমার শরীর দিয়ে। আর এর ফলে আমার শরীর একা একাই হিল হয়ে যাচ্ছে। চারটা হাত বাদে বাকি সবগুলো হাত আমার পিঠে ঢুকে গেলো, আর চারটা হাত হ্যারি, লুসি, লুসানা এবং এলিহার হাত ধরলো। আমার সাথে সাথে তারাও হিল হয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। দেখতে দেখতে তাদের সবগুলো ক্ষতই ঠিক হয়ে গেলো৷ সকলের ক্ষত ঠিক হওয়ার পর আমার সবগুলো সাদা হাতই অদৃশ্য হয়ে গেলে। আমি এরকম কোনো ম্যাজিকের নাম শুনি নি আগে। জানি না এটা কি ছিলো। তবে যা ছিলো সেটা সব থেকে আলাদা ছিলো৷ আর অনেক শক্তিশালীও ছিলো।
.
–wow,,, আমি জানতাম জ্যাক তোমার মাঝে বেশ ইন্টারেস্টিং কিছু ছিলো। আমি প্রথম এমন কিছু দেখলাম।(হ্যারি)
.
–একজন মানুষ হিসাবে এমন কিছু ব্যবহার করা বেশ আশ্চর্যের বিষয়। তারপরও যা ছিলো সেটা দেখতে অনেক সুন্দর ছিলো। হাত গুলো দেখতে অনেকটা ডানার মতোই ছিলো।(এলিহা)
।।।
।।।
আমরা দাড়িয়ে পাঁচজন কথা বলছিলাম তখনি এলেক্স এবং কহিল স্যার এসেছে আমাদের কাছে। দুজনেই হাততালি দিতে লাগলো,
.
–আমি ভেবেছিলাম বেশ কিছু জিনিস শিখাতে হবে তোমাদের। কিন্তু যেটা দেখলাম তাতে বুঝতে পারলাম এখানে আমার কোনো কিছু শেখানোর নেই তোমাদের।(এলেক্স)
.
–না স্যার। আমাদের আরো শক্তিশালী হতে হবে। এর থেকে আরো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে স্যার।(হ্যারি)
.
–হয়তো বুঝতে পেরেছো কিরকম মিশন হবে তোমাদের।(কহিল)
.
–জ্বী স্যার।(আমরা সবাই)
.
–তোমাদের বেশী দিন লাগবে না ট্রেনিং এর। তারপরও অনেক কষ্ট করতে হবে। অফিসার কহিল তোমাদের প্রত্যেকের এবিলিটি সম্পর্কে ধারনা নিয়ে ফেলেছে, কাল থেকে সেই তোমাদের বলবে কিরকম ট্রেনিং তোমাদের প্রত্যেককে করতে হবে।(এলেক্স)
….
….
এলেক্স স্যার আর কোনো কথা বললো না। আমাদের সরাসরি টেলিপোর্ট করে আমাদের নিজেদের রুমের মধ্যে পৌছে দিলো। আমি আর হ্যারি একই রুমে থাকবো। একটু আগের লড়াইতে আমাদের সকলেরই ম্যাজিক পাওয়ার এখন প্রায় শেষ। অনেকটা রেস্টের প্রয়োজন এখন আমাদের। খাবার টেবিলের উপরেই রাখা ছিলো। সেটা খাওয়ার পরই আমরা দুজনেই ঘুমের দেশে তলিয়ে পরলাম। কালকে আরো একটা ভয়ঙ্কর দিন আসবে। জানি না কালকে কি মৃত্যুখেলায় আমাদের নামিয়ে দিবে। কিন্তু যা হবে সেটা কালকেই দেখা যাবে। আমি আপাতোতো আমার সেই আশ্চর্যজনক হাতগুলো সম্পর্কে স্বপ্ন দেখতে লাগলাম।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
অনেকটা ক্লান্ত আজ বাসার কাজ করতে করতে, তাই একটু ছোট হয়ে গেছে, কোথাও না বুঝলে কমেন্ট করবেন বুঝিয়ে দিবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here