যে শ্রাবণে এলে তুমি পর্ব:৫

0
934

যে শ্রাবণে এলে তুমি💕💕
পর্ব:5
লেখনিতে:মৌসুমী

ভেজা রাস্তার উপর ল্যামপোস্টের আলোয় দ্বাঁড়িয়ে আছে ফারদিন আর নিরা।দুজন ফয়েজের অপেক্ষায় দ্বাঁড়িয়ে আছে।কেউ কারো সাথেই কথা বলছেনা।দুজন পাশাপাশি দ্বাঁড়িয়ে রাস্তার এমাথা ,ওমাথা থেকে শুরু করে পাশেপাশের বিল্ডিং,রাস্তা দিয়ে যাওয়া গাড়িগুলো আর যতদূর চোখ যাই সেগুলোই গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখছে এমন এক ভাব করে দ্বাড়িয়ে আছে।আসলে দুজনি কথা বলার মত কোন বিষয় খুঁজে পাচ্ছেনা তাই চুপ করে আছে।ফারদিন নিরাকে নিয়ে ওদের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়ে দেখে রাস্তায় তেমন কোন রিকশা,অটো কিছুই তেমন নাই।আর যাদের পাচ্ছে তারা যেতে চাচ্ছেনা এমন অবস্থায় কোন উপায় না পেয়ে ফয়েজকে ফোন করে তার গাড়িটা নিয়ে আসতে বললো ফারদিন।দশ মিনিট ধরে দ্বাঁড়িয়ে আছে ওরা রাস্তার পাশে কিন্তু এখুনো ফয়েজের আসার কোন নামগন্ধ নেই।বিরক্তিতে কোন কোন সময় অস্থির হয়ে যাচ্ছে ফারদিন।কেনো যে গাড়িটা নিয়ে বের হলোনা,গাড়ির চাবি সাথে নিয়েও গাড়ি বের করেনি সে।এভাবে একটা মেয়েকে নিয়ে রাস্তায় দ্বাঁড়িয়ে থাকতে মোটেও ভালো লাগছেনা ফারদিনের।কিন্তু কোন উপায় ও পাচ্ছেনা সে।আর ফয়েজ যে অনেক অলস কোথাও সহজে বের হতে পারেনা সেটা ফারদিন খুব ভালো করেই জানে।এদিকে রাত ও বাড়ছে।বৃষ্টি হওয়ার কারণে নিরাদের বাসা থেকে বের হতেও পারছিলোনা আর তখন খেয়াল ছিলোনা ফয়েজকে আসতে বলার কথা বললে ফয়েজ অনেক আগেই এসে ওদের নিয়ে যেতে পারতো।আবার আজ বাসা থেকে বের হওয়ার সময় গাড়ির চাবি,মানিব্যাগ নিয়ে বের হয়েছিলো কিন্তু ফোনটা নিতে একদম মনে ছিলোনা তাই ফোনটাও এখন তার সাথে নেই।

আমরা কি এভাবেই দ্বাড়িয়ে থাকবো ?সামনের রাস্তাটার দিকে চোখ রেখে ফারদিনের উদ্দেশ্যে কথাটা বললো নিরা।নিরার কথার আওয়াজে তার দিকে তাকালো ফারদিন।ল্যামপোস্টের আলোয় নিরার মুখটা অন্যরকম সুন্দর লাগছে।মেয়েটা ধবধবে সাদা ফর্সা না তবে ফর্সা ,কেমন হলুদ না কেমন ধরণের।নিরার গাঁয়ের রংটা অনেক সুন্দর আর মিষ্টি মায়াবী একটি চেহারা।কিউটের ডিব্বা বলা যেতে পারে।যেতে পারেনা কিউটের ডিব্বায় একটা,আরো যত কিছুর ডিব্বা আছে সব ই আছে নিরা মধ্যে।হাইটটাও খুব বেশি লম্বাও না আবার একেবারে খাটোওনা ঠিকঠাক।শরীরে মাংস নেই বললেই চলে ,পাতলা ছিপছিপে।তবে ভালো লাগে দেখতে।সব মিলিয়ে যাকে বলে সুন্দরী।চোখের পাপড়িগুলো বড় বড় আর ঠোঁটগুলোও অনেক সুন্দর এমন ঠোঁট ফারদিনের খুব পছন্দ।নিরার দিকে তাকিয়ে নিরার পা থেকে মাথা পর্যন্ত পরখ করতে ব্যস্ত ফারদিনের হাতে নিরা একটা টাইটসে চিমটি দিলো।

