ভ্যাম্পায়ার_কুইন# #সিজন_2# পর্বঃ০২

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ০২
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমার দুই বোন আমার জামাকাপড় সব গুছিয়ে দিয়েছে। কিছু বই ও সাথে করে দিয়েছে। এই বইগুলো আমি আগে কখনো পড়ি নি। আম্মা বইগুলো পরে পড়তে বলে দিয়েছেন। জানি না বইগুলোর মধ্যে কি আছে। কিন্তু আমি আপাতোতো উত্তেজিত আমার বাসার সামনে আসা নতুন যানবহনটা দেখে। এটা সাধারনত মিলিটারিতেই ব্যবহার করা হয়। আট চাকার ম্যাজিকাল যান এটা। এটার আকার অনেক বড় হওয়ায় এটার মধ্যে একসাথে প্রায় পঞ্চাশ জনের মতো যাতায়াত করা যাবে। আমি আমার বোন এবং আম্মাকে বিদায় জানিয়ে বাহনে উঠে পরলাম। বাহনটার সাথে আমার স্পর্শ লাগা মাত্রই সব হঠাৎ থমকে গেলো। আমি কিছুক্ষনের মতো নরতে পারলাম না। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো এটা সবার সাথেই হচ্ছে, কিন্তু আমার থমকে যাওয়া দেখে আমাকে যে অফিসার নিতে এসেছে সে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বলতে লাগলো,
.
–বাছা তুমি তোমার বাসায় যাচ্ছো না যে তোমাকে ফরমালিটি জানিয়ে আমরা গাড়িতে তুলবো, মিলিটারি স্কুলে ভর্তি হতে যাচ্ছো সকলে, তাই নিয়ম কানুন না মানলে অবশ্যই কপালে খারাপ আছে।(অফিসারটা)
।।।
।।।
আমি ভয়ে কোনো রকম ঢোক গিলে বাহনে গিয়ে উঠলাম। ভিতরে আমার বয়সী অনেক ছেলেরা আছে। অবশ্য আমি কোনো মানুষ দেখতে পাচ্ছি না। আমার এমনিতেই অপরিচিত কারো সাথে কথা বলতে সমস্যা হয়। যেহেতু আমার মেমোরী এক মাস আগের সব ভুলে গেছি তাই সঠিক মনে করতে পারছি না আমি কেমন ছিলাম। কিন্তু আমার দুই বোনের থেকে যতটা শুনেছি তার হিসাবে, আমি কারো সাথেই কথা বলতে পারি না। বিশেষ করে অপরিচিত কারো সাথে তো একদমই না। যার জন্য আমার দুই বোন ছাড়া আমার আর কোনো বন্ধুই নেই। অবশ্য যেদিন আমি ময়লার স্তপের উপরে পরে ছিলাম সেদিন আমি একটা বন্ধু বানাবো বলে বাসা থেকে বের হয়েছিলাম। কিন্তু তারপর আর কি হয়েছে সেটা আমার বোনেরা জানে না, তবে তাদের মতে হয়তো কেউ আমাকে গুরুতর আহত করে ময়লার উপরে ফেলে রেখেছিলো।।। সে যাইহোক আমার মনের ভাবনা বাদ দিলাম কিছু সময়ের জন্য। আমার সাথে রয়েছে আরো উনপঞ্চাশ জন, এরা সবাই আমার মতো মিলিটারিতে ভর্তি হবে, অবশ্য সঠিক করে বললে মিলিটারি স্কুলে ভর্তি হবে, স্কুল থেকে ট্রেনিং শেষ করে যারা পাশ করবে তারা সকলে মিলিটারিতে ভর্তি হতে পারবে। আর এখানে শুধু আমি একা মিনিস্টারের ছেলে নই, বরং আমার মতো দুই হাজার মিনিস্টারের ছেলেরা আসবে। আমি কখনো ধারনা করিনি আমাদের রাজ্যে এতো গুলো শহর থাকবে। অনেক শহর থেকে দুই তিনজন করেও নেওয়া হয়েছে, কারন কিছু কিছু শহর আছে যেখানে মিনিস্টারের পরিবারে পাঁচ বছরের মতো কেউ নেই।
