ভ্যাম্পায়ার_কুইন# #সিজন_2# পর্বঃ৪০

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৪০
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমি আমার দুই বোনের সাথে কথা বলে যেটুকু জানতে পারলাম যে স্কাই ড্রাগন এবং থান্ডার ড্রাগন দুটোই আমাদের নানার কাছে ছিলো, এবং সেটা এলেন এবং এলিনকে সেই গিফট করে। এর আগেও আমার মনে হয়েছিলো আমি ইগড্রাসিল এবং ভ্যালির মতো ট্যাটো অন্য কারো কাছেও দেখেছি, আমার স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়ার ফলে আমি সঠিক ভাবে জিনিসটা মনে করতে পারি নি। এলেন এর হাতে বোল্ট এর ট্যাটু রয়েছে এবং এলিন এর হাতে রাইকুয়ার। রাইকুয়ার বাতাসের ক্ষমতা এবং বোল্টের থান্ডার ক্ষমতা মিলে একটা নতুন ক্ষমতা তৈরী করে যেটা ড্রাগন ব্যারিয়ার। এটার মধ্যে ড্রাগন ক্ষমতা ছাড়া অন্য কোনো ম্যাজিক কাজ করে না। আর এই শহরকে সুরক্ষিত রাখতে এলিন এবং এলেন দুজনেই ড্রাগন ব্যারিয়ার ব্যবহার করেছিলো।
।।।
।।।
তবে আমি একটা জিনিস বুঝতে পারছি না। এই শহরকে সুরক্ষা করে লাভ কি? যদিও এখানে অধিকাংশ মানুষ, তারপরও এই মানুষরা একে অপরকে দেখতে পারে না। আমার বর্তমান সহজাত হিসাবে আমি তাদেরকে শ্রদ্ধা করতে চাই, কিন্তু তাদের স্বভাব মোটেও ভালো না। আমি কিছু ক্ষনের জন্য বাসা থেকে বের হয়েছি থরের সাথে। যেহেতু বাসায় দুজনের সংখ্যা বেড়ে গেছে এখন, তাই আমাকে এখন যেতে হবে কিছু পন্য কিনতে। বাসার কাজ করার অভ্যাস ছিলো আগের দুনিয়াতে পৃথিবীতে। অনেক কাজই করতে হয়েছে। তখন যে পরিবারে ছিলাম আমি, একটা ছোট বোনও ছিলো, কিন্তু আমায় মোটেও দেখতে পারতো না। পৃথিবীর কথা মনে পরতেই আমার বন্ধু আবিরের কথাও মনে পরে গেলো। পৃথিবীতে একটা মাত্র বন্ধু ছিলো যে কিনা সব সময় আমার পাশে ছিলো। যদিও অন্য সবাই আমাকে অন্য রকম ভাবতো। আমি এখন বুঝতে পেরেছি সবাই আমাকে খারাপ চোখে দেখতো না বরং তারা আমাকে ভয় পেতো। এবং এরিয়ে চলতো আমাকে। আমি আগের দুঃখজনক দিনগুলো ভুলো হাটা শুরু করলাম। বাসার বাইরে বের হওয়ার পরে বাইরের সব ভাঙচুর দেখতে পেলাম। জেসির সাথে লড়তে গিয়ে এখানে সব কিছু ভেঙে চুরে গেছে। মনে হয় না আশে পাশে কেউ আছে।
.
–এরকম জায়গায় তোমার পরিবার কিভাবে আছে?(থর)
.
–মানুষেরা স্বাধীন ভাবে সব জায়গায় থাকতে পারে না। তবে এখানে মানুষেরা কিছুটা স্বাধীন, তাই সবার মাঝে রুগ্নতাও একটু বেশী।(আমি)
.
–শহরটা তো অনেক বিশাল। কিন্তু সেই হিসাবে কোনো উন্নতি নেই এখানে।(থর)
.
–এর কারন এখানের মানুষেরা অন্য কারো সাথে একত্রে থাকতে পছন্দ করে না।(আমি)
.
–আমি যতটা বুঝতে পারছি প্রতিটা শহর নিয়ন্ত্রন করে মিনিস্টার। শহরের উন্নতি এবং জনগনের সুরক্ষা সবই মিনিস্টারের দায়িত্ব। এখন মিনিস্টার যদি এসব কাজ ঠিক মতো না করে তাহলে উন্নতি হবে কিভাবে?(থর)
.