ওফ,,এভাবে কেউ চিমটি দেয় ব্যাথা পেলাম না বলে চিমটি দেওয়া স্থানটা হাত দিয়ে নাড়তে থাকলো ফারদিন।

বেশ করেছি কখন থেকে আপনাকে ডাকছি আর আপনি ক্যাবলার মত আমার দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলেন কেনো,আমি কি কোন এলিয়েন যে এভাবে তাকাই ছিলেন?বেশ ঝাড়ির সাথে নিরা কথাগুলো বললো ফারদিনকে।

ফারদিনো মিনমিনে সরে বললো তার থেকেও বেশি কিছু।

নিরা ফারদিনের কথাটা হালকা শুনতে পেয়ে বললো ,কি বললেন মিনমিনিয়ে জোরে বলেন দেখি কেমন সাহস আপ,,,এমন সময় গাড়ির ভেতর থেকে জানালা দিয়ে মুখ বের করে ফয়েজ নিরা বলে ডেকে উঠলো।নিরা আর ফারদিনো একসাথে তাকালো ফয়েজের দিকে তারপর নিরা আগে আগে গিয়ে গাড়ির সামনের সিটে ফয়েজের পাশে বসে পড়লো।ফারদিন গাড়ির কাছে গিয়ে নিরাকে বললো,তুমি পেছনে বসো আমি এখানে ভাইয়ার পাশে বসবো।
নিরা তখন বললো ,পারবোনা।আপনি পেছনে বসেন।এখানে আমি ভাইয়ার পাশে বসবো বলেই আগে উঠে গেছি গাড়িতে ।
ফারদিন আর তর্ক না করে পিছনের সিটে গিয়ে বসে পড়লো।

খাবার টেবিলে নেওয়াজ সাহেব,জামান সাহেব,উৎস আর তুলতুল বসে আছে।নিরা আর ফারদিনের জন্য ।এতক্ষণ ধরে সবাই অপেক্ষা করছে।ফয়েজ ওদের নিয়ে আসলেই ওরা খেতে শুরু করবে।তারপর মেয়েরা খাবে।মাহফুজা বেগমরা আবার বাসায় চলে যাবে রাতেই তাই তাড়াহুড়ো করছে।

মাহফুজা বেগম ফজিলা বেগমকে বললেন,,কি দরকার ছিলো আপা নিরাকে আনতে যাওয়ার।ফারদিন আটকে গেলো ওকে আনতে গিয়ে।বাসায় থাকলে ছেলেটা একটু রেস্ট নিতে পারতো,একটাদিন একটু বাড়িতে থাকে তাও আপনিও বের হতে দিলেন।

ফজিলা বেগম মাহফুজা বেগমের হাত ধরে বললেন কি বলেন বেয়ান মেয়েটা ওখানে একা একা থাকবে আর আমরা এখানে ভালোমন্দ এক সাথে খাবো এটাকি হয়।

মাহফুজা বেগম সাথে সাথে বললো , ,আপা টুনিতো আছে বাসায় সমস্যা হতোনা আর আমরাতো বলেছিলাম আসতে ওই মেয়েকে কিন্তু না আসলে কি করবো বলেন?

মাহফুজা বেগম আর ফজিলা বেগমের কথার মাঝেই ফারদিনরা চলে আসলো।নিরা বাড়িতে ঢুকেই দৌড়ে এসেই ফজিলা বেগমের গলা জড়িয়ে ধরলো তারপর আহ্লাদি স্বরে বললো কতদিন পরে তোমায় দেখছি মামনি ,কেমন আছো তুমি বলো।আর আপু আমার জন্য কি পাঠিয়েছে বলো বলো।

ফজিলা বেগম হাসতে হাসতে নিরাকে বললো ছাড় ছাড় আমাকে, তোর মুখটা দেখি।আর আমি ভালোই আছিরে।তোর আপু তোর জন্য আমের আচার পাঠিয়েছে।কিন্তু তুই এখানে বেয়ানদের সাথে আসিসনি কেনো বলতো?রাগ করেছিস নাকি?নিরা ফজিলা বেগমকে জড়িয়ে বসে থেকেই বললো না গো রাগ করিনি ভালো লাগছিলো না তাই আসিনী আম্মাদের সাথে কিন্তু তোমার পুত্র জোর করে নিয়ে আসলো আমাকে।

ভালো করেছে আমার পুত্র তোকে জোর করে এনে।এখন চুপচাপ বসে থাক আজ আর বাসায় তোকে যেতে হবেনা আজ এখানেই থাকবি।