।।।
।।।
সে যাইহোক আমি সকলের চোখে ভাইপার দেখতে পেলাম। তার প্রধান কারন আমি এখানে একা মানুষ। তাদের মধ্যে বেশীর ভাগই বিস্টম্যান(এরা দেখতে অনেকটা ভাল্লুকের মতো। তবে এরা মানুষের মতো চলাচল করতে পারে। এরা মনস্টারদের শাখায় পরে) তাদের শরীরে ভাল্লুকের মতো অনেক লোম থাকে। এছাড়া তাদের হাতের নখ গুলো অনেক মারাত্মক হয়। বিশেষ করে তাদের চোখ গুলো সেই মারাত্মক। এরা সাধারনত শারিরীক দিক দিয়ে অনেক শক্তিশালী হয়। এদের ম্যাজিক সাধারনত এদের শরীরকে রক্ষা করতেই কাজে লাগে। আর এরা আক্রমন নিজেদের শারিরীক শক্তি দিয়েই করে। শুধু শারিরীক কোনো লড়াই হলে মানুষেরা সাথে সাথে হেরে যাবে এদের সাথে। যেহেতু এরা ম্যাজিক দিয়ে তেমন আক্রমন করতে পারে না, তাই এরা শক্তিশালী ম্যাজিক ব্যবহারকারী মানুষদের কাছে খুব সহজেই হেরে যায়। এজন্য কোনো বিস্টম্যানই মানুষদের সহ্য করতে পারে না। তবে তাদের মধ্যে কিছু ব্যতিক্রম আছে। এখানে শুধু বিস্টম্যান নয় বরং কিছু ডয়ারফস ও আছে। এরা আকারে বেটে হয়। এরা কোনো লড়াইতে যেতে যায় না। এদের শারিরীক শক্তি অনেক থাকার পরও এদের ম্যাজিক পাওয়ার শুধু অস্ত্র বানানোর জন্য কাজে দেই বলে ডয়ারফসরা তাদের সারা জীবন অস্ত্র বানানোতে কাটিয়ে দেই। অবশ্য অনেকে সাধারন জীবনও কাটায়।
।।।
।।।
এখানে কিছু এল্ফস ও আছে। এল্ফসদের আকার সাধারনই। কিন্তু এরা মানুষদের থেকে অনেক ফর্সা হয়। এদের মধ্যে সবার গায়ের রংই উজ্জল সাদা হয়। এদের শারীরিক ক্ষমতা মানুষদের থেকে বেশী, বিশেষ করে লাফানোর দিক দিয়ে এরা অনেক দ্রত। এদের ধরতে পাওয়া অনেক কষ্টকর। এদের ম্যাজিক পাওয়ার মানুষের মতো হলেও, এদের ম্যাজিক এনার্জি বেশী। এর ফলে এরা মানুষের থেকে বেশীক্ষন ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারে।
।।।
।।।
তাছাড়াও আমি কয়েকজন ভাইকিংস দেখতে পেলাম। এরা দেখতে মানুষের মতো হলেও এদের শরীরে আকারটা একটু আলাদা, এদের বুক অনেক চওড়া হয়ে থাকে। এদের শারিরীক ক্ষমতাই সবচেয়ে বেশী। ম্যাজিকাল পাওয়ার মানুষদের থেকে অনেক কম এদের। তবে এরা ডয়ারফসদের অস্ত্র ব্যবহার করে অনেক মারাত্মক হয়ে যেতে পারে।
।।।
।।।