–মিনিস্টার?(আমি)
।।।
।।।
থরের কাজ থেকে মিনিস্টার কথাটা শুনে মনে পরলো আমার আম্মা এই শহরের মিনিস্টার। যদিও এটা আমি এলিন এর থেকে শুনেছি। আমার আম্মা যদি মিনিস্টার হয়ে থাকেন, তাহলে তার তো কর্তব্য এই শহরের উন্নতি করার। কিন্তু সে সেটা না করে কি করে আমি বুঝতে পারছি না। তার সব টা সময় সে বাইরেই থাকে। কোথায় থাকে এটা এলিন এবং এলেনও বলতে পারে না। যাইহোক সেই রহস্যও আস্তে আস্তে বের করা যাবে। প্রথমে আমাকে কিছু খাবার পন্য কিনতে হবে। আমি হাটতে হাটতে অনেকটা দূরে চলে এসেছি। তবে একটা জিনিস আমাকে এখনো ভাবাচ্ছে জেসিকে যদি ডেভিল কিং এখানে আসার জন্য অর্ডার করে, তাহলে ডেভিল কিং আমার আম্মাকে দিয়ে কি করতে চাই, হয়তো আমার আম্মার কাছে কিছু স্পেশাল জিনিস আছে, যেটা শুধু সেই জানে। সব কিছুতে আপাতোতো আমার ব্রেইন আটকে যাচ্ছে।
।।।
।।।
আমি থরের সাথে আমাদের বাসা থেকে অনেকটা দূরে চলে এসেছি। এই শহরটার মধ্যে বেশীরভাগই মানুষ। অন্য গোত্রের প্রানীও আছে। তবে মানুষের সংখ্যা এখানে বেশী। যদিও মানুষের ক্ষমতা এখানে, তারপরও মানুষেরা অন্য গোত্রের প্রানী দেখে ভয় পাই। যেমন কোনো বিস্টম্যান যদি একটা মানুষকে কোনো কিছু করতে বলে, তাহলে সেই মানুষটা সেটাই করে।
।।।
।।।
আমরা হাটতে হাটতে মার্কেটের মতো জায়গায় চলে এসেছি। এখানে কিছু সামান্য জিনিস নিয়ে অনেকগুলো দোকান তৈরী হয়েছে। একটা সাইনবোর্ড টানানো রয়েছে, যেখানে লেখা, “মানুষ বাদে অন্য গোত্রের জন্য সাধারন দামের অর্ধেক দামে পন্য বিক্রয় হবে।”
.
–জায়গাটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে এখানে মানুষের গুরুত্ব তেমন নাই।(থর)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছি। আমার এজগার্ড আমি এখানেই তৈরী করবো। এবং এখানে সকল গোত্রের সমান অধিকার থাকবে।(থর)
.
–এটা কোনো কথা?(আমি)
.
–কেনো?(থর)
.
–ইগড্রোলিয়া আপনাকে এমনি এমনি একটা শহর দিয়ে দিবে বলে আমার মনে হয় না।(আমি)
.
–সেটার চিন্তা তোমাকে করতে হবে। প্রথমে ড্রাকুলা তার রাজ্যের নাম ছড়ালেই আমার কাজ ও হয়ে যাবে।(থর)
.
–ড্রাকুলার কথা শুনে মনে পরলো আমাদের তো ড্রাকুলার কাছে যাওয়ার কথা ছিলো?(আমি)
.
–সেটা নাহয় পরেই যাওয়া যাবে। প্রথমে তোমার বোনের রান্না করা খাবার তো খেতে হবে।(থর)
.
–মনে লাড্ডু ফুটছে?(আমি আস্তে আস্তে বল্লাম)
।।।
।।।
আমরা মার্কেটের মধ্যে আশার পরে সবাই চুপ হয়ে গেছে। শহরে আসার সময় সবাই খারাপ নজরে আমাদের দিকে তাকাচ্ছিলো। কিন্তু এখন আমাকে দেখে সবাই ভয় পাচ্ছে। আমি জানি না কেনো, কিন্তু সবার চোখে ভয় দেখতে পাচ্ছি। একটা দোকানের সামনে গেলাম যেখানে আমাদের পন্য দেখতে পেলাম যেটাকে নিতে এসেছি আমরা। দোকানদারকে দেখতে পেয়ে আমি অবাক হয়ে গেলাম। একটা ছেলে যে দেখতে ঠিক আবিরের মতো। আমার সেই একটা মানুষ বন্ধু যে পৃথিবীতে হয়েছিলো। আমি ওর দিকে কিছুটা তাকিয়ে ছিলাম। কিন্তু তার কথায় হুস ফিরলো,
.
–স্যার কি লাগবে আপনার?
।।।
।।।
আমি ওকে দেখে অবাক হয়ে আছি। এই দুনিয়াতে এভাবে দেখা হবে বুঝতে পারি নি। বয়স আমার থেকে এক দুই বেশী হতে পারে এটাই শুধু পার্থক্য। যাইহোক ওর চোখেও আমি ভয় দেখতে পেলাম। ভিতর থেকে একটা মেয়ে বেরিয়ে আসলো। যাকে দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম। মেয়েটা হৃদি যে কিনা আমার আগের দুনিয়ায় পৃথিবীতে যে পরিবারের কাছে বড় হয়েছি সেই পরিবারের বোন। যদিও তার প্রতি আমার টান অনেকটা ছিলো বড় ভাই হিসাবে। কিন্তু আমাকে কিছুতেই দেখতে পারতো না ও। যাইহোক আমাকে দেখতে পেয়ে ও ভয় পেয়ে গেলো। বুঝতে পারলাম না আমাকে দেখে এভাবে সবাই ভয় পাচ্ছে কেনো?