না মামনি কাল কলেজে যাবো এখানে থাকলে যেতে দেরি হয়ে যাবে।

কোন দেরি হবেনা।বেয়ানদেরো বলছি থাকতে কিন্তু থাকবেনা বলছে বলে মাহফুজা বেগমের দিকে তাকালো ফজিলা বেগম।

মাহফুজা বেগম মিষ্টি করে হেসে বললো অন্যদিন এসে থাকবো আপা।

কবে আর থাকলেন যতবার আসেন বলেন অন্যদিন থাকবো,মন ভারি করে বললো ফজিলা বেগম।

আম্মা আসেন ওদের খাওয়া শেষ বলে নিহা চলে গেলো ডাইনিং টেবিলের কাছে।ছেলেদের খাওয়া শেষ এবার মেয়েরা খেলেই হয়ে যাবে।সারাদিনে এত কাজ করে নিহা বড্ড ক্লান্ত হয়ে গেছে।খাওয়া-দাওয়া করে সব প্লেট বাটি পরিষ্কার করে রান্নাঘরের সব ঠিকঠাক করে তবেই একটু বিশ্রাম নিতে পারবে।বক্কর ছিলো বলে তাও অনেক রক্ষে হয় নিহার।বাপের বাড়ি পায়ের ওপর পা তুলে খেয়েছে কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে তা হয় না।তবু নিহা নিজেকে অনেক ভাগ্যবতি ভাবে এমন শ্বশুর-শ্বাশুড়ি,দেবর,আর ফয়েজের মত স্বামীকে পেয়ে।ননদটাও অনেক ভালো নিহার ,অনেক নরম মনের তবে রেগে গেলে অন্যরকম ব্যাপার।ফয়েজ অবস্য নিহাকে তেমন সময় দেয়না তবে ভালোবাসে খুব এটা নিহা বুঝতে পারে।সময় সুযোগ পেলেই নিহাকে রোমান্টিক অত্যাচার করতে ভূলেনা।

সবার খাওয়া শেষ এখন নেওয়াজ সাহেবরা বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।এখন কোন গাড়ি পাবেনা তেমন তাই ফয়েজ ই যাবে আবার ওদের রাখতে।নিরাকে যেতে দিলেননা ফজিলা বেগম তাই মাহফুজা বেগমরা বেড়িয়ে গেলে নিরা গিয়ে গেস্ট রুমে শুয়ে পড়লো।ফোনটা সাথে নিয়ে আসতে পারেনি নিরা তাই এখন সময় কাটছেনা নিরার।এবাড়ির সবাই আপন আপন রুমে চলে গেছে।নিরা খুব বিরক্ত ও লাগছে।ঘুম ও আসছেনা।বারান্দায় গিয়ে আজকের ওদের বাড়ি থেকে আসার আগের কথাগুলো ভাবতে ‌শুরু করলো হঠাৎ নিরা।

দরজা খুলে কালো কালারের টির্শাট পড়া একটা ছেলেকে দ্বাড়িয়ে থাকতে দেখে নিরা পেছন থেকে বললো ,কে আপনি?ছেলেটি অন্যদিকে মুখ করে তাকিয়ে থাকার কারণে নিরা ছেলেটার মুখ দেখতে পাচ্ছিলোনা।নিরার কথা শুনে ছেলেটা নিরার দিকে ঘুড়ে দ্বাঁড়ালো।নিরা ছেলেটার মুখ দেখে মিনমিন করে বললো এই পাদমার্কা ডাক্তার এই বৃষ্টির মধ্যে এখানে কি করে।তারপর স্বাভাবিক ভাবে বললো ,আপনি এখানে তাও আবার এই বৃষ্টির মধ্যে?কোথাও গিয়েছিলেন নাকি?বৃষ্টির জন্য এখানে এসেছেন? আম্মারাতো আপনাদের বাসায় গেছে কেউ নাই শুধু আমি আর টুনি আছি।এক দমে কথাগুলো বলে থামলো নিরা।ফারদিন এতক্ষণ চুপ করে শুনলো নিরার কথা তারপর নিরাকে বললো ভেতরে আসতে পারি?নিরা দরজা থেকে খানিক সরে তারপর বললো আসুন।ফারদিন ভেতরে গিয়ে একটা সোফায় বসে চুলগুলো হালকা ঝাড়লো মাথা এদিক ওদিক করে তারপর হাত দিয়ে ঠিক করলো।নিরা একটু দূরে দ্বাড়িয়ে দ্বাড়িয়ে ফারদিনের কান্ড দেখছে।কফি পেতে পারি বললো ফারদিন বাড়ির এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে।একটু বসুন আমি নিয়ে আসছি বলে রান্নাঘরে গেলো নিরা।তারপর কফি বানিয়ে নিয়ে এসে ফারদিনকে দিলো।

কফিটা ভালোই বানাও অন্য কিছু পারো আর না পার কফিতে এক চুমুক দিয়ে বললো ফারদিন নিরাকে।চোখ দুটো বড় বড় করে মুখে হালকা রাগ এনে নিরা বললো কি বললেন আপনি?ফারদিন কফিতে আরেকটা চুমুক দিয়ে বললো ,যা বলেছি জোরেই বলেছি শুনতে পাওনি ?না পেলে আমার কিছু করার নাই।কানের চিকিৎসা করাও না হলে অকালে বয়রা হয়ে গেলে বর পাবেনা।নিরা রেগে ফেটে পড়ে বললো,বেশি বেশি বলছেন কিন্তু আর আমি না আপনি চিকিৎসা করায়েন কারণ কারো সাথেতো মিষ্টি করে কথা বলাই জানেননা দেখে মনে হয় তাই চিকিৎসা করান যাতে করে মুখ দিয়ে মিষ্টি মিষ্টি কথা বের হয়।না হলে একটাও মেয়ে পাবেন কি সন্দেহ আছে বৌ হিসেবে পেতে।
আমার কথা তোমার ভাবতে হবে না বলে কফির মগটা টেবিলে রাখলো ফারদিন তারপর নিরাকে বললো আন্টিদের সাথে আমাদের বাসায় যাওনি কেনো?এখন রেডি হয়ে আসো আমার সাথে যাবে।

আপনার সাথে যাবো মানে?আপনি কি আমাকে নিতে এসেছেন নাকি?আর কেনো ?

এতো উত্তর আমি দিতে পারবোনা মিস নিরা।বৃষ্টি কমলেই আমরা বের হবো এটাই ফাইনাল।

আমি যাবোনা আপনি চলে যান।টুনি একা আছে বাড়িতে ।

টুনিতো এর আগেও একা থেকেছে আজ নতুননা তাই টুনিকে নিয়ে ভাবা বাদ দিয়ে আমার সাথে যাবা ওকে।

আপনি এমন আদেশের সুরে হঠাৎ কথা বলছেন কেনো বুঝতে পারছিনা?আপনি আমার কে যে আপনার কথাতেই আমাকে যেতে হবে?

আমি কেউ না আমার সাথে যাবা আর কোন কথা না।এখন দেখো বৃষ্টি কমলো কিনা।

পারবোনা বলে একটা চেয়ারে ফারদিন থেকে অনেকটা দূরে বসে পড়লো নিরা।

ফারদিন বসা থেকে উঠে জানালার কাছে গিয়ে দেখলো বৃষ্টি অনেকটায় কমে গেছে।তারপর টুনিকে ডাকতে শুরু করলো।

টুনি ঘুমাচ্ছে ওকে ডাকার দরকার নাই বলে আবার চুপ হয়ে গেলো নিরা।ফারদিন নিরার কাছে এগিয়ে এসে বললো ,যাও টুনিকে বলে এসো যে তুমি আমার সাথে আমাদের বাড়িতে যাচ্ছো।

পারবোনা আমি আর যাবোনা আপনাদের বাড়ি,আমার ভালোলাগছেনা আপনি যান সবাই হয়তো অপেক্ষা করছে আপনার জন্য।

আচ্ছা পারতে হবেনা আমি ওর ফেসবুকে মেসেজ দিয়ে দিবোনি বাসায় গিয়ে এখন তুমি চলো বলে হাত ধরে টান দিয়ে দ্বাঁড় করালো নিরাকে।তারপর নিরার হাত শক্ত করে ধরে আগে হাঁটতে শুরু করলো।

নিরা আচমকা এমন পরিস্থিতিতে বোবা হয়ে গেছিলো কারণ ফারদিন কোনদিন ওর সাথে এমন আচরণ করেনি।আর তেমন ওর সাথে কথাও বলেনা সে।দেখলেই মনে হয় নিরার উপস্থিতিতে ফারদিন বিরক্ত হয় তাহলে আজ হঠাৎ ওকে জোর করে এভাবে নিয়ে যাচ্ছে কেনো কারণ কি?এসব ভাবা শেষ হলে দেখে ফারদিন দরজার কাছে ওকে নিয়ে দ্বাঁড়িয়ে আছে।

সরি বলে ফারদিন নিরার হাতটা ছেড়ে দিলো তারপর দরজায় তালা দিলো।

আরে এভাবে আমাকে জোর করছেন কেনো বলেনতো বললো নিরা এবার,ফারদিন বললো তুমি যেতে চাচ্ছোনা তাই।চলো তুমি গেলো আম্মা খুশি হবে।ফজিলা বেগমের কথা শুনে নিরা এবার যাওয়ার জন্য রাজি হলো।তারপর ভালোভাবে মাথায় ওরনাটা ঠিক করে বললো এভাবেই যাবো?ফারদিন বললো সমস্যা নাই চলো।নিরা বললো ফোনটা নিয়ে আসি।ফারদিন ওমনি বললো দরকার নাই চলো বলে হাঁটা শুরু করে রিকশা দেখতে লাগলো।নিরাও আর কোন উপায় না পেয়ে চলে আসলো ফারদিনের সাথে।বারান্দায় চেয়ারের ওপর বসে আনমনে এসব ভাবতে ভাবতে কখন চোখটা লেগে গেছিলো নিরার বুঝতে পারেনি।বিকট শব্দে বিজলির আলোতে নিরা চমকে তাকালো চারিদিকে। তারপর ভয় পেয়ে তাড়াহুরো করে রুমে এসে দরজা ,জানালা লাগিয়ে দিলো।আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে।পাশের বারান্দা থেকে একটা ছায়া সরে গেলো আসতে আসতে।

নিহা সারাদিনের খাঁটুনি খেতে বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দিতেই এক ঝাঁক ঘুম তাকে ঘিরে ধরলো।ফয়েজ উৎসদের রেখে এসে দেখে নিহা ঘুমাচ্ছে।নিহাকে আর না ডেকে ওয়াসরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে এসে লাইট অফ করে নিহার পাশে শুয়ে পড়লো।তারপর নিহাকে আরো কাছে নিয়ে এসে কপালে একটা চুমু দিয়ে নিহাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।ঘুমের মধ্যে নিহা উফ শব্দ করে বললো এত শক্ত করে ধরো কেনো লাগছেতো।ফয়েজ নিহার নাকে তার নাকটা হালকা ঘসে কানের কাছে মুখটা নিয়ে গিয়ে বললো ভালোবাসি তাই।নিহা ঠোঁটে মিষ্টি হাসি এনে সেও ফয়েজকে জড়িয়ে জরলো তারপর ফয়েজের বুকে মাথা রেখে গভীর ঘুমে ঘুমালো সাথে ফয়েজ ও একটু পর ঘুমিয়ে পড়লো।

“একদিন ভরা শ্রাবণে ঘনভর বৃষ্টির মধ্য দিয়ে তোমার হাতটি ধরে যাবো ওই অজানাতে।”

ফারদিন বিছানায় শুয়ে শুয়ে একটা ছবির দিকে তাকিয়ে আছে মুগ্ধভাবে আর ভাবছে আগের স্মৃতিগুলো।দিনগুলো কতোই না রঙিন মনে হতো তখন কিন্তু এখন? এখন আর কিছুই ভালো লাগেনা, বেঁচে থাকতে হয় বলেই বেঁচে আছে সে।নাহলে কবেই শেষ করে দিতো এই দেহটাকে।

সকালের মিষ্টি বাতাসে পাখির কিচিরমিচির শব্দে নিজেকে রাঙাতে ভালোই লাগে ।আজকের সকালটা নিরার কাছে খুব স্নিগ্ধ লাগছে।রাতে বৃষ্টি হওয়ার কারণে সব কিছু সজিব হয়ে আছে একদম।ধোঁয়া ওঠা এক কাপ চা নিয়ে বারান্দায় বসে বসে প্রকৃতির রুপ দেখে যাচ্ছে নিরা।আজ আর কলেজ যাবেনা সে তবে এ বাড়ি থেকে ওদের বাড়ি গিয়ে মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিউ মার্কেট যাবে সে তিশাকে সাথে নিয়ে এটাই ভাবছে এখন সে।হুম তাই করবে নিউমার্কেটেই যাবে এটাই আজকের জন্য ফাইনাল ।

চলবে।

বানান ভূল থাকলে ধরিয়ে দিবেন ,একটানা লিখে আর পড়তে ইচ্ছে করছেনা তাই ভূল হয়ে গেলে কেউ কিছু মনে করবেননা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here