আর এখানে সবার মাঝে আমি বসে আছি। আমি একজন মানুষ। মানুষেরা শারিরীক দিক দিয়ে অনেক দুর্বল হয়। কিন্তু অনেক কঠিন ট্রেনিং এর পর অনেকটা শক্তিশালী হয়ে উঠে তারা। এবং তাছাড়া ম্যাজিকের দিক দিয়ে মানুষেরা অনেক দুর্বল। কিন্তু ট্রেনিং এর ফলে শক্তিশালী হয়ে উঠে। সব মিলিয়ে মানুষদের অনেক বেশী চেষ্টা এবং ট্রেনিং করতে হয় শক্তিশালী হয়ে উঠার জন্য। কারন এটা এমন জায়গা যেখানে শক্তিশালী না হলে কেউ দাম দেই না। আমি মানুষ হলেও আমার কথা আলাদা। আমি কারো সাথে কথা বলতে পারি না। কথা বলতে গেলেই আমার দু পা কাপতে থাকবে। এবং আমি এই ম্যাজিকের দুনিয়ায় কোনো রকম ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারি না। কিন্তু আজব একটা জিনিস হলো, আমি ম্যাজিক দেখতে পারি। একটা জিনিসই আমি বুঝি না যদি ম্যাজিক ব্যবহার করতে নাই পারি, তাহলে সেটা দেখে কি লাভ হবে আমার। এটা অনেকটা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেওয়ার মতো। অবশ্য এখন আমি অন্য শাখার প্রানীদের সাথে মিলে যাচ্ছি মিলিটারিতে। সেখানে তারা আমাদের ট্রেনিং দিবে। আমি খুব নার্ভাস ফিল করছি। দেখা যাক কি হয় সামনে।
।।।।
।।।।
আজ পুরো পাঁচটা বছর সময় পার হয়ে গেছে। পাঁচ বছর আগে সেই যানবাহনে করে আমি আমার বাসা থেকে এসেছি, এখন পর্যন্ত আমি বাসায় যেতে পারি নি। অবশ্য এখানে সকলের পরিবার দেখতে আসে। কিন্তু পাঁচটা বছর হয়ে গেলো আজ পর্যন্ত আমার আম্মা কিংবা আমার দুই বোনের একজনও আমাকে দেখতে আসে নি। এখন আমার তাদের জন্য চিন্তা হচ্ছে। তাদের সাথে যদি খারাপ কিছু হয়ে যায় তাহলে আমি একা এই দুনিয়ায় কি করবো।
।।
।।
কালকে সকালে আমাদের মিলিটারি স্কুলের ট্রেনিং শেষ হবে। দুই হাজার ছেলে মেয়ের মধ্য থেকে মোট পাঁচশো জনকেই এখানে রাখা হবে, আর বাকি সবাই বাসায় চলে যাবে, তাদের জন্যও একটা সুযোগ থাকবে। তাদের বয়স ষোলো হলে তারা বর্ডার গার্ড পদে যোগ দিতে পারবে। আর কালকে যে পাঁচশো জন সিলেক্ট হবে তারা সাধারন সৈনিক থেকে উচ্চ পদে থাকবে। এরা এদের কাজ হিসাবে আস্তে আস্তে জেনারেল পর্যন্ত পদোন্নতি করতে পারবে। তাছাড়া রাজার পরিবারের রয়েল গার্ড হিসাবেও যোগ দিতে পারবে।
।।।
।।।
অবশ্য আমি আমার হাল ছেড়ে দিয়েছি। আমাকে কালকেই সব কিছু গুছিয়ে বাসায় চলে যেতে হবে। এ পাঁচটা বছর আমি কিছুই শিখতে পারি নি। কোনো ট্রেনিং আমি পাশ করতে পারি নি। শারিরীক ট্রেনিং গুলো শুরু করতে গিয়েই আমি বেহুস হয়ে যেতাম। ম্যাজিক তো আমি ব্যবহারই করতে পারি না, তাই ম্যাজিকাল ট্রেনিং এ আমাকে এক কোনায় বসে থাকতে হতো। শুধু একটা জিনিসেই আমি সবচেয়ে পারদর্শী ছিলাম সেটা হলো বই-খাতায়। লেখা পড়ার সাবজেক্টটায় আমি সবসময় টপে ছিলাম। কিন্তু আমি নিজেই জানি আমি এখানে সৈনিক হওয়ার জন্য এসেছি। আমার মাঝে শারিরীক, ম্যাজিকাল কোনো ক্ষমতাই নাই। আমি শুধু একটা জিনিসই পারি সেটা হলো আমার মাথা কাজে লাগাতে। কিন্তু সৈনিক হতে সেটার প্রয়োজন পরে না। আমাদের যারা ট্রেইন করেছে তারা সকলেই আমাকে বাসায় চলে যাওয়ার কথা বলেছিলো, কিন্তু আমি আমার আম্মা এবং বোনের কথা ভেবে এতোদিন এখানে ছিলাম। এই আশায় ছিলাম যে একদিন আমি ঠিকই শক্তিশালী হবো, একদিন ঠিকই আমি ম্যাজিক ব্যবহার করবো। কিন্তু ভিতরে ভিতরে আমি ঠিকই বুঝেছিলাম আমাকে এখান থেকে ঠিকই চলে যেতে হবে। ঘুমিয়ে পরলাম আমার সকল ব্যাগ ট্যাগ গুছিয়ে। পাঁচটা বছরে আমি এখানে একটা বন্ধুও বানাতে পারি নি। অবশ্য আমার কথা না বলার কারনে নয় সেটা। মানুষ বাদে কেউ আমার সাথে বন্ধুত্ব করে নি কারন আমি একদম দুর্বল। সবাই আমার মজা নিয়েছে। আমাকে দিয়ে সকল কাজ করিয়ে নিয়েছে। আর আমার মতো মানুষেরা তো আমার প্রতি রাগে আমাকে অত্যচার করেছে। তাদের কথা হলো আমি মানুষ নামে কলঙ্ক। আমি মানুষদের নাম খারাপ করছি এখানে থেকে।
।।।।
।।।।
সব কথা ভাবতে ভাবতে আমি অনেকটা ডিপ্রেশনে চলে গেলাম। জানি না কি করবো আমি। কিছু করার ও নাই আমার। সামনে যা হবার দেখা যাবে। কালকে আমাকে বাসায় চলে যেতে হবে। পাঁচ বছর পর আমার আম্মা এবং বোনদের দেখবো আমি। তাদের অনেক মিস করেছি আমি এতোদিন। এখান থেকে কাল চলে গেলে আর কোনো নিয়ম মানতে হবে না আমাকে। আমি ঘুমিয়ে গেলাম টেবিলের উপরেই। কালকে সকালে তারাতারি উঠতে হবে আমাকে।
।।।
।।।
সকালে সবাই প্রস্তুত হয়ে আমাদের নিজেদের ইউনিটে চলে গেলাম আমরা। পুরো দুইহাজার ছেলে মেয়েকে পাঁচটা ইউনিটে ভাগ করে এক এক ইউনিটে চারশো জন করে দিয়েছে। আবার এক একটা ইউনিটকে চারটা করে সাবইউনিট করে এক একটা সাবইউনিটে একশো করে নিয়ে ট্রেইন করেছে আমাদের পাঁচ বছর। অবশ্য আমাদের ট্রেনিং এখনো শেষ হয় নি। পাঁচটা ইউনিট থেকে পাঁচশোজন সিলেক্ট করে তাদের আবার ছয় বছর স্পেশাল ট্রেনিং দিবে। এরপর তারা পুরোপুরো মিলিটারি হয়ে যাবে। এদের মধ্য থেকে টপ বিশজন নিজেদের পছন্দ মতো যে কোনো একটা পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারবে। মোটকথা সেই বিশজন নিজেদের মতো যে কোনো পদে ঢুকতে পারবে। তবে সেখানে সিমীত কয়েকটা পদ রয়েছে তার মধ্যে তাদের সিলেক্ট করতে হবে। সে যাইহোক একটু পরেই আমাদের চারশো জনের ইউনিট থেকে একশো জনকে সিলেক্ট করা হবে। এবং আমি সহ বাকি তিনশো জন চলে যাবো বাসায়। আর বাকি একশোজন এখানেই থেকে যাবে। আমরা সবাই একশোজন করে মোট চারটা লাইন করে দাড়িয়েছি। এবার এক এক করে আমাদের ট্রেইনার অফিসার হাতারু মস একশো জনের নাম নিতে লাগলো। এক এক করে মোট একশোজনের নাম বলার পর তিনি বলতে লাগলেন,
.
–এবার যাদের নাম বলা হয় নি তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, তোমরা একদম ভালো করেছো। অবশ্য আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো তোমরা যারা পাশ করতে পারো নি তাদের এখানেই মেরে ফেলা। কিন্তু পরে প্লান চেন্জ করতে হয়েছে। সবাইকে তিন ঘন্টার সময় দেওয়া হবে এর মধ্যে এই মিলিটারি জোন ক্লিয়ার করে চলে যাবে। যদি এই সময়ের মধ্যে তোমাদের কারো চেহারা দেখতে পাওয়া যায় তাহলে এই দুনিয়াকে বিদায় জানাতে হবে।(অফিসার)
।।।।
।।।।
অফিসারের কথা শুনে সবাই হইচই লাগিয়ে দিলো। যারা সিলেক্ট হয়নি তারা ছোটাছুটি করতে লাগলো, আমি কিছুক্ষনের জন্য ভুলে গিয়েছি আমার নামও তো একশো জনের মধ্যে সিলেক্ট হয় নি। তার মানে আমি এখানে থাকলে আমাকেও মেরে ফেলবে। আমাকে এখানে থেকে তারাতারি বের হতে হবে। কিন্তু আমার মনে পরলো আমাদেরকে এমন একটা জায়গায় এনে রাখা হয়েছে যেখান থেকে কেউ হেটে দুই দিনের আগে মিলিটারি জোন থেকে বের হতে পারবে না। চারিদিকে শুধু বন আর বন। আর মিলিটারি জোন কয়েক মাইল বন এলাকার মধ্য নিয়ে। আর আমরা সবচেয়ে মাঝখানে আছি। আমরা শেষ মেষে এটা কখনো আশা করি নি। সাথে সাথে আবার মাইকের শব্দ শোনা গেলো। সব ছেলে মেয়ে থেমে গেলো।
.
–অফিসার হাতারু মসের কথা ইগনোর করো সবাই। তিনি আসলে মজা করছিলেন। আমি এই মিলিটারি স্কুলের প্রিন্সিপাল। মজা না করে সোজা পয়েন্টে আসা যাক। পাঁচশো জন সবগুলো ইউনিট থেকে সিলেক্ট হয়েছে আমি তাদের সবাইকে টেলিপোর্ট করে নিয়ে যাচ্ছি আমার সাথে। আর বাকি তোমরা যারা সবাই আছো তারা এখানে থাকতে পারো কিংবা চলে যেতে পারো, তবে একটা কথা বলে রাখি ঠিক এক ঘন্টা পরে এখানে আসল মিলিটারি সেনা থেকে দুইশো সৈনিক আসবে। এবং মিলিটারি জোনের ভিতরে তারা যাদের পাবে তাদেরকে মেরে ফেলবে। তবে তোমাদের মধ্য থেকে যদি একজনও মিলিটারি জোনের বাইরে বের হতে পারো, তাহলে ভিতরে যারা বেঁচে থাকবে তাদেরকে আর কিছু করা হবে না। তারা নিজেদের জীবন বাঁচিয়ে এখান থেকে বের হতে পারবে। তো সময় না নষ্ট করে পালানোর জন্য রেডি হয়ে যাও সবাই। আগে নিজের জীবন পরে সব কিছু। পরিবারকে আবার দেখতে চাইলে সম্পূর্ন চেষ্টা করো।(প্রিন্সিপাল)
।।।
।।।
আমি আর নরতেই পাচ্ছি না। সবাই দৌরাতে দৌরাতে আমাকে কখন মাটিতে ফেলে দিয়েছে আমি সেটা বুঝতেই পারি নি। আমার সব কিছু থেমে গেছে। হয়তো এটাই আমার শেষ সময়। মাত্রই যারা পাশ করেছে তারা টেলিপোর্ট হয়ে গেছে। আর বাকি সকলে দৌড়াচ্ছে নিজেদের জীবন বাচাতে। কেউ কেউ জিনিসটা মজা মনে করে এড়িয়ে চলছে। কিন্তু বেশীরভাগই জীবনের চিন্তায় দৌড়াচ্ছে। আমি অনেকটা আহত হয়েছি সবার পায়ের নিচে পরে। কোনো রকম উঠে দাড়ালাম আমি। আমাকে প্রথমে আমার রুমের মধ্যে যেতে হবে। আমি বুঝতে পারছি না কেনো আমাদের মারতে চাচ্ছে এরা। কিন্তু যদি সত্যি আমাদের মারতে চাই তাহলে আমি কখনো এখাম থেকে বেঁচে ফিরতে পারবো না। আমার ম্যাজিকাল ক্ষমতা নেই কোনো, ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারি না কোনো। তাছাড়া শারিরীক ভাবে আমি অনেক দুর্বল। ভয়ের কারনে আমার মাথাও কাজ করছে না। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। সবাই এলোমেলো চারিদিকে দৌরিয়ে চলে গেছে জোনের বাইরে যাওয়ার জন্য। এজন্য আমাদের থাকার হোস্টেল একদম ফাকা। আমি দেওয়ালে ভর করে হেটে হেটে আমার রুমের মধ্যে প্রবেশ করলাম। আমার ব্যাগটা আমার কাধে নিলাম। যেভাবেই হোক আমাকে এখান থেকে বেঁচে বাসায় ফিরতে হবে। আমি এখানে মরতে পারি না এভাবে। আমাকে এই দুনিয়ার সমস্ত রসহ্য বের করতে হবে। আর সেটার জন্য দুনিয়ার সমস্ত বই পড়তে হবে আমাকে। এখানে মরলে আমার চলবে না। আমি আমার আহত শরীরটা নিয়ে কোনো রকম হাটতে হাটতে বনের মধ্যে চলে গেলাম। এবার মাইলের পর মাইল আমাকে হাটতে হবে। জায়গাটা কত বড় এটা সঠিক করে আমাদের বলে নি কেউ। তাই আমাকে অনুমান করে এখান থেকে যেতে হবে। আমার শারিরীল ক্ষমতা কিংবা ম্যাজিকের ব্যবহার এখানে কাজে দিবে না, কারন আমি দুইটা ব্যবহার করতে পারি না। আমার কাছে একটাই রাস্তা, আমাকে যে করেই হোক আমার মাথা কাজে লাগিয়ে এখান থেকে বের হতে হবে। অফিসাররা মজা করছে না সত্য বলছে সেটার উপরে ভরসা করে লাভ নেই, সবচেয়ে তারা মিলিটারি, তারা কোনো কিছুই করতে পারে। বর্তমানের রাজার কারনে আমাদের রাজ্য আগের থেকে অনেক পাল্টে গেছে। রাজা সবকিছুই জেনারেলের উপরে ছেড়ে দেই। নতুন আইন, শাসন সব জেনারেলই করে থাকে। রাজা শুধু নাম মাত্রই। অবশ্য আমি শুনেছি আমাদের রাজা এবং জেনারেল দুজন আপন ভাই। জিনিসটা নিয়ে এখন ভাবলে চলবে না। আমাকে মিলিটারি জোনের বাইরে বের হতে হবে, নাহলে আমি আমার পরিবারকে আর দেখতে পারবো না।
।।।।।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
।।।।।
কেমন হলো অবশ্যই জানাবেন। আর হ্যা শেয়ার করবেন ভালো লাগলে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here