.
–এই দোকানদার?(আমি)
.
–হ্যা স্যার।
.
–নাম কি তোমার?(আমি)
.
–আবির স্যার।(আবির)
.
–তো আমাকে দেখে সবাই এভাবে ভয় পাচ্ছে কেনো?(আমি)
.
–এমনি স্যার।(আবির)
.
–এমনি মানে। আমার মাথা খারাপ করবে না।(আমি আবিরের কলার ধরে)
।।।
।।।
আমি আবিরের কলার ধরায় পাশ থেকে হৃদি কথা বলতে লাগলো। যদিও আগের দুনিয়ায় ওর সাথে একটা সম্পর্ক ছিলো আমার। কিন্তু এখানে ও আমাকে চিনেই না। তাই সেরকম ফিল করে লাভ হবে না। যাইহোক হৃদির ভাব দেখে বুঝতে পারলাম সে আবিরের স্ত্রী।
.
–স্যার ওকে মারবেন না। ওর কোনো দোষ নেই এতে।(হৃদি)
.
–দোষ?(আমি)
.
–আমরা আপনাকে মারতে চাই নি তখন। সেটা তো বাকি লোকেরা মিলে প্লান করেছিলো।(হৃদি)
.
–আমাকে মারার কি বলছো সেটা সঠিক করে বলো?(আমি আবিরের কলার ধরে বল্লাম)
.
–আপনিই কি আমাদের মিনিস্টার এর ছেলে?(আবির)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–অনেক বছর আগে যখন আপনার বয়স পাঁচ বছরের কাছাকাছি তখন এই শহরের অনেক লোকজন মিলে প্লান করে আমাদের মিনিস্টারের ছেলে মানে আপনাকে মেরে ফেলবে। আর তারা সেটাই করে। আপনাকে মেরে শহরের ময়লার স্তূপের মধ্যে ফেলে আসে সবাই। কিন্তু রহস্যজনক ভাবে আপনি বেঁচে যান এবং এই শহর থেকে চলে যান মিলিটারি স্কুলের উদ্দেশ্যে। আর এখন যখন আপনি একজন রয়েল গার্ড হয়ে ফিরে এসেছেন, তাই সবাই ভয় পাচ্ছে তাদের জীবন নিয়ে।(আবির)
.
–ওওওও। চিন্তার কারন নেই। আমি সেটার জন্য কারো উপরে রেগে নেই। বিশেষ করে আমার সেই স্মৃতিই নেই, তাই কাউকে প্রতিশোধের চিন্তা আসছে না মাথায়।(আমি)
।।
।।
আমি আবিরের কলার ছেড়ে দিলাম।
.
–তো জ্যাককে মারার প্লান করেছিলো কেনো সবাই? এতে তাদের লাভ হবে কি?(থর)
.
–তারা মিনিস্টারকে দেখতে পারে না। এই মিনিস্টার কোনো দিক দিয়েই মিনিস্টার হওয়ার যোগ্য না তারা এটা মনে করতো। অনেকে না খেয়ে মরতে ছিলো। আর বরাবরের মতো মিনিস্টারের কোনো খোজ পাওয়া যেতো না। অনেকে প্রতিশোধের জন্য আপনার দুই বোনের উপরে হামলা করার চিন্তা করে, কিন্তু তাদের কাছে এমন শক্তিশালী ক্ষমতা ছিলো যে তারা কাছেও যেতে পারে নি। এরপর তারা সবাই মিলে ম্যাজিক ছাড়া আপনার উপরে হামলা করে।(আবির)
.
–ওওওও। আচ্ছা ঠিক আছে। আমাকে আমার পন্য গুলো দিয়ে দাও।(আমি)
।।।
।।।
আমি আমার হাতে থাকা কাগজ দেখালাম যেখানে কি কি নিতে হবে সেটা লেখা। আবির সবকিছু দিয়ে দিলো। সে আমার থেকে কোনো অর্থ নিতে চাচ্ছিলো না। কিন্তু আগের দুনিয়ার বন্ধুত্ব এবং বোনকে দেখে আমি আমার ব্যাগ থেকে পন্যের দামের একশোগুন বেশী অর্থ আবিরের হাতে তুলে হাটতে লাগলাম।
।।।
।।।
আমি এতোক্ষন ভাবছিলাম আমার লড়াই দেখে হয়তো ভয় পাচ্ছে এরা। কিন্তু কাহিনী যে এটা হবে বুঝতে পারি নি। যাইহোক সব মিলিয়ে বুঝতে পারলাম আমার আম্মা মিনিস্টারের কোনো দায়িত্বই পালন করে না। সে কি করে এটাও আমাকে বের করতে হবে। কিন্তু সব তারাতারিই করতে হবে। কারন ড্রাকুলার কাছেও আমাকে যেতে হবে।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
অপেক্ষা করুন পরবর্তী পার্টের জন্য। কেমন লাগলো জানাবেন। ছোট হওয়ার জন্য দুঃখিত, পরবর্তীটা বড় করার চেষ্টা করবো🥰🥰

